ব্যুরো নিউজ ৩০ অক্টোবর ২০২৫ : চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো বিখ্যাত তার বিশাল প্রতিমা, চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জা এবং বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার জন্য, যা দুর্গাপূজার মতোই পাঁচ দিন ধরে চলে। তবে যাঁরা হুগলি বা নদিয়ার সেই বিখ্যাত উৎসবে যেতে পারবেন না, তাঁদের জন্যও আশার খবর। কারণ, খাস কলকাতাতেও রয়েছে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলে আসা বেশ কিছু ঐতিহ্যবাহী জগদ্ধাত্রী পুজো। সোমবার অর্থাৎ ষষ্ঠীর দিন থেকে এই পুজো শুরু হচ্ছে।
কলকাতার বিখ্যাত বনেদি বাড়ির পুজো
- মদন গোপাল দে বাড়ির পুজো (কলেজ স্ট্রিট): এই পুজোর শুরু চন্দননগর থেকে হলেও, প্রায় ১৩০ বছরের পুরোনো এই পুজোটি এখনও বৈষ্ণব রীতিতে হয়। শোনা যায়, স্বপ্নাদেশ পেয়ে মদন গোপাল দে এই পুজো শুরু করেছিলেন। এখানে এখনও ধুনো পোড়ানোর প্রথা চালু রয়েছে।
- চোরবাগান মৈত্র বাটির পুজো: এই পুজোর বয়স প্রায় ২৫০ বছর, যা কলকাতার অন্যতম প্রাচীন পুজো। কথিত আছে, স্বয়ং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর নাকি এই বাড়ির নামকরণ করেছিলেন। এখানে মা জগদ্ধাত্রীর দু’পাশে জয়া এবং বিজয়ার মূর্তি দেখা যায়।
- শোভাবাজারের বটকৃষ্ণ পালের বাড়ির পুজো: হাওড়ার শিবপুর থেকে কলকাতায় এসে ওষুধের ব্যবসা শুরু করেন বটকৃষ্ণ পাল। প্রায় ১০০ বছরের পুরনো এই পুজোয় তামার তৈরি চালচিত্রে সোনা এবং রূপোর প্রলেপ বিশেষভাবে নজর কাড়ে।
- ছাতুবাবু ও লাটুবাবুর বাড়ির পুজো: দুর্গাপুজোর জন্য জনপ্রিয় এই বনেদি বাড়িতে প্রায় ২০০ বছর ধরে জগদ্ধাত্রী পুজো হচ্ছে। কাঠের সিংহাসনে আসীন মায়ের এখানে তান্ত্রিক মতে পুজো হয়, যদিও ভোগ হয় নিরামিষ।
ট্যাংরার মাঠে চন্দননগরের ছোঁয়া
বনেদি বাড়ির পুজোর পাশাপাশি কলকাতার বারোয়ারি বা সর্বজনীন পুজোও এখন কম জমকালো নয়। কলকাতার বারোয়ারি পুজোগুলির মধ্যে ট্যাংরায় অবস্থিত শীললেন যুবক বৃন্দের জগদ্ধাত্রী পুজো অন্যতম।
এই পুজোটি এই বছর ৪৪তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। এখানকার পুজোও চন্দননগরের মতোই চার দিন ধরে চলে। এখানকার পুজোর মূল আকর্ষণ হলো থিম, যেখানে বেশিরভাগ সময়ই দেবী শক্তির প্রভাব এবং শ্রীকৃষ্ণের জীবনের ওপর ভিত্তি করে থিম তৈরি করা হয়। এই পুজোটি ট্যাংরার সিল লেন মাঠেই অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে চার দিন ধরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং প্রসাদ বিতরণ চলে।
যদিও চন্দননগরে পুজো পাঁচ দিন ধরে হয়, কলকাতায় এতদিন ধরে পুজো না হলেও, এই ঐতিহ্যবাহী এবং বারোয়ারি পুজোগুলির জাঁকজমক কিছুমাত্র কম হয় না। শহরে এখন থেকেই উৎসবের আমেজ শুরু হয়ে গেছে।



















