ব্যুরো নিউজ,৩০ জানুয়ারি :আগে আমাদের মা-ঠাকুমারা সরাসরি খাটাল থেকে আনা দুধ ভাল করে ফুটিয়ে খেতে বলতেন। কারণ, কাঁচা দুধ খাওয়ার অনেক বিপদ ছিল। কিন্তু আজকাল বাজারে প্যাকেটের দুধের আধিক্য। অনেকেই মনে করেন যে, প্যাকেটের দুধ পাস্তুরাইজ়ড, অর্থাৎ বিশেষ পদ্ধতিতে উচ্চ তাপমাত্রায় জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। তাই দুধ ফুটানোর প্রয়োজন নেই। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে, কাঁচা দুধ বা প্যাকেটের দুধ—যেকোনো দুধই ফুটিয়ে খাওয়াই ভালো।
বিশাল স্বাস্থ্য উপকারিতায় ক্যামেল মিল্কঃ জানুন এর চমকপ্রদ উপকারিতা!
কাঁচা দুধ কতটা বিপজ্জনক?
আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দাবি করেছেন, কাঁচা দুধে নানা ধরনের ভাইরাস, বিশেষ করে ফ্লু ভাইরাস বা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস জন্মায়। তাদের গবেষণা অনুযায়ী, কাঁচা দুধে প্রচুর পরিমাণে H1N1 ফ্লু ভাইরাস পাওয়া যায়, যা কমপক্ষে পাঁচ দিন পর্যন্ত জীবিত থাকতে পারে। এমনকি যদি দুধ ফ্রিজে রাখা হয় তাও ভাইরাসটি মারা যায় না, বরং সংখ্যায় বাড়তে থাকে। এই ভাইরাসগুলো শরীরে নানা রকম সমস্যা তৈরি করতে পারে। তবে, দুধ ফুটালে উচ্চ তাপমাত্রায় এই সব ভাইরাস মারা যায়।
প্যাকেট দুধেও বিপদ!
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক আলেকজান্দ্রিয়া বোহেমার মতে, প্যাকেটের দুধও ফুটিয়ে খাওয়া উচিত। কারণ, পাস্তুরাইজ়েশন পদ্ধতিতে দুধকে সম্পূর্ণরূপে জীবাণুমুক্ত করা সম্ভব নয়। গবেষকদের মতে, পাস্তুরাইজ়ড দুধে কিছু ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া যেমন ই-কোলাই, সালমোনেলা এবং হজমের সমস্যার কারণ হতে পারে এমন অন্য মাইক্রোওর্গানিজম থাকতে পারে।আরও চমকপ্রদ তথ্য হলো, সম্প্রতি নিউ ইয়র্কের কিছু গোশালায় গরুর দুধে বার্ড ফ্লু (অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা) ভাইরাস পাওয়া গেছে। এই ভাইরাস প্যাকেটের দুধে থাকতে পারে এবং আমাদের শরীরে প্রবেশ করে নানা স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করতে পারে।
‘ডার্ক’ চকোলেট খাওয়া কি আদৌ স্বাস্থ্যকর? কি বলছেন পুষ্টিবিদরা?
পাস্তুরাইজড দুধেও রয়েছে ব্যাকটেরিয়া
ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজির গবেষকদের মতে, কাঁচা দুধ ছাড়াও এমনকি পাস্তুরাইজড দুধেও অনেক ধরনের মাইক্রোব্যাক্টেরিয়া থাকে। তাদের মধ্যে রয়েছে সিউডোমোনাস, মাইক্রোকক্কাস, এনটারোব্যাক্টর, ব্যাসিলাস, ফ্ল্যাভোব্যাক্টর ইত্যাদি। তাই দুধ কখনোই সরাসরি খাওয়ার আগে ফুটিয়ে নেওয়া উচিত।
সতর্ক থাকুন
দুধ যতই পাস্তুরাইজ়ড বা প্যাকেটজাত হোক না কেন, তাকে ফুটিয়ে খাওয়াই সঠিক পদ্ধতি। এতে শরীরের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কমবে। প্রয়োজন হলে দুধ বারবার ফুটিয়েও খাওয়া যায়, এতে তার পুষ্টিগুণ নষ্ট হবে না। তাই পরবর্তী বার যখন প্যাকেটের দুধ কিনবেন, মনে রাখবেন—তাকে ফুটিয়ে খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন।