ব্যুরো নিউজ,২৮ জানুয়ারি :আজকাল শরীরচর্চা ও ডায়েট নিয়ে আলোচনা বাড়ছে এবং নতুন নতুন ডায়েট ট্রেন্ডের মধ্যে সবথেকে আলোচিত হচ্ছে ‘এন্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ডায়েট’। এই ডায়েটটি সম্প্রতি জনপ্রিয় হয়েছে, বিশেষত ফিটনেস ইনফ্লুয়েন্সাররা এবং সেলিব্রিটিরা যেমন বিদ্যা বালান ও সামান্থা রুথ প্রভু এটি নিয়ে প্রশংসা করছেন। সেলিব্রিটি নিউট্রিশনিস্ট রুজুতা দ্বिवেকর, যিনি Kareena Kapoor-র মতো তারকাদের সঙ্গে কাজ করেছেন, সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে এই ডায়েটের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন।রুজুতা তার ভিডিওতে জানান, ‘ওজন কমানোর জন্য ডায়েট’ এই শব্দটি প্রতি পাঁচ বছরে নতুন করে বাজারে চলে আসে, এবং মানুষ ভেবে বসেন যে, এই ডায়েটটি তাদের স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান দেবে। তিনি বলেন, “বর্তমানে যে ডায়েটটি ট্রেন্ডে আছে, সেটি হল এন্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ডায়েট,” এবং আরও যোগ করেন, “এখন সবাই ভাবছে যে তাদের শরীরে অনেক বেশি ইনফ্ল্যামেশন রয়েছে।”
পেশি শক্তি বৃদ্ধি এবং ব্যথা কমানোর সহজ উপায় এই আসন
ইনফ্ল্যামেশন আসলে কী?
রুজুতা ব্যাখ্যা করেন, “ইনফ্ল্যামেশন শরীরের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, যা চিকিৎসা এবং টিস্যু মেরামতের জন্য প্রয়োজন। এটা প্রয়োজনীয়, কিন্তু এটা ধীরে ধীরে কমে আসা উচিত।” তিনি আরও বলেন, কোন একক খাবার বা ডায়েট ইনফ্ল্যামেশনকে পুরোপুরি নির্মূল করতে পারে না। “আপনার পুরো জীবনধারা এই প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে, যাতে ইনফ্ল্যামেশন প্রয়োজন অনুযায়ী হয় এবং পরে থেমে যায়,” তিনি যোগ করেন।
ইনফ্ল্যামেশনকে কীভাবে ঠিকভাবে পরিচালনা করবেন?
১. ঘরোয়া রান্না করা খাবার খান
রুজুতা বলেন, শুধুমাত্র ট্রেন্ডি ডায়েট বা দ্রুত সমাধানের দিকে না চলে, বরং ঘরোয়া খাবারে মনোযোগ দিন, যেগুলোর নাম আপনার মাতৃভাষায় আছে। খাবার খাওয়ার সময় মনোযোগী হয়ে খেতে হবে। “টিভি, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম বন্ধ রাখুন যখন আপনি খাচ্ছেন। এটা আপনার প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিত,” বলেন তিনি।
বিশাল স্বাস্থ্য উপকারিতায় ক্যামেল মিল্কঃ জানুন এর চমকপ্রদ উপকারিতা!
২. নিয়মিত ব্যায়াম করুন
নিয়মিত ব্যায়াম শরীরের ইনফ্ল্যামেটরি প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে সহায়ক, তবে ব্যায়ামে ভারসাম্য বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “অতিরিক্ত বা অল্প ব্যায়াম করলে দীর্ঘমেয়াদে ইনফ্ল্যামেশন হতে পারে,” বলেছেন রুজুতা।
কী ধরনের ব্যায়াম করবেন?
রুজুতা পরামর্শ দেন, এমন ব্যায়াম করুন যাতে শরীর সঠিকভাবে পুনরুদ্ধার করতে পারে। “আপনি ভাববেন না, ‘আজ আমি এত বেশি ব্যায়াম করব যে তিন দিনে স্লিম হয়ে যাবো,’ এটা হবে না। বরং আপনি বিছানায় শুয়ে পড়বেন,” তিনি বলেন। উদ্দেশ্য হওয়া উচিত এমন ব্যায়াম করা যা আপনার শরীর পরিচালনা করতে এবং পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম।
৩. পর্যাপ্ত ঘুম নিন
ঘুম আমাদের সুস্থতার জন্য অপরিহার্য, কিন্তু তা প্রায়শই উপেক্ষিত হয়। রুজুতা বলেন, “আপনার ৪০-এর দশকে বেশি রাত না জাগাই ভালো। আপনি যখন কিশোর বা ২০-এর দশকে থাকবেন, তখন এটি তেমন ক্ষতিকর নয়, কিন্তু ৪০, ৫০ বা ৬০-এর বয়সে এটা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।” তিনি আরো যোগ করেন, “ভাল ঘুম আপনাকে শান্ত ও সুখী রাখবে।”
‘ডার্ক’ চকোলেট খাওয়া কি আদৌ স্বাস্থ্যকর? কি বলছেন পুষ্টিবিদরা?
৪. মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন
মানসিক চাপ শরীরের ইনফ্ল্যামেশনকে প্রভাবিত করে, তাই নিজের যত্ন নেওয়া এবং অপ্রয়োজনীয় চাপ এড়িয়ে চলা জরুরি। রুজুতা বলেন, “সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, আপনার চারপাশে কী হচ্ছে, অন্যরা কী ডায়েট করছে বা কী বলছে—এগুলি নিয়ে চিন্তা না করা। এতে আপনি নতুন কোনো ফ্যাডের দিকে ছুটে যাবেন না।”
এভাবে, রুজুতা দ্বিভেকরের পরামর্শ অনুযায়ী, ইনফ্ল্যামেশন নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং সুস্থ জীবনযাপন করতে হলে খাওয়ার অভ্যাস, ব্যায়াম, ঘুম এবং মানসিক চাপের নিয়ন্ত্রণ খুব গুরুত্বপূর্ণ।
