ব্যুরো নিউজ,২৩ জানুয়ারি :বিভিন্ন কাজে মন দেওয়ার সময় মনে আসে নানা বিভ্রান্তি। অনেক সময় পড়াশোনা বা রান্না করার সময় মন এক জায়গায় স্থির থাকে না, আর মন যদি কাজ না করে, তাহলে সেগুলি ‘মনের মতো’ হয় না। শিশুরা স্বভাবতই বেখেয়ালী হয়, তাই তাদের মনকে এক জায়গায় রাখা বেশ কঠিন। তবে প্রাপ্তবয়স্কদেরও মনকে ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সব সময় সম্ভব হয় না। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণত অস্থিরতা বাড়ে এবং মন চঞ্চল হয়ে ওঠে। এই ধরনের অস্থিরতার জন্য অনেক সময় বিভিন্ন কারণ দায়ী হতে পারে, যেমন, ফোনের প্রতি আসক্তি বা অন্য কোনো মানসিক চাপ। অনেকেই পরামর্শ দেন, ধ্যান করার মাধ্যমে মন শান্ত করা যেতে পারে, তবে যোগ প্রশিক্ষকদের মতে, ধ্যানের মাধ্যমে মন স্থির করা এতটা সহজ নয়।
থাইরয়েডের সমস্যা সমাধানে এই আসন করুন। সহজে শারীরিক সমতা বজায় থাকবে
কি সেই আসন?
তবে, গরুড়াসন অভ্যাস করলে মন শান্ত করা সহজ হতে পারে।গরুড়াসন নামটি অনেকেরই পরিচিত। গরুড় পুরাণে বিষ্ণুর বাহন হিসেবে পরিচিত এক কাল্পনিক পাখি, যা ইগলের সঙ্গে মিল রয়েছে। তাই এই আসনকে ইংরেজিতে ‘ইগল পোজ’ও বলা হয়। এই আসনটি মনকে এক জায়গায় স্থির রাখার জন্য খুব উপকারী। এটি শুধু মনকে শান্ত করতে সাহায্য করে না, বরং শরীরেরও বিভিন্ন উপকারে আসে। চলুন দেখে নেওয়া যাক, কীভাবে এই আসনটি করতে হবে এবং এর উপকারিতা কী।
গরুড়াসন কীভাবে করবেন?
১. প্রথমে যোগ ম্যাটের উপর সোজা হয়ে দাঁড়ান। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে হবে এবং হাত দুটি শরীরের দু’পাশে রাখুন।
২. এখন হাঁটু একটু ভাঁজ করে বাঁ পায়ের ঊরু ডান পায়ের উপর তুলুন। পায়ের এভাবে রাখায় দেখতে মনে হবে, বাঁ পা ডান পাকে পেঁচিয়ে রেখেছে।
কোমর ও পিঠের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়ার সহজ উপায় হল এই আসন।অভ্যাস করুন আজ থেকেই
৩. তারপর, দু’হাত সামনের দিকে প্রসারিত করে কনুই ভাঁজ করুন। ডান হাতের উপর বাঁ হাত পেঁচিয়ে ধরুন। দুই হাতের তালু একে অপরের সাথে মিলিয়ে প্রণামের ভঙ্গি তৈরি করুন।
৪. দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে এই অবস্থানটি অন্তত ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। তারপর শ্বাস ছাড়িয়ে আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসুন।
৫. একইভাবে ডান হাত এবং ডান পায়েও এই ভঙ্গি অভ্যাস করুন। দুই পা এবং হাত বদলে অন্তত তিনবার এই আসনটি অভ্যাস করতে হবে।
কোমর, পায়ের ব্যথা কমাতে সহজ এবং কার্যকর আসন কি জানেন? এখুনি জানুন আর গায়েব করুন সব ব্যাথা
কেন করবেন গরুড়াসন?
গরুড়াসন শুধুমাত্র শারীরিকভাবে উপকারী নয়, এটি আপনার মনঃসংযোগ এবং মনের শান্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এই আসনটি শরীরের গোড়ালি, পায়ের কাফ মাসলসের নমনীয়তা বৃদ্ধি করে। এছাড়া ঘাড় এবং কাঁধের ব্যথায়ও এই আসন আরাম দেয়। এটি পেশির টান কমাতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য বা হজমজনিত সমস্যাও নিরাময় করতে সহায়ক। প্রশিক্ষকদের মতে, সাইটিকা বা রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস সংক্রান্ত ব্যথা কমাতে এই আসনটি খুবই কার্যকর।
হাঁটুর ব্যথায় ভুগছেন? একটা আসন রোজ করলেই দৌড়বেন আপনি
সতর্কতা:
গরুড়াসন করার সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। যদি কারো হাঁটু, গোড়ালি বা কনুইয়ে চোট থাকে, তাহলে এই আসন করা উচিত নয়। এছাড়া যদি আপনার বডি ব্যালান্সের সমস্যা থাকে, তাহলে এই আসনটি করা থেকে বিরত থাকা উচিত।গরুড়াসন একটি শক্তিশালী যোগাসন, যা মন এবং শরীরকে স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে। এটি নিয়মিত অভ্যাস করলে আপনার শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে সাহায্য করবে।