মা দুর্গার বিসর্জনের পরই দেবী লক্ষ্মীর আবির্ভাব ঘটে। দেবী লক্ষ্মী সুখ, সমৃদ্ধি, সম্পত্তি ও ঐশ্বর্যের প্রতীক, কিন্তু তিনি চঞ্চলা। যেখানেই অহংকার ও অনিয়মের বাস, সেখান থেকে ত্যাগ করেন দেবী। দুর্গাপুজোর সময় মা মর্ত্যে আসেন এবং দশমির পর আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে তিনি কোজাগরী লক্ষ্মী পূজায় পূজিত হন। “কোজাগরী” শব্দের অর্থ হল “কে জাগে?”—রাত বাড়লে মা তার বাহন পেঁচা নিয়ে মর্ত্যে আসেন। যারা মায়ের জন্য ধূপ ও আলপনা সাজিয়ে অপেক্ষা করেন, দেবী তাদের বাড়িতে অধিষ্ঠান করেন।
শাস্ত্র মতে মহালক্ষ্মীর আট রূপের মাহাত্ম্য কি জানেন !
দেবী রুষ্ট হলে সেই স্থানের জৌলুস হারিয়ে যায়
দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে পূজিত হচ্ছে আঠারো হাতের মহালক্ষ্মী
কেন দুর্গাপুজোর পর লক্ষ্মীপুজো হয়? কথায় আছে, দেবী যদি কাউকে ত্যাগ করেন, তাহলে সেই স্থান শ্রী-হীন হয়ে পড়ে। দেবী রুষ্ট হলে কেবল ধনসম্পদই নয়, বরং সেই স্থানও জৌলুস হারায়। এই বিষয়টি ইতিহাসে দেখা যায় দেবতাদের ক্ষেত্রেও। একসময় দেবতাদের মধ্যে অহংকার বেড়ে গিয়েছিল এবং সেই কারণে লক্ষ্মী দেবী তাদের ত্যাগ করেন। এর ফলস্বরূপ, স্বর্গরাজ্যও শ্রীহীন হয়ে যায়।
একজন শিক্ষক এক আশ্চর্য লক্ষ্মী প্রতিমা সৃষ্টি করে তাক লাগাল সবাইকে
ঋষি দুর্বাশার অভিশাপে দেবী লক্ষ্মী পাতাললোকে চলে যান। যা দেবতাদের জন্য খুবই দুর্ভোগের কারণ হয়। দেবতারা নিজেদের ভুল বুঝে রক্ষাকর্তা বিষ্ণুর কাছে যান। বিষ্ণুর নির্দেশে দেবতারা সমুদ্রমন্থন করেন। যা থেকে নানা মূল্যবান রত্ন, গরল এবং অমৃত উঠে আসে। এই সমুদ্রমন্থনের ফলেই দেবী লক্ষ্মী পুনরায় বেরিয়ে আসেন এবং দেবতাদের শ্রী ও সুখ ফিরিয়ে দেন।
দুর্গাপুজোর পর লক্ষ্মীদেবীর পূজার পিছনে রয়েছে এই যুক্তি। মহিষাসুরকে বধ করে দেবী দুর্গা বিজয়ী হন। বিজয়ের আনন্দ যেন অহংকারে রূপ না নেয় জীবনে অলসতা সৃষ্টি না করে। তাই লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন করা হয়। একাগ্রচিত্তে দেবীর আরাধনা না করলে তিনি অধিষ্ঠান করেন না। তাই, মন দিয়ে দেবীর আরাধনা করলে অহংকার আমাদের স্পর্শ করতে পারে না।