ব্যুরো নিউজ, ২৩ মে : গত পাঁচ দিন ধরে নিখোঁজ বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম। মনে করা হচ্ছিল তাকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। তেমনই আশঙ্কা করা হচ্ছিল। এবার সেই বিষয়ে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনারের দেহ পাওয়া গিয়েছে কলকাতায়। নিউটাউন এলাকায় সঞ্জিভা গার্ডেন থেকে নিউটাউনের টেকনোসিটি থানার পুলিশ তার মৃতদেহ উদ্ধার করেছে।
রামকৃষ্ণ মিশনে হামলা: পুলিশকর্তার সঙ্গে কয়েকটা ছবিতে পর্দা ফাঁস! জমি কেনাবেচার সঙ্গে প্রশাসনের যোগ?
গত ১১ মে ভারতে এসে বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম তাঁর বন্ধুসম্পর্কীয় গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন। ১৩ মে দুপুরে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার কথা বলে তিনি বের হন। তবে বাড়িতে ফেরার কথা বলে বের হলেও তিনি আর ফেরেননি। ঘটনায় তৈরি হয় রহস্য। ঘটনায় ১৮ মে বরাহনগর থানায় একটি নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেন গোপাল বিশ্বাস। এদিকে বাংলাদেশ পুলিশ সূত্রে খবর, যে দিন তিনি নিখোঁজ হন, সেদিনই তাঁকে খুন করা হয়েছে। এছাড়াও পুলিশের দাবি, হত্যার পর তাঁর দেহ সরিয়ে ফেলার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছিল।
জানা গিয়েছে, বাংলাদেশি সাংসদ আনোয়ারুল আজিম-এর 'খুনে'র ঘটনার মূল চক্রি আখতারুজাম্মান ওরফে সাহিন। জানা গিয়েছে, তাঁর বাড়ি বাংলাদেশের ঝিনাইদহ-র কোটচাঁদপুরে। আখতারুজাম্মান-এর ভাই ওই এলাকার মেয়র। তবে আগে থেকেই সাংসদ আনোয়ারুল আজিম-এর সঙ্গে তাঁর শত্রুতা ছিল বলে জানা গিয়েছে। তবে এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত আরও অনেকে। ঘটনায় যুক্ত ৭ জনের মধ্যে ৬ জনই বাংলাদেশী। জানা গিয়েছে, খুনের আগে আখতারুজ্জামান নিজে কলকাতার ফ্ল্যাটে পৌঁছন। তাঁর সঙ্গে ছিল তাঁর বান্ধবী শিলস্তি। এই 'খুনে'র ঘটনায় আখতারুজাম্মান প্রায় পাঁচ কোটি টাকার বরাত দেন আমানুল্লাহ নামের এক ব্যাক্তিকে। এও জানা গিয়েছে, ঘটনার মূল চক্রি আখতারুজাম্মান 'খুনে'র ঘটনার পর নেপালে পালিয়ে গিয়েছে।
তবে সূত্রের খবর, গত ১৩ মে নিউটাউনের সঞ্জিভা গার্ডেনের একটি ফ্ল্যাটে সাংসদ আনোয়ারুল আজিমকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। এরপর তাঁর মাথায় ভারী বস্তু দিয়ে আঘাতও করা হয় বলে মনে করা হচ্ছে। এমনকি দেহটিকে কেটে কেটে ফ্রিজে রাখা হয়েছিল। পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, বিগত তিন দিন ধরে সাংসদের দেহের বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন জায়গায় ফেলা হয়েছিল। ১৩ তারিখ 'খুন' করার পর, ১৪, ১৫ ও ১৮ মে – এই তিন দিন দেহের অংশ বিভিন্ন জায়গায় সরানো হয়। এদিকে সিসিটিভি ফুটেজেও মিলেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। লাল রঙের একটি চারচাকার গাড়ি আবাসনের সামনে এসে থামে। সেই গাড়ি থেকে নেমে আসতে দেখা যায় বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ারুল আজিমকে। তাঁর সঙ্গে ছিল আরও দু'জন। তবে সিসিটিভি ফুটেজে সাংসদের সঙ্গে আসা ব্যাক্তিদের বেড়িয়ে যেতে দেখা গেলেও সাংসদ আনোয়ারুল আজিমকে বের হতে দেখা যায়নি। সিসিটিভি ফুটেজে দেখতে পাওয়া লাল গাড়িটির খোঁজ করছে পুলিশ। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ফ্ল্যাটে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই সাংসদ আনোয়ারুলকে খুন করা হয়েছে। ঘটনার পর দেহ লোপাট করতে টুকরো টুকরো করা হয় দেহ। ফ্ল্যাটও পরিষ্কার করে ফেলা হয়। গোটা ঘটনা প্রায় ২০ মিনিটের মধ্যে করা হয়েছে। এমনকি ফ্ল্যাট থেকে দেহ সরাতে ট্রলি ব্যাগও ব্যবহার করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, ট্রলি ব্যাগে ভরে সেই দেহ ফেলা হয় বিভিন্ন জায়গায়। আর ফ্ল্যাট থেকে দেহ সরানোর কাজের দায়িত্ব লোকাল কাউকে দেওয়া হয়েছিল। এও জানা যাচ্ছে, সাংসদকে খুনের পরিকল্পনা বাংলাদেশেই করা হয়েছিল। এমনকি, এই কাজে সাংসদের ঘনিষ্ঠ কেউ যুক্ত থাকতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।![]()



















