ব্যুরো নিউজ ১৬ই মে : একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায়, তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটুর জেলার ৪০ হাজার হেক্টর জুড়ে বিস্তৃত ২৮ লক্ষ নারকেল গাছ নির্বিচারে কেটে ফেলা হচ্ছে। এই বিপুল সংখ্যক গাছ ধ্বংসের কারণ জানলে আপনি হতবাক হবেন।
সাধারণত, নারকেল গাছ এই অঞ্চলের মানুষের জীবন ও অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে সারি সারি নারকেল গাছ এখানকার কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল। নারকেল বিক্রি করে অর্থ উপার্জন, ডাব এবং নারকেল তেল উৎপাদন এই অঞ্চলের মানুষের প্রধান জীবিকা। দক্ষিণ ভারতে ভোজ্য তেল হিসেবে নারকেল তেলের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। এমনকি, তামিলনাড়ুতে বাদাম তেলের পরেই নারকেল তেলের স্থান।
কিন্তু, এক অপ্রত্যাশিত দুর্যোগে সবকিছু বিপর্যস্ত হয়ে গেছে। ২০১৯ সাল থেকে ‘ফাইটোপ্লাজমা’ নামক একটি মারাত্মক সংক্রমণ নারকেল গাছগুলির জন্য অভিশাপের মতো নেমে এসেছে। এই রোগের কোনো কার্যকর ওষুধ না থাকায় গাছগুলিকে বাঁচানো আর সম্ভব হচ্ছে না।
এর আগে কেরালায় একই ধরনের রোগ দেখা দিলেও, সেখানকার সরকার কিছু বিশেষ পদক্ষেপ নিয়ে নারকেল গাছগুলিকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছিল। তবে, তামিলনাড়ুর কৃষকদের অভিযোগ, তাঁদের রাজ্য সরকার এই বিষয়ে যথেষ্ট উদাসীন ছিল। যার ফলস্বরূপ আজ ২৮ লক্ষ মূল্যবান নারকেল গাছ কেটে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা।
তামিলনাড়ু সরকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রতি হেক্টর জমিতে ৩২ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করেছে। তবে, গাছ হারানো কৃষকরা এই ক্ষতিপূরণে মোটেই সন্তুষ্ট নন। তাঁদের দাবি, পুনরায় নারকেল চারা লাগানো এবং সেগুলোকে বড় করে তোলার জন্য প্রতি হেক্টরে প্রায় ১২ লক্ষ টাকার বেশি খরচ হবে। তাই, তাঁরা তামিলনাড়ু সরকারের কাছে এই বিষয়ে আরও বিবেচনা করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, এই ঘটনা তামিলনাড়ুর নারকেল চাষের উপর এক দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে। কৃষকরা এখন গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।