ব্যুরো নিউজ,২৮ জানুয়ারি :কালো ধোঁয়া আকাশে ভাসছে, বাতাসে ধুলো উড়ছে, আর শহরটি যেন বিষাক্ত দূষণের চাদরে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতি যেন শ্বাস নিতে দায়, কিন্তু এটা কোনো কাল্পনিক দৃশ্য নয়, বাস্তবের এক কষ্টকর চিত্র। এই শহরটি হলো বর্নিহাট (Byrnihat), যা এবার দেশের সবচেয়ে দূষিত শহরের তকমা পেয়েছে, দ্বিতীয়বারের মতো। দিল্লি, কলকাতার মতো মেট্রোসিটিসও যেখানে দূষণের ধাক্কা খায়, সেখানে ছোট্ট এই শহরের অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।
জিবিএস বা গুলেন বারে সিনড্রোমঃ ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে ছড়াচ্ছে এই ভয়াবহ রোগ
কারণ?
অসম ও মেঘালয়ের সীমান্তবর্তী এই শহরটি আগে কিছুটা ভালো ছিল, কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে অতিরিক্ত শিল্পায়ন এবং কারখানার কারণে পরিবেশ মারাত্মক দূষণের শিকার হয়েছে। এই শহরে ৪১টি কারখানা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে স্টিল এবং সিমেন্টের মতো ভারী শিল্প। এসব শিল্পকারখানার কারণে বাতাসে অত্যন্ত উচ্চমাত্রায় PM2.5 ও PM10 কণার উপস্থিতি তৈরি হয়েছে, যা স্বাস্থ্যসমস্যা সৃষ্টি করছে। এখানকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, পরিবেশের অবস্থা এতটাই খারাপ যে, বাচ্চারা স্কুলেও যেতে পারে না। ধূলোর কারণে তাদের শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, বাড়িতে ফিরলেই শরীর থেকে কালো জল গড়িয়ে পড়ে।
এই পরিস্থিতিতে বর্নিহাটের বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ। তাদের মতে, কারখানাগুলো থাকতে পারে, তবে যদি দূষণ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা যথাযথভাবে করা না হয়, তবে তাদের অস্তিত্বের জন্যই বিপদ হয়ে দাঁড়াবে। তাদের অভিযোগ, এসব কারখানা ফিল্টার ছাড়া বর্জ্য গ্যাস ও দূষিত পদার্থ বাতাসে ছড়িয়ে দিচ্ছে, যা অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাছাড়া, এখানে দূষণ নিয়ন্ত্রণের যে ব্যবস্থা আছে, তা কেবলমাত্র কাগজে-কলমে। বাস্তবে এর কোনো কার্যকারিতা নেই, এমনটাই তাদের দাবি।
২০২৫ সালে শনি ট্রানজিটঃ ১২টি রাশির জন্য সৌভাগ্য এবং সতর্কতার বার্তা জানুন
এখন, এই দূষিত পরিস্থিতির মধ্যে বর্নিহাটের বাসিন্দারা একত্রিত হয়ে আন্দোলনে নেমেছেন। তারা চাইছেন, তাদের বাঁচার জন্য একটু ভালো পরিবেশ, একটু বিশুদ্ধ বাতাস। তাদের মতে, পরিবেশ রক্ষা করা শুধু প্রকৃতির নয়, মানুষেরও অস্তিত্বের বিষয়। আর তাই এই আন্দোলন শুধু পরিবেশ নয়, মানব জীবনের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাদের এই সংগ্রাম, ছোট্ট শহর বর্নিহাটের দূষণমুক্ত ভবিষ্যতের জন্য এক নতুন দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে।