ব্যুরো নিউজ ,৩ মে: ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধু নদীর জল নিয়ে ফের চরম উত্তেজনা। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ শনিবার সরাসরি হুমকি দিয়ে জানালেন, ভারত যদি সিন্ধু নদীর জল আটকে কোনও নতুন বাঁধ তৈরি করে, তা হলে ইসলামাবাদ সেই নির্মাণ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেবে।
ভারত যদি নদিতে বাঁধ দিয়ে জল বন্ধ করে
এক টিভি সাক্ষাৎকারে আসিফ বলেন, “জল আটকানোও আগ্রাসনের আরেক রূপ। এতে মানুষ খিদে আর তেষ্টায় মারা যাবে। ভারত যদি সিন্ধুর জল আটকানোর চেষ্টা করে, আমরা তা সরাসরি আক্রমণ হিসেবে দেখব। বাঁধ ভাঙতে আমাদের বাধ্য হবই।”
পহেলগাঁও কাণ্ডে হাফিজ সইদের নাম জড়াল! লাহৌরে নিরাপত্তা চাদরে মোড়া লশকর প্রধানের ঘর
উল্লেখ্য, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর পর থেকেই ভারত-পাক সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। নয়াদিল্লি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত করার কথা ঘোষণা করেছে। এই চুক্তি অনুযায়ী সিন্ধু এবং তার পশ্চিম উপনদীগুলির জল ব্যবহারের অধিকার পাকিস্তানের। দেশের ৮০ শতাংশ কৃষি এই জলেই নির্ভরশীল। পাশাপাশি ভারত যদি নদিতে বাঁধ দিয়ে জল বন্ধ করে দেয়, তা হলে ভয়াবহ সংকটে পড়তে পারে ইসলামাবাদ।
আসিফ আরও বলেন, “ভারত যদি সিন্ধুর সিস্টেমে কোনও বাঁধ তৈরি করে, সেটি হবে আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘন। পাকিস্তান তা কোনও অবস্থাতেই মেনে নেবে না। প্রয়োজন হলে প্রতিরোধ করা হবে। তবে আপাতত আমরা বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলের নজরে আনছি।”
ইতিহাসে প্রথম! কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি সরে দাঁড়ালেন জনস্বার্থ মামলার শুনানি থেকে
পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী অভিযোগ করেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে জল-রাজনীতি করছেন। তাঁর কথায়, “ভারত আন্তর্জাতিক মঞ্চে দাবি করলেও কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেনি। আমরা শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই, কিন্তু আগ্রাসনের জবাবও দিতে প্রস্তুত।”
এদিকে পহেলগাঁও ঘটনার পর দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে, আকাশসীমা বন্ধ, নাগরিকদের ফেরত পাঠানো হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকা, চিন এবং ইউরোপের দেশগুলি দুই দেশকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। তবে সিন্ধুর জল নিয়ে এই টানাপোড়েনে দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি এতদিন দুই দেশের সম্পর্ক যতই খারাপ হোক না কেন, এক ধরনের রক্ষাকবচ ছিল। এবার সেই চুক্তি নিয়েই দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। ফলে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে, সেদিকে এখন নজর গোটা বিশ্বের।



















