হুরহুর করে মেদ ঝরাতে গিয়ে হতে পারে এই মারাত্মক রোগ গুলি

ব্যুরো নিউজ, ২৭ ফেব্রুয়ারি:বর্তমানে অনেকেই দ্রুত ওজন কমানোর নানা পদ্ধতি অনুসরণ করছেন। এমনকি কেউ ১০ দিনের মধ্যে ৫ কেজি কমানোর কথা ভাবছেন, আবার কেউ দুই মাসে ২০ কেজির বেশি ওজন কমানোর লক্ষ্য স্থির করছেন। ইন্টারনেটে খোঁজাখুঁজি চলছে, কে কীভাবে ওজন কমাচ্ছে এবং কী পদ্ধতিতে তার অনুসরণ করা যায়। কেউ তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করছেন এবং ফিটনেস প্রশিক্ষকরা ওজন কমানোর আরও নতুন উপায় দিচ্ছেন। তবে এত দ্রুত ওজন কমানোর প্রতিযোগিতায় অনেকেই ভুল পথে হাঁটছেন। একদিকে যেমন দ্রুত ওজন কমানো অনেকের কাছে সৌন্দর্যের মাপকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে, অন্যদিকে এইভাবে ওজন কমানোর ফলে শরীরে নানা ধরনের ক্ষতি হতে পারে, যার মধ্যে একটি হল ‘স্লিমার্স প্যারালাইসিস’।

মাছ নয় তো যেন ওষুধের ভান্ডার ভাজা খেলেই সেরে যাবে রোগ

ওজন কমানোর সঙ্গে পক্ষাঘাতের সম্পর্ক কী?

ওজন কমানোর প্রক্রিয়া শুধুমাত্র পেট বা কোমরের মেদ কমানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। পুরো শরীরের মেদ কমে। তবে, শরীরের মেদ কমানোরও একটি নিয়ম আছে। সাধারণত, এক সপ্তাহে ৫০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজন কমানো স্বাভাবিক, কিন্তু যদি কেউ এক সপ্তাহে ৫ কেজি বা তার বেশি ওজন কমানোর চেষ্টা করেন, তবে বিপদ আসতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দ্রুত ওজন কমানোর ফলে পায়ের হাঁটু এবং স্নায়ুর উপর প্রভাব পড়ে। বিশেষ করে, দ্রুত মেদ কমানোর ফলে হাঁটুর মেদও কমে যায়, যা হাঁটু এবং পায়ের জন্য জরুরি। এরপর পায়ের পেশি এবং স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে, যার ফলে পা অসাড় হয়ে যেতে পারে।এই ধরনের সমস্যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে বলা হয় ‘পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি’, অর্থাৎ স্নায়ু দুর্বলতা। স্নায়ুর সঙ্গে মস্তিষ্কের যোগাযোগ নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে পায়ের পেশি এবং শিরায় সমস্যা শুরু হয়। এর ফলে পায়ের ব্যথা ও অসাড়তা দেখা দেয়। আরও একটি সমস্যা হচ্ছে ‘ড্রপ ফুট’, যেখানে পায়ের পেরোনিয়াল স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পায়ের পাতা তুলতে সমস্যা হয়।

অপুষ্টির প্রভাব এবং স্নায়ু দুর্বলতা

ওজন কমানোর পাশাপাশি অপুষ্টি একটি বড় কারণ হিসেবে কাজ করে। শরীরে ভিটামিন বি১, বি৬, এবং বি১২-এর অভাব হলে স্নায়ুর উপর এর ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ে। কম খাওয়া বা দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার ফলে শরীরে এই ভিটামিনগুলির অভাব দেখা দেয়, যা পেশি ও স্নায়ু দুর্বল করে দেয়। এছাড়া, পটাশিয়ামের অভাবও পেশির দুর্বলতার কারণ হতে পারে। এই অবস্থায় পেশির শক্তি একেবারে কমে যায় এবং হাঁটাচলা করতেও সমস্যা হয়।তবে, ‘স্লিমার্স প্যারালাইসিস’ একটি সাময়িক সমস্যা। নিয়মিত শরীরচর্চা, ফিজিয়োথেরাপি এবং স্নায়ু সচল রাখতে পারলে এই সমস্যা দ্রুত ঠিক হয়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন, স্নায়ুর উপর চাপ না দেওয়ার জন্য কোনো একটি ভঙ্গিতে বেশি সময় ধরে বসা উচিত নয়।

ভালবাসা টিকিয়ে রাখতে প্রিয় মানুষের সঙ্গে এভাবে চলুন ছাড়া ছাড়ি হবে না কোনো দিন

স্বাস্থ্যকর ওজন কমানোর উপায়

ওজন কমানোর জন্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার মাধ্যমে সুষম খাদ্য গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ। খালি পেটে বা কম খেয়ে ডায়েট করার চেয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে ওজন কমানো অনেক ভালো। প্রোটিন, ফাইবার এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে, দই, মাশরুম, মাছ, ডিম, বাদাম, তিসির বীজ, সূর্যমুখীর বীজ, মরসুমি ফল ইত্যাদি খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। পাশাপাশি, নিয়মিত শরীরচর্চা এবং ফিজিয়োথেরাপির মাধ্যমে স্নায়ু সচল রাখতে হবে।ওজন কমানোর সঠিক উপায় মেনে চললে, আপনি যেমন একটি স্বাস্থ্যকর শরীর পাবেন, তেমনি এই ধরনের বিপদ থেকেও দূরে থাকতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর