ব্যুরো নিউজ, ২৯ ফেব্রুয়ারি: অবশেষে জল্পনার অবসান। লোকসভা নির্বাচনের আগে গতকালই কংগ্রেস ছাড়লেন দলের মুখপাত্র তথা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী। বুধবার ব্যারাকপুরে তার বাসভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে কৌস্তব জানিয়ে দেন তিনি আর কংগ্রেসে নেই। তার ইস্তফাপত্র তিনি পাঠিয়ে দিয়েছেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খারগে, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক তথা এ রাজ্যের দলের পর্যবেক্ষক গুলাম আহমেদকে।
তবে ইতিপূর্বেই দলের সর্বভারতীয় নেতৃত্ব ও রাজ্য কংগ্রেসের কিছু কার্যকলাপের জন্য মতান্তর ঘটছিল। এ রাজ্যের একটি ডেয়ারি কোম্পানির মামলা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করতে এসেছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম। তিনি অধীর চৌধুরীর দায়ের করা মামলার বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ নিয়ে সওয়াল করতে এসেছিলেন। সেদিন হাইকোর্টে কালো পতাকা দেখিয়ে গো ব্যাক স্লোগান দেন কৌস্তব।
ঈশপের গল্পের বাঘ সন্দেশখালিতে | পরিণাম কি গল্পের মতই?
তিনি কংগ্রেসে থেকে তৃণমূলকে সমর্থন করা কোনভাবেই বরদাস্ত করবেন না বলে জানিয়ে দেন। এছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অধীর রঞ্জন চৌধুরীর একমাত্র মেয়ের মৃত্যুর বিষয়টি তুলে যেভাবে আক্রমণ করেছিলেন তাতে কৌস্তব তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, এবার তিনি দীপক ঘোষের লেখা বইটি যাতে সবার কাছে পৌঁছয় সেই ব্যবস্থা করবেন। এরপরই ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকার হঠাৎই গভীর রাতে ব্যারাকপুরে কৌস্তভের বাড়িতে হানা দিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও পরের দিন সকালে তার জামিনে মুক্তি হয়ে যায়।
কৌস্তভ বাগচি এরপরই জানিয়ে দেন যতদিন না রাজ্য সরকারকে উৎখাত করা হচ্ছে ততদিন তিনি মাথায় চুল রাখবেন না। সেই মত তিনি মাথার চুল কামিয়ে ফেলেন। এরপরই তাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে দেখা যায়, সেখানে তিনি প্রথমবার ‘বাংলায় বিকল্প রাজনীতি’র কথা বলেন। তখন থেকেই একটা গুঞ্জন শোনা যায়, তবে কি তিনি কংগ্রেস ছাড়তে চলেছেন? একইসঙ্গে এ রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট কোনওভাবেই তিনি মেনে নেবেন না তাও স্পষ্ট করে দেন। ঠিক নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেস লোকসভার দুটি আসন কংগ্রেসকে ছাড়বে বলে জোটের দিকে এগিয়ে যান। আর তাতেই আরো ক্ষুব্ধ কৌস্তভ স্পষ্ট জানিয়ে দেন এ রাজ্যে জোট হলে বামপন্থীদের সঙ্গে জোট তিনি মেনে নেবেন। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট নৈব নৈবচ।
এদিকে প্রথম থেকেই ইঙ্গিত মিলছিল যে তিনি হয়তো বিজেপিতেই যোগ দিতে পারেন। কারন তার সুরে শোনা যায় গেরুয়া ঝড়ের কথা। বিজেপির সুরে সুর মিলিয়ে তিনি বলেছেন রাম মন্দির নির্মাণ হওয়ার পরে সারাদেশে যেমন গেরুয়া ঝড় উঠেছিল, ঠিক তেমনি পশ্চিমবঙ্গেও সব গেরুয়া হয়ে যাবে। এর ফলে তার বিজেপিতে যোগ দেওয়ার বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে যায়।
আর সেই মত, কংগ্রেস ছাড়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বিজেপিতে যোগ দিলেন আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী। বৃহস্পতিবার বিজেপির কার্যালয়ে যান তিনি। সেখানেই এ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে যোগ দেন বিজেপিতে।