ব্যুরো নিউজ, ২১ সেপ্টেম্বর :চলতি সময়ে প্রযুক্তির মাধ্যমে পৃথিবী হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। যা চাইবেন, তা শুধুমাত্র একটি ফোনের মাধ্যমে অর্ডার করলেই ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে বাড়িতে পৌঁছে যাবে। জ্যোমাটো, সুইগি, ব্লিঙ্কিট এবং জেপটো—হাজারো অ্যাপ্লিকেশন এই সুবিধা নিয়ে হাজির। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এসবের মধ্যে যারা কাজ করছেন, অর্থাৎ ডেলিভারি কর্মীরা, তারা বছরে কত উপার্জন করেন?
‘জাস্টিস ফর আরজি কর’; ডাক্তারদের প্রতিবাদ ও নাগরিক সমাজের মিলন
আয় ও সঞ্চয়ের বাস্তবতা
সম্প্রতি বোরজো নামের একটি সংস্থার সমীক্ষায় দেখা গেছে, ভারতে ডেলিভারি কর্মীদের মধ্যে ৭৭.৬ শতাংশের বার্ষিক উপার্জন আড়াই লক্ষ টাকার নীচে। অর্থাৎ, তাদের দৈনিক আয় প্রায় ৭০০ টাকারও কম। দেশের ৪০টি শহরে জ্যোমাটো, সুইগি, উবার এবং অ্যামাজনের ২ হাজারেরও বেশি ডেলিভারি কর্মীর উপর এই সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়।
নারীর নিরাপত্তায় প্রশ্ন: নরেন্দ্রপুরে প্রকাশ্যে মহিলা আইনজীবী শ্লীলতাহানির ঘটনা
এছাড়াও, জানা গেছে যে ৬১ শতাংশ কর্মী আয়কর সংক্রান্ত তথ্য সম্পর্কে অবহিত নন। যারা আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন, তাদের মধ্যে ৬৬ শতাংশ জিরো রিটার্ন দাখিল করেন। এসব তথ্য স্পষ্ট করে দেয় যে, ডেলিভারি কর্মীরা অর্থ সঞ্চয়ের বিষয়ে কতটা বুঝেন।
কিভাবে তারা সঞ্চয় করেন? সমীক্ষা অনুযায়ী, মাত্র ২৪ শতাংশ কর্মী পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিপিএফ) বা অন্যান্য সঞ্চয় স্কিমে টাকা জমা করেন, এবং এর অঙ্ক ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। ২৩ শতাংশ কর্মী মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেন, যেখানে ৭১ শতাংশের বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০০ থেকে ১০০০ টাকার মধ্যেই থাকে।
আইএসএল মরসুমে নতুন উদ্যোগ ফুটবল প্রেমীদের জন্য বিশেষ মেট্রো পরিষেবা
এছাড়াও, ২৬ শতাংশ ডেলিভারি কর্মী সরাসরি স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করেন। কিন্তু সবচেয়ে উদ্বেগজনক তথ্য হল, ৬২ শতাংশ কর্মীর কোনও জীবনবিমাও নেই। অর্থাৎ, তাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার কোনও পরিকল্পনা নেই।
এই সমস্ত তথ্য আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, আধুনিক প্রযুক্তি এবং সুবিধার মধ্যে জীবনযাপন করা অনেকেই তাদের মৌলিক সুরক্ষা এবং সঞ্চয়ের প্রতি যথেষ্ট সচেতন নন। ডেলিভারি কর্মীদের জীবনের এই কঠিন বাস্তবতা আমাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার দুর্বলতাগুলিকেও তুলে ধরে। সমাজের এই অংশটির জন্য সঠিক নীতি এবং সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে যাতে তারা সুরক্ষিত এবং আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারেন।