ব্যুরো নিউজ,২৯ মার্চ: একটি শান্তিপূর্ণ বাড়িতে ঘটল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। স্থানীয়রা প্রথমে ভেবেছিলেন, এটি হয়তো স্বাভাবিক মৃত্যু, কিন্তু তদন্ত এগোতেই সামনে এল এক অবিশ্বাস্য তথ্য। ঘটনটি হল কর্ণাটকের বেলাগাভি জেলার। ৮৩ বছর বয়সি দিয়াঙ্গো নাজারাত এবং তার ৭৯ বছর বয়সি স্ত্রী প্লেভিয়ানা নাজারাত ভয় ও মানসিক চাপে ভেঙে পড়ে এমন এক চরম সিদ্ধান্ত নেন, যা এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
প্রতারকদের ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত জীবন
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রতারকরা নিজেদের দিল্লি ক্রাইম ব্রাঞ্চের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বৃদ্ধ দম্পতির সঙ্গে ভিডিও কলে যোগাযোগ করে। তারা জানান, দম্পতির মোবাইল নম্বর এবং পরিচয়পত্রের প্রমাণ চুরি করে অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। এর সমাধান হিসেবে দম্পতিকে জরিমানা বাবদ ৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।প্রবীণ এই দম্পতি অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী ছিলেন এবং মহারাষ্ট্র সচিবালয়ে কাজ করতেন। তাই তারা আইন মেনে সমস্যার সমাধান করতে চান। প্রথমে নির্ধারিত পরিমাণ অর্থ পরিশোধও করেন, কিন্তু প্রতারকদের দাবি শেষ হয় না। ক্রমাগত নতুন নতুন অভিযোগ তুলে তাদের হুমকি দেওয়া হয় এবং আরও টাকা দাবি করা হতে থাকে।
সম্পত্তির ভাগাভাগি না হলে শেষকৃত্য হবে না! মৃতদেহ আগলে চার স্ত্রী ও নয় সন্তান, হতবাক গ্রামবাসীরা
ধাপে ধাপে প্রতারকদের কথায় বিশ্বাস করে তারা ৫০ লক্ষ টাকারও বেশি খুইয়ে ফেলেন। কোনও সন্তান বা নিকট আত্মীয় না থাকায়, তারা একা এই চাপে পড়ে যান এবং কাউকে কিছু জানাতে পারেননি।শুরুতে পুলিশ ঘটনাটিকে সন্দেহজনক মনে করেছিল। তবে, তদন্তে তাদের সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়, যেখানে উল্লেখ ছিল কীভাবে তারা মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন। মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড বিশ্লেষণ করেও পুরো প্রতারণার ঘটনা প্রকাশ্যে আসে।
পুলিশের তদন্ত চলছে,বেলাগাভির নন্দগড় থানার এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “আমরা তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বিশ্লেষণ করছি এবং চাঁদাবাজির মোট পরিমাণ গণনা করছি। এটি অত্যন্ত গুরুতর ঘটনা, এবং দোষীদের খুঁজে বের করতে আমরা পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চালাচ্ছি।”এই করুণ ঘটনার পর পুলিশ সাধারণ মানুষকে সাইবার প্রতারণা সম্পর্কে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের পরিস্থিতিতে কারও সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত এবং সন্দেহজনক ফোন কল এলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য নেওয়া জরুরি। নাজারাত দম্পতির দুঃখজনক পরিণতি আবারও প্রমাণ করল যে অনলাইন প্রতারণা কতটা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।