ব্যুরো নিউজ ৭ নভেম্বর : প্রতিটি শিশুর ব্যক্তিত্ব আলাদা, তাদের যোগাযোগের চাহিদাগুলিও তেমনই আলাদা। তাই পিতামাতার জন্য প্রথম কাজ হলো, তাদের সন্তানদের সাথে একটি শক্তিশালী বন্ধন তৈরি করা। বিশেষ করে যেসব শিশুর বিশেষ চাহিদা রয়েছে, যেমন অটিজম বা ADHD, তাদের ক্ষেত্রে এই বন্ধনের গুরুত্ব আরো বেশি। মনিকা এস কুমার, ব্লুমবাডস এএসডি লাইফ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের পিতামাতাদের কিছু কার্যকর কৌশলের কথা বলেছেন, যা সঠিকভাবে প্রয়োগ করে সন্তানের সাথে আরও ভালো যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব।
দেব ও শুভশ্রী কি আবার রুপোলি পর্দায় একসঙ্গে কাজ করবেন?কী বললেন দেব
১. সন্তানের ব্যক্তিত্ব বুঝে যোগাযোগের কৌশল নির্ধারণ করুন
প্রতিটি শিশুর স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্ব আছে এবং সেই অনুযায়ী তাদের সাথে যোগাযোগ করা দরকার। বয়সের পাশাপাশি, পছন্দ এবং ব্যক্তিত্ব বিবেচনায় নিয়ে সংযোগ স্থাপন করলে পিতামাতারা তাদের সন্তানের সাথে আরও গভীরভাবে যুক্ত হতে পারেন।
- স্বতন্ত্র চাহিদা বুঝুন: বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর জন্য কাস্টমাইজড যোগাযোগ পদ্ধতি খুব গুরুত্বপূর্ণ। অটিজমে আক্রান্ত অনেক শিশুই মৌখিকভাবে নিজেদের প্রকাশ করতে পারে না। তাদের জন্য ভিজ্যুয়াল এইডস এবং সামাজিক গল্পগুলো বেশি কার্যকরী। বিভিন্ন এনজিওর সহায়তায় পিতামাতারা এধরনের কৌশল সম্পর্কে শিখতে পারেন।
২. প্রতিফলিত শ্রবণ ব্যবহার করুন
প্রতিফলিত শ্রবণ কেবল কথার অর্থ বোঝার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং শিশুর অনুভূতিগুলো বুঝে সেই অনুযায়ী সাড়া দেওয়াও এতে অন্তর্ভুক্ত।
- শিশুর অনুভূতি বুঝুন: শিশুরা যখন কিছু বলে, তখন তাদের অনুভূতিগুলো বুঝতে চেষ্টা করুন। যেমন, যদি তারা বলে, “আমার সাথে কেউ খেলল না,” তাহলে আপনি বলতে পারেন, “তুমি আজ একাকী অনুভব করছো মনে হচ্ছে।” এতে শিশুর মানসিক বিকাশে সহায়তা হয়। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের ক্ষেত্রে, অভিভাবকদের আবেগ শনাক্তকরণ নিয়ে কর্মশালায় অংশ নেওয়া বিশেষ উপযোগী।
- বাঙালির মুগ্ধতা খাটুয়া খিচুড়িতে! ঘরেই বানিয়ে নিন এই সহজ রেসিপি
৩. কথোপকথনে খেলার উপাদান যোগ করুন
খেলাধুলা শিশুদের সাথে সহজে যোগাযোগের বাধা দূর করতে সহায়ক। বিশেষ করে সংবেদনশীল বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলার সময়, এটি কার্যকর ভূমিকা রাখে।
- খেলাধুলা ও নিরাপদ পরিবেশ: খেলার মাধ্যমে খোলামেলা কথা বলার প্রচলন করলে শিশুরা সহজে তাদের চিন্তাগুলো প্রকাশ করতে পারে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরা অনেক সময় সরাসরি উত্তর দিতে সঙ্কোচ বোধ করতে পারে, তাই খেলাধুলার মাধ্যমে কথা বললে তারা নিজের অনুভূতি প্রকাশে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে।
৪. এনজিও ও বিশেষ সহায়তার ভূমিকা
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের সহায়তায় কাজ করে এমন এনজিওগুলির সাহায্যে পিতামাতারা কার্যকরী যোগাযোগ কৌশল শিখতে পারেন।
- কাউন্সেলিং এবং মানসিক সহায়তা: বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের অভিভাবক হওয়া অনেক সময়ই কঠিন হয়ে পড়ে। এনজিও গুলি অভিভাবকদের মানসিক সমর্থন প্রদান করে এবং সঠিক যোগাযোগের কৌশল শেখায়, যাতে তারা সন্তানদের সাথে আরও মজবুত সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে।
প্রতিটি কথোপকথন অভিভাবকদের জন্য সন্তানের সাথে সম্পর্কের নতুন একটি সুযোগ। শুধু উন্নতির দিকে মনোযোগ দিয়ে এগিয়ে গেলে, একদিন অবশ্যই একটি আত্মবিশ্বাসী এবং মানসিকভাবে সুস্থ সন্তানের বেড়ে ওঠা সম্ভব।