ব্যুরো নিউজ, ৭ এপ্রিল: মুঘল সম্রাট আকবরের সময়ে পয়লা বৈশাখের সূচনা এবং বাঙালির সংস্কৃতিতে এর গুরুত্ব,পয়লা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষ, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের পাশাপাশি সারা বিশ্বের বাঙালির কাছে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। প্রতি বছর, বাংলা ক্যালেন্ডারের প্রথম দিন হিসেবে পয়লা বৈশাখ পালিত হয়, যা সাধারণত এপ্রিলের ১৪ বা ১৫ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। ‘পয়লা’ শব্দের অর্থ ‘প্রথম’ এবং ‘বৈশাখ’ হল বাংলা ক্যালেন্ডারের প্রথম মাস। এই দিনটি একদিকে যেমন বাঙালির সংস্কৃতির প্রতীক, তেমনি এটি একটি পবিত্র দিন, যেখানে নববর্ষের সূচনা হয় এবং নতুন দিনের শুভেচ্ছা জানানো হয়।
Today petrol price: আজ পেট্রল ও ডিজেলের দাম কোন রাজ্যে কত থাকছে এক নজরে জেনে নিন
পয়লা বৈশাখের ইতিহাস ষোড়শ শতাব্দীতে মুঘল সম্রাট আকবরের সময় শুরু হয়। ১৫৮৪ সালে, সম্রাট আকবর বাংলার আর্থিক ব্যবস্থাকে সুসংগঠিত করার জন্য একটি নতুন ক্যালেন্ডার ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন, যা ছিল ইসলামি এবং হিন্দু ক্যালেন্ডারের সমন্বয়ে তৈরি। এই ক্যালেন্ডারের উদ্দেশ্য ছিল ফসল কাটার সময়ের সঙ্গে মিল রেখে কর আদায় করা। আকবরের এই ক্যালেন্ডারটির নাম ছিল ‘তারিখ-এ-এলাহী’। যদিও এটি আদি মুঘল ক্যালেন্ডারের অংশ ছিল, পরবর্তীতে বাংলায় এর নামকরণ হয় ‘বঙ্গাব্দ’ হিসেবে, যা আজও ব্যবহৃত হয়।
অবশ্য, বাংলা মাসগুলির নামকরণ নিয়ে কিছু বিতর্ক রয়েছে। যেমন, বৈশাখের নামকরণ হয় বিশাখা নক্ষত্র থেকে, জ্যৈষ্ঠের নামকরণ জ্যেষ্ঠা নক্ষত্র থেকে, আষাঢ় মাসের নামকরণ আষাড়া নক্ষত্র থেকে এবং শ্রাবণ মাসের নামকরণ শ্রবণা নক্ষত্র থেকে। এই নামকরণের পদ্ধতি হিন্দু সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে সম্পন্ন হয়, যেখানে বিভিন্ন নক্ষত্রের সঙ্গে মাসগুলির সম্পর্ক স্থাপন করা হয়েছে। পয়লা বৈশাখ, যা বাংলা নববর্ষ হিসেবে পরিচিত, বৈশাখ মাসের প্রথম দিনে উদযাপিত হয়।
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব:
পয়লা বৈশাখ শুধু একটি নতুন বছরের শুরু নয়, এটি বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং সামাজিক জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই দিনটি ব্যবসায়ীরা তাঁদের ‘হালখাতা’ খুলে পুরনো হিসাব মেটাতে এবং নতুন হিসাব শুরু করতে। পাশাপাশি, এই দিনে মিষ্টিমুখের প্রথাও রয়েছে, যেখানে আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধুদের মধ্যে উপহার আদান-প্রদান করা হয়। বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে নাচ, গান, নাটক এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও অনুষ্ঠিত হয়। পয়লা বৈশাখের দিনটি বাঙালি সমাজে নতুন সম্ভাবনা, আশাবাদ এবং ভালোবাসার বার্তা নিয়ে আসে। এটি শুধু একটি উৎসব নয়, বরং একটি নতুন সূচনা, যেখানে পুরনো বছরের বেদনা ও হতাশা মুছে ফেলে নতুন আশায় দিন শুরু করা হয়