ব্যুরো নিউজ,২৮ জানুয়ারি :দিল্লির আশেপাশের শহর নয়ডার শিব নাদার স্কুলের ক্লাস ৯ এর ছাত্র দাক্ষ মালিক, আকাশের রহস্য উন্মোচনে এক বড় সাফল্য অর্জন করেছেন। তিনি ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্টেরয়েড ডিসকভারি প্রজেক্ট’ এর আওতায় একটি নতুন গ্রহাণু আবিষ্কার করেছেন, যা এখন নাসা (ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন)-এর দ্বারা স্বীকৃত। এই আবিষ্কারের ফলে, দাক্ষ এখন সেই গ্রহাণুর জন্য একটি স্থায়ী নাম নির্বাচন করতে পারবেন। আপাতত, গ্রহাণুটির নাম ‘২০২৩ OG40’ রাখা হয়েছে, যেখানে ‘২০২৩’ তার আবিষ্কারের বছর হিসেবে নির্দেশিত।দাক্ষ মালিক জানান, ছোটবেলা থেকেই তিনি মহাকাশ নিয়ে গভীর আগ্রহী ছিলেন। তিনি বলেন, “আমি মহাকাশ নিয়ে অনেক ডকুমেন্টারি দেখতাম, বিশেষ করে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের। প্ল্যানেট এবং সৌরজগতের নানা বিষয় আমাকে খুব মুগ্ধ করত। আজ, এই আবিষ্কার আমার জন্য এক স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো।”
গিলেন ব্যারি সিনড্রোম (GBS)ঃ একটি বিরল রোগ এবং তার চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
গ্রহাণু আবিষ্কারের সুযোগ
দাক্ষ এবং তার দুই বন্ধু প্রায় দেড় বছর ধরে ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্টেরয়েড ডিসকভারি প্রজেক্ট’ এর অধীনে গ্রহাণু আবিষ্কার করার কাজ করছিলেন। তাদের এই সুযোগ এসেছিল ২০২২ সালে, যখন স্কুলের অ্যাস্ট্রোনমি ক্লাব একটি ইমেল পাঠিয়ে জানিয়েছিল ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনোমিক্যাল সার্চ কলাবরেশন’ (IASC) এর ব্যাপারে। IASC, একটি নাগরিক বিজ্ঞান প্রোগ্রাম যা নাসার সাথে সম্পর্কিত, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষদেরকে গ্রহাণু আবিষ্কারের সুযোগ দেয়।
এই প্রোগ্রামে প্রতিবছর ৬,০০০ এরও বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করে, কিন্তু তাতে মাত্র কয়েকজন সফলভাবে নতুন গ্রহাণু আবিষ্কার করতে পারে। দাক্ষও তাদের মধ্যে একজন। IASC এর ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, দাক্ষের আগে ভারত থেকে পাঁচজন ছাত্র একটি নামকৃত গ্রহাণু আবিষ্কার করেছে।
অন্যদের মতো গ্রহাণু খোঁজার পদ্ধতি
এটি ছিল এক ধরনের ‘মজাদার কাজ’, যা দাক্ষ তার অভিজ্ঞতা হিসেবে বর্ণনা করেছেন। অন্যান্য অংশগ্রহণকারীদের মতো তিন বন্ধুদেরও IASA এর ডেটাসেট ডাউনলোড করতে হয়েছিল, তারপর সেই ডেটা অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সফটওয়্যার ‘অ্যাস্ট্রোনোমিকা’ দিয়ে ক্যালিব্রেট করতে হয়েছিল। এরপর তারা আকাশে কোন ধরনের অস্থির বস্তু বা গ্রহাণু খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছিল। তারা লক্ষ্য করেছিল যে, আকাশে যে কোনো বস্তু যদি একটু একটু নড়াচড়া করে এবং তার থেকে নির্গত আলো গ্রহাণুদের জন্য নির্ধারিত সীমার মধ্যে পড়ে, তাহলে সেটি একটি গ্রহাণু হতে পারে।
দূষণে দিল্লীকেও হার মানাল এই ছোট্ট শহর বর্নিহাটঃ পরিবেশ রক্ষার জন্য আন্দোলনে বাসিন্দারা
এখন কি নামকরণ করবেন দাক্ষ?
দাক্ষ জানান, নাসা এই গ্রহাণুর জন্য ৪-৫ বছর ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে এবং নিশ্চিতকরণের পরই তিনি এই গ্রহাণুর একটি স্থায়ী নাম দিতে পারবেন। তিনি কিছু নামের কথা ভাবছেন, যেমন ‘ডেস্ট্রয়ার অফ দ্য ওয়ার্ল্ড’ এবং ‘কাউন্টডাউন’।