ব্যুরো নিউজ, ২৫ নভেম্বর : ভারতে এমন এক বিশেষ ট্রেন রয়েছে, যেখানে টিকিট কাটার নিয়ম নেই। ৭৫ বছরের বেশি সময় ধরে এই ট্রেন বিনা ভাড়ায় পরিষেবা দিয়ে আসছে। পঞ্জাবের নঙ্গল এবং হিমাচলপ্রদেশের ভাখড়ার মধ্যে চলা এই ট্রেন শুধুমাত্র ঐতিহাসিক নয়, গ্রামবাসীদের জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত।
রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের ডিএ-র ফারাকঃ মমতা কী কোন পদক্ষেপ নেবেন?
এই ট্রেনের জন্ম ইতিহাস:

১৯৪৮ সালে পঞ্জাব ও হিমাচলপ্রদেশে ভাখড়া এবং নঙ্গল জলাধার নির্মাণ শুরু হয়। পার্বত্য অঞ্চলে ভারী যন্ত্রপাতি এবং শ্রমিক পরিবহণের জন্য একটি বিশেষ ট্রেন পরিষেবার প্রয়োজন হয়। তখনই তৈরি হয় ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথ। এই ট্রেন মূলত জলাধার নির্মাণের কাজ সহজ করার জন্য চালু হয়েছিল। প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও গ্রামবাসী ও স্কুলপড়ুয়াদের সুবিধার জন্য ট্রেনটি চালু রাখা হয়।
ট্রেনের বিশেষত্ব:
১) কাঠের কামরা: ট্রেনটির কামরাগুলি কাঠের তৈরি, যা অতীতের এক টুকরো স্মৃতি ধরে রেখেছে।
২) ডিজেল ইঞ্জিন: ট্রেনটি ডিজেল ইঞ্জিন দ্বারা চালিত।
৩) দৈনিক পরিষেবা: ট্রেনটি দিনে একবার নঙ্গল থেকে ভাখড়া যায় এবং বিকেলে ফিরে আসে।
৪) অবিরত চলা: ৭৫ বছরের ইতিহাসে একদিনও ট্রেনটির চলাচল বন্ধ হয়নি।
আদানির বিরুদ্ধে নতুন মামলাঃ সুপ্রিম কোর্টে আবেদন
প্রতিদিন ২০০-৩০০ গ্রামবাসী, বিশেষ করে স্কুলপড়ুয়ারা, এই ট্রেনে যাতায়াত করেন। ট্রেনটি ধরতে না পারলে তাঁদের দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে যেতে হয়। জানালা দিয়ে শিবালিক পাহাড়ের সৌন্দর্য এবং শতদ্রু নদীর দৃশ্য মন ভরিয়ে দেয়।ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ভাখড়া বিয়াস ম্যানেজমেন্ট বোর্ড জানায়, এই ট্রেন শুধু পরিবহণ নয়, এটি একটি আবেগ। গ্রামবাসীদের জীবনের সঙ্গে এটি জড়িত। কয়েক প্রজন্ম ধরে এটি তাদের জীবনের অংশ।এই ট্রেন পর্যটকদের জন্য এক দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা হতে পারে। শিবালিক পাহাড়ের অপূর্ব দৃশ্য এবং ভাখড়া ও নঙ্গল জলাধারের সৌন্দর্য পর্যটকদের মুগ্ধ করে।
সকাল ৭:০৫-এ নঙ্গল থেকে ছাড়ে এবং সকাল ৮:৩০-এ ভাখড়া পৌঁছায়।
বিকেলে ৩:০৫-এ নঙ্গল থেকে রওনা দিয়ে ৪:৩০-এ ভাখড়ায় পৌঁছায়।
পঞ্জাব থেকে এই ট্রেনে উঠে ভাখড়া জলাধার দেখতে পারেন। সকালে গিয়ে বিকেলের ট্রেনে ফিরে আসা যায়। অথবা হিমাচলপ্রদেশ থেকে থেকেও এই রেলপথের অভিজ্ঞতা নিতে পারেন। এই ট্রেন শুধুই একটি যাতায়াতের মাধ্যম নয়, এটি ইতিহাস ও প্রকৃতির এক অমূল্য উপহার।