ব্যুরো নিউজ ২৫ অক্টোবর : হুগলির বাঁশবেড়িয়ার ২০৯ বছরের পুরনো হংসেশ্বরী মন্দিরের পরিবেশটি সত্যিই মনোমুগ্ধকর। সামনের বাগানের মধ্যে ৭০ ফুট উঁচু, ১৩টি চূড়া বিশিষ্ট ছ’তলা মন্দিরটি প্রতিদিন মা দক্ষিণাকালী রূপে পূজিতা হন। দীপান্বিতা অমাবস্যায় মা হংসেশ্বরীকে সাজানো হয় রাজবেশে, যেখানে তার রূপও অন্যরকম হয়ে ওঠে। এখানে দেবী চর্তুভুজা, পদ্মাসনে বসে আছেন, এক পা ভাঁজ করে আর অন্য পা মহাদেবের বুক পর্যন্ত ঝুলে রয়েছে।
কৃষ্ণনগরে ছাত্রীর অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুঃ পুলিশি হেফাজতে ধৃত যুবকের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত
মন্দিরের বর্ণনা।
এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা রাজা নৃসিংহদেব রায়। ১৮০২ সালে তিনি মন্দিরের নির্মাণ কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই মারা যান। তার দ্বিতীয় স্ত্রী রানি শংকরী সেই অসমাপ্ত কাজ সম্পূর্ণ করেন। মন্দিরটি নির্মাণের জন্য উত্তরপ্রদেশের চুনার থেকে পাথর এবং রাজস্থানের জয়পুর থেকে কারিগর আনা হয়েছিল।মন্দিরের গঠন আদি কালী মন্দিরগুলোর থেকে আলাদা, কারণ এটি ষটচক্র তত্ত্বকে অনুসরণ করে নির্মিত। যোগশাস্ত্র অনুযায়ী, মানবদেহের সুষুম্নাকাণ্ডে সাতটি চক্র রয়েছে। রাজা নৃসিংহদেব কুলকুণ্ডলিনী তত্ত্বের মাধ্যমে এই স্থাপত্যের কারুকার্য ফুটিয়ে তুলেছিলেন।মন্দিরের গর্ভগৃহে পাথরের বেদীর উপর খোদাই করা অষ্টদল পদ্ম রয়েছে, যার উপরে শায়িত আছেন শিব। মহাদেবের হৃদয় থেকে উঠে আসা পদ্মাসনে অধিষ্ঠান করছেন মা হংসেশ্বরী। গর্ভগৃহকেই মূলাধার হিসাবে দেখা হয়। তন্ত্রমতে, মানবদেহের পাঁচটি নাড়ির মতো এই মন্দিরে পাঁচটি সিঁড়ি রয়েছে। কালীমূর্তির সঙ্গে তিন তলায় রয়েছে কষ্টিপাথরের ১২টি শিবলিঙ্গ।
শীতকালে খুশকির সমস্যা থেকে বাঁচবেন কিভাবে? রইল টিপস
মন্দিরে সারা বছর মা হংসেশ্বরীর পূজা পূর্বের প্রথা অনুযায়ী হয়। গত বছর এখানে ছাগবলি হয়েছে, কিন্তু পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি বছর বলি হবে না। পরিবারের সদস্য সুমন চক্রবর্তী জানান, “মা সারা বছর শান্তরূপে পূজিতা হন। কালীপুজোর দিন সন্ধ্যা আরতির পর মা রাজবেশ ধারণ করেন এবং পরদিন ভোর চারটের সময় ফের আগের রূপে ফিরিয়ে আনা হয়।”