ব্যুরো নিউজ,২৮ জানুয়ারি :গত কয়েকদিন ধরে গিলেন ব্যারি সিনড্রোম বা GBS নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা চলছে। সম্প্রতি কলকাতার ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেলথ (ICH)-এ এই অসুখে আক্রান্ত দুই শিশুর ভর্তি হওয়ার খবরও পাওয়া গেছে। কিন্তু এই রোগটি কতটা মারাত্মক? কীভাবে এটি ছড়ায়? এবং এর চিকিৎসা কী? এই সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন ICH-এর শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ।
জিবিএস বা গুলেন বারে সিনড্রোমঃ ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে ছড়াচ্ছে এই ভয়াবহ রোগ
গিলেন ব্যারি সিনড্রোম (GBS) কী?
গিলেন ব্যারি সিনড্রোম (GBS) একটি বিরল রোগ হলেও এটি একেবারেই অতি বিরল নয়। প্রতি বছর কিছু মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হন, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটি চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে যায়। বর্তমান সময়ে অনেকেই এই রোগ নিয়ে উদ্বিগ্ন হলেও, এটা খুব বেশি আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নয়।
কারা এই রোগে আক্রান্ত হন?
গিলেন ব্যারি সিনড্রোম সাধারণত শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, তবে বেশিরভাগ শিশুরা নির্দিষ্ট চিকিৎসা পদ্ধতি মেনে সুস্থ হয়ে ওঠে। তবে, বড়দের ক্ষেত্রেও এটি হতে পারে।
এই রোগটি কীভাবে ছড়ায়?
এখন পর্যন্ত চিকিৎসাবিজ্ঞান স্পষ্টভাবে জানায়নি যে কী কারণে গিলেন ব্যারি সিনড্রোম হয়, তবে এটি মূলত পেশির অসুখ। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা স্নায়ুকে আক্রমণ করে এবং সেখান থেকে এই রোগটি শুরু হয়। কিছু ক্ষেত্রে, ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের কারণে রোগটির উৎপত্তি হতে পারে।
প্রাথমিক লক্ষণ এবং রোগের বিস্তার কেমন?
গিলেন ব্যারি সিনড্রোমের প্রাথমিক লক্ষণ সাধারণত পায়ের নীচের অংশে দেখা দেয় এবং আস্তে আস্তে উপরের দিকে ছড়াতে থাকে। প্রথমে রোগী কোন ধরণের জ্বর অনুভব করেন না। তবে, যদি রোগটি শরীরের উপরের দিকে ছড়িয়ে যায়, বিশেষ করে ডায়াফ্রামের কাছে চলে আসে, তাহলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতে পারে। এ ধরনের অবস্থায় রোগীকে ভেন্টিলেটরের সাহায্যও প্রয়োজন হতে পারে।
একটি বিরল ঘটনাঃ চিকিৎসকের শরীরে ক্যান্সারের সংক্রমণ রোগীর শরির থেকে!
কীভাবে চিকিৎসা করা হয়?
গিলেন ব্যারি সিনড্রোমের জন্য চিকিৎসা রয়েছে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটি সফলভাবে সেরে যায়। তবে,চিকিৎসাটি কিছুটা দামি হতে পারে। এই রোগের চিকিৎসায় রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা প্রয়োজন। গুজব বা আতঙ্ক ছড়ানোর কোনো কারণ নেই, কারণ বেশিরভাগ রোগীই সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে ওঠেন।
এটি কি প্রাণঘাতী?
গিলেন ব্যারি সিনড্রোম সাধারণত প্রাণঘাতী হয় না, তবে কিছু ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্টের সমস্যা সৃষ্টি হলে সেটি বিপদজনক হতে পারে। তবে, এর চিকিৎসা এখন অনেক উন্নত, এবং বেশিরভাগ রোগী সুস্থ হয়ে যান।
পাশ বালিশ জড়িয়ে শুলে হবে না এই রোগগুলি, বলছেন চিকিৎসকরা
কোন খাবারের সাথে এই রোগের সম্পর্ক রয়েছে?
মহারাষ্ট্রে গিলেন ব্যারি সিনড্রোমের কিছু প্রেক্ষিতে ভাত বা পনির খাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।কিন্তু শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ বলেছেন মূলত, এটি একটি ভাইরাল সংক্রমণের কারণে হয় এবং কোনো নির্দিষ্ট খাবারের কারণে এটি ছড়ায় না। সুতরাং, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা যথেষ্ট।
গিলেন ব্যারি সিনড্রোম একটি বিরল রোগ হলেও, এর প্রাথমিক লক্ষণ জানলে এবং দ্রুত চিকিৎসা নিলে বেশিরভাগ রোগীই সুস্থ হয়ে ওঠেন। তাই, আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। গুজব বা ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি না করে, রোগীদের দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।