ব্যুরো নিউজ,২৯ এপ্রিল: পাঁচ মাস দীর্ঘ কারাবাসের পর অবশেষে মুক্তি পেলেন হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস। রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া এই ধর্মীয় নেতার জামিন মঞ্জুর করেছে ঢাকা হাইকোর্ট। বিচারপতি আতোয়ার রহমান খান ও আলি রেজার বেঞ্চ মঙ্গলবার তাকে জামিন দেন, যা বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতের সংবাদমাধ্যমেও বড় সাড়া ফেলেছে।
গত বছর নভেম্বর মাসে গ্রেফতার
ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক যখন চরম উত্তেজনায় তখন রাশিয়া-চীন S-400 চুক্তি
২০২৩ সালের ২৫ নভেম্বর ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে। তিনি ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’-এর মুখপাত্র হিসেবে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর চলতে থাকা নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি জাতীয় পতাকার প্রতি ‘অবমাননা’ করেছেন এবং সরকারবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। এই কর্মকাণ্ড রাষ্ট্রদ্রোহ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
তার গ্রেফতারির পর বাংলাদেশজুড়ে এবং ভারতের বহু শহরে প্রতিবাদে উত্তাল হয় জনতা। কলকাতা, মুম্বই, পুণে-সহ বহু জায়গায় আন্দোলনকারীরা তার মুক্তির দাবিতে পথে নামেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর যে ধরণের নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও উদ্বেগ দেখা দেয়।
জানা গেছে, চিন্ময়ের প্রথম দিকের জামিন আবেদন বারবার খারিজ হয়। এমনকি ১১ ডিসেম্বরের শুনানিতে তার পক্ষে কোনো আইনজীবী হাজির হতে পারেননি, কারণ আইনজীবীরা প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছিলেন। এরপর ৪ ফেব্রুয়ারি আদালত জানতে চায়, কেন তাকে জামিন দেওয়া উচিত নয়। অবশেষে, ৩০ এপ্রিল উচ্চ আদালত রুল অ্যাবসলিউট ঘোষণা করে এবং জামিন মঞ্জুর করে।
এই জামিন শুধুমাত্র একজন ধর্মীয় নেতার মুক্তিই নয়, এটি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু অধিকার রক্ষার আন্দোলনের পক্ষে একটি গুরুত্বপূর্ণ জয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তি এমন এক সময় এলো, যখন হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা, মন্দির ভাঙচুর এবং জীবনহানির ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে গিয়েছে।
এই ঘটনার প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। এটি একদিকে হিন্দুদের উপর চলমান অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকে জোরালো করবে, অন্যদিকে বাংলাদেশে ধর্মীয় সহনশীলতা ও মানবাধিকার রক্ষায় একটি নতুন আলোচনার সূত্রপাত করবে।