ব্যুরো নিউজ,১৪ জানুয়ারি:১২ জানুয়ারি রবিবার কলকাতার একজন প্রখ্যাত শিল্পী, ‘ফসিলস’ ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য চন্দ্রমৌলি বিশ্বাসের অকাল মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। যদিও ২০১৮ সালে ‘ফসিলস’ ব্যান্ড ছেড়ে দিয়েছিলেন, তবুও দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে ব্যান্ডটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন চন্দ্রমৌলি। এমন একজন শিল্পীর মৃত্যু, যিনি এক সময় কলকাতার সংগীত জগতের অন্যতম পরিচিত মুখ ছিলেন, তা এখনও অনেকের কাছে বিশ্বাস করা কঠিন। চন্দ্রমৌলি মধ্য কলকাতার ইন্ডিয়ান মিরর স্ট্রিটে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন, এবং রবিবার সেখানেই তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলাও রুজু করেছে। প্রাথমিক তদন্তের পর জানা গেছে, চন্দ্রমৌলি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন এবং গত কিছু বছর ধরে তার আর্থিক সংকটও ছিল। তার বন্ধুরা জানিয়েছেন যে, তিনি ডিপ্রেশনের জন্য চিকিৎসাও নিচ্ছিলেন।
দক্ষিণ কলকাতায় নব নালন্দা স্কুলে ভেঙে পড়া কাঁচের ঘটনায় আতঙ্ক, অভিভাবকদের বিক্ষোভ
কী কারণে এমন চরম সিদ্ধান্ত নিলেন চন্দ্রমৌলি?
তবে, কী কারণে এমন চরম সিদ্ধান্ত নিলেন চন্দ্রমৌলি? এখন এটি এক রহস্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। চন্দ্রমৌলির আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করেছেন, যা অনেক প্রশ্নের উত্তর দেয়। তিনি জানান, চন্দ্রমৌলি কিছুদিন আগে একটি আইনি লড়াইয়ের মধ্যে ছিলেন এবং সম্প্রতি সেই মামলার রায় বের হয়েছিল। জয়ন্ত নারায়ণ মনে করেন, সেই রায়ে হতাশ হয়ে চন্দ্রমৌলি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন, যা তার মৃত্যুর কারণ হতে পারে।অবশ্য, জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় চন্দ্রমৌলির সঙ্গে তার পরিচয়ের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। তিনি লিখেছেন, আমি তোমাকে চিনতাম না, চন্দ্রমৌলি। একদিন আমার চেম্বারে তুমি এলে, এবং সবার মধ্যে বসে ছিলে। তোমার পরিচয় তুমি কখনোই সামনে আননি। তোমার মধ্যের ভেঙে পড়া মানুষটাকে আমি সবসময় মনের মধ্যে সান্ত্বনা দিতাম। জয়ন্ত নারায়ণ আরো জানান, তিনি চন্দ্রমৌলিকে সান্ত্বনা দিতে চেষ্টা করতেন, এবং তাকে বলতেন, ভ্যান গখ থেকে রবীন্দ্রনাথ, যখনই কষ্ট পেয়েছেন, তখনই তাদের সেরা সৃষ্টি বেরিয়েছে, তেমনই তোমার হাত থেকেও সেরা সৃষ্টি বেরোবে।
চন্দ্রমৌলি বিশ্বাসের এই অকাল মৃত্যু, তার জীবনের সংগ্রাম ও দুঃখের কথা অনেকের কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তিনি ছিলেন একজন শিল্পী, যিনি শুধু গান দিয়ে নয়, তার গভীর মনস্তাত্ত্বিক যন্ত্রণাও ছিল, যা কখনোই বাইরে প্রকাশ পায়নি। আজও তার স্মৃতির মধ্যে জেগে রয়েছে এক সংগ্রামী শিল্পীর ছবি, যে শিল্পী শুধু সঙ্গীতের মাধ্যমে নয়, জীবনের যন্ত্রণা থেকেও বাঁচতে চেয়েছিলেন।
