ব্যুরো নিউজ,২৪ এপ্রিল: মঙ্গলবার পহেলগাঁওয়ে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা চমকে দিয়েছে দেশবাসীকে। দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার বৈসরন উপত্যকায় একটি ভয়াবহ গুলিবর্ষণের মধ্যে ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে ছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা ভরত ভূষণ, যিনি পেশায় ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। তাঁর মৃত্যু শুধু তাঁর পরিবারকেই নয়, পুরো ভারতকেই গভীর শোকের মধ্যে নিমজ্জিত করেছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কিছুদিন অপেক্ষার অনুরোধ,শুনলেন না কেন রাজ্যপাল?
ভরত ভূষণের শেষ সময়: পরিবারের সামনে মৃত্যু
ভরত ভূষণ এবং তাঁর পরিবার কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়েছিলেন। তার সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী সুজাতা এবং তিন বছরের ছোট ছেলে। ১৮ এপ্রিল কাশ্মীরে পৌঁছানোর পর, পহেলগাঁওতে তাদের সফরের শেষ দিন ছিল। মঙ্গলবার দুপুরে, যখন তারা বৈসরনে ঘোড়ায় চড়ে উপত্যকায় ঘুরছিলেন, সেই সময় একদল সশস্ত্র জঙ্গি আচমকা তাদের ওপর হামলা চালায়। ভরত ভূষণ, তাঁর স্ত্রীর সামনে প্রাণভিক্ষা চেয়েছিলেন। তিনি বার বার বলছিলেন, ‘‘আমাকে ছেড়ে দিন। আমার তিন বছরের ছেলে রয়েছে।’’ কিন্তু, দুঃখজনকভাবে, এই কাতর অনুরোধও জঙ্গিদের হৃদয় গলাতে পারেনি। চোখের পলকে, তাঁর দেহ গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায়, আর তার তিন বছরের ছেলে, স্ত্রীর চোখের সামনে ঘটে এই বিভীষিকা। এই ঘটনায় ভরত ভূষণের মৃত্যুর পর, তাঁর স্ত্রী সুজাতা জানান, ‘‘আমরা শখের জন্য এখানে এসেছিলাম, কিন্তু আমরা জানতাম না যে এটাই শেষ সফর হবে।’’
বেঙ্গালুরুর বিজেপি সাংসদ তেজস্বী সূর্য বিষয়টি জানার পর, তিনি সুজাতা এবং তাঁর পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করেন। তেজস্বী সূর্য অনন্তনাগের স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। সাংসদ জানান, ‘‘আমরা তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি এবং সুজাতাদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’’ এদিন, রাতের দিকে, ভরত ভূষণের দেহ বেঙ্গালুরুর বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে, এবং পরিবার শোকের মধ্যে ডুবে গেছে। তাঁর মৃত্যুর খবরে দেশের নানা অংশ থেকে সমবেদনা জানানো হয়েছে।
পহেলগাঁও হামলা নিয়ে একটি বড় রহস্য তৈরি হয়েছে – কেন একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এমন হামলা চালানো হলো? পর্যটকদের ওপর হামলা চালিয়ে যারা এই ধরনের অপরাধ করল, তাদের উদ্দেশ্য কি ছিল? অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, কেন নিরীহ পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হলো? কেবল একটি সাধারণ বেড়ানোর সফরের মধ্যে এমন নির্মমতা কেন? যদিও পাকিস্তান ভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট হামলার দায় স্বীকার করেছে, তবে এর পিছনে অন্য কোনও আন্তর্জাতিক কৌশলও থাকতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। এই ঘটনায় শুধু একটি পরিবার নয়, পুরো জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভরত ভূষণ সহ যারা নিহত হয়েছেন, তাদের স্মৃতি চিরকাল মনে রাখা হবে।