ব্যুরো নিউজ, ২৮ ফেব্রুয়ারি :ট্যাংরা-কাণ্ডে বেঁচে ফেরা চোদ্দো বছরের কিশোর বৃহস্পতিবার রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের কাছে এক অদ্ভুত ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেছে। সে বলেছে, ‘‘বাবাও আমায় মারতে চেয়েছিল। কাকিমার বাবা-মা আমাকে অনেক ভালোবাসেন, তাই আমি তাদের কাছে থাকতে চাই।’’ কিশোরের এই ইচ্ছার কথা শুনে, এখন প্রশ্ন উঠেছে—সে কোথায় থাকবে এবং তার ভবিষ্যৎ কী হবে?
২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি শনির অস্ত যাওয়ার দিন, তিনটি রাশিতে আসতে পারে বড় পরিবর্তন
কমিশনের উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী
পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, কিশোরের নিজের দাদু-দিদিমা মারা যাওয়ার পর তার কাকিমা, অর্থাৎ রোমি দে-র মা-বাবার কাছে তাকে রাখতে চাওয়া হয়। তবে, কিছু পরিবারিক সদস্যের অমতে তারা এখনও সিদ্ধান্ত নেননি। এর পর, শিশু সুরক্ষা কমিশন রোমির মা-বাবার সঙ্গে কথা বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিশোরের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে এখনও সময় বাকি, এবং শিশু সুরক্ষা কমিশন তাদের রাজি করানোর চেষ্টা করছে। তবে, যদি তারা রাজি না হন, তাহলে অন্য ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কমিশনের উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী।
মধ্যরাতে ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল নেপাল, আতঙ্কিত স্থানীয়রা
এদিকে, শিশু অধিকার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সংগঠনের সদস্যরা দাবি করেছেন, এতদিনেও ওই কিশোরের জন্য কোনও স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বর্তমানে কিশোরটি নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সে পুলিশের নজরবন্দি অবস্থায় রয়েছে, এবং তার বাবা পাশের ঘরে থাকলেও তাকে ছেলের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। এর মধ্যে, কোন আত্মীয়-স্বজনও ওই কিশোরের সঙ্গে দেখা করতে আসছেন না। এই পরিস্থিতিতে শিশু অধিকার কর্মীরা উদ্বিগ্ন, এবং তাদের প্রশ্ন, “কেন বাবা সুস্থ হয়ে উঠলে কিশোরের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে? কেন এখনই তার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা হচ্ছে না?”
আইনজীবী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘কিশোরটি যেসব মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তা বুঝে ওঠা কঠিন। এই পরিস্থিতিতে, শিশু সুরক্ষা কমিশন স্বতঃপ্রণোদিতভাবে ব্যবস্থা নিতে পারে। কমিশন চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটিকে নির্দেশ দিয়ে কিশোরটির ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।’’ দেবাশিস আরও বলেছেন, কিশোরটি যদি নিজে কোনও আত্মীয়ের কাছে না যেতে চায়, তবে তাকে সরকারি হোমে পাঠানো হতে পারে, অথবা কোনো স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বা পরিজনকে তার দায়িত্বে রাখা যেতে পারে। কিছু মানুষ ইতিমধ্যে এই কিশোরের দায়িত্ব নিতে আগ্রহী হয়েছেন, তবে আইনজীবীরা মনে করেন, কিশোরটিকে দত্তক নেওয়া সহজ হবে না।এদিকে, কিশোরটির বাবা জীবিত থাকায়, তাকে দত্তক নেওয়ার সিদ্ধান্ত বর্তমানে কার্যকর নয়। তবে, যদি বাবা হলফনামা দিয়ে সন্তানের দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেন, তাহলে পরিস্থিতি বদলাতে পারে। কিশোরটির বয়স ১৪ বছর এবং সে নিজের মতামতও তৈরি করেছে, তাই তাকে কোথায় থাকতে চায় তা গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।কমিশনের উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুলিশ অনেকটাই কাজ করেছে, এখন আত্মীয়দের রাজি করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব, কিশোরটি একটি ভালো পরিবেশে যাবে, তার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য এটি জরুরি।’’তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে, কিশোরটির জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কখন? এখনও পরিষ্কার উত্তর মেলেনি।