ব্যুরো নিউজ,৩১ আগস্ট:৯ই আগস্ট এর পর থেকে কেটে গেল এতগুলো দিন আরজিকর কান্ড নিয়ে এখনো পর্যন্ত ধরা পড়লো না অভিযুক্তরা। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে আরজি কর কান্ডের তদন্তভার এখন সিবিআই এর হাতে। সিবিআই তদন্ত করতে গিয়ে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে। তারমধ্যে একটি হলো এফআইআর কপি। যা নিয়ে পুলিশ মহলের চরম গাফিলতির অভিযোগ সামনে উঠে আসছে। ৯ আগস্ট রাত ১১ টা ৪৫ মিনিটে করা হয় এফ আই আর। প্রথমত এফ আই আর এত দেরিতে কেন করা হয়েছে সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। যেখানে নির্যাতিতার মৃত্যু হয়েছে ৯ই আগস্ট ভোররাতে।
আরজি কর এফেক্ট!বিচারপতিদের উদ্দেশ্যে তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা মোদির
এফআইআর নিয়ে পুলিশের যুক্তি
৭২ ঘন্টার ডেডলাইন দিলো বিজেপি, ঘটনার পিছনে কোন রহস্য?তদন্তে পুলিশ
এফআইআর এ লেখা, প্রত্যেকটি লাইনের পরতে পরতে রয়েছে সন্দেহ। টালা থানায় এফআইআর নম্বর ৫২ ‘ফাস্ট কনটেন্টস কলমে লেখা আননোন মিসক্রিয়েন্টস কমিটেড উইলফুল রেপ উইথ মার্ডার’। অর্থাৎ অজ্ঞাত পরিচিত কেউ ইচ্ছাকৃত ধর্ষণ এবং খুন করেছে।ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন তুলেছিল কেন সকাল দশটা নাগাদ ঘটনা স্থলে পুলিশ পৌঁছে গেলেও রাত ১১:৪৫ মিনিটে এফ আই আর দায়ের করা হলো? মৃতদেহের যেখানে একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে সেখানে প্রথমেই খুনের ধারায় এফ আই আর দায়ের না করে পুলিশ কেন অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করল।এফআইআরের কাগজ হাতে আসার পর আন্দোলনকারী চিকিৎসক থেকে আইনজীবীদের বড় অংশ প্রশ্ন তুলেছে এফ আই আর এর লেখার শব্দ বাক্য নিয়ে। এফআইআর এ লেখা হয়েছে উইলফুল রেপ অর্থাৎ ইচ্ছাকৃত রেপ ।অথচ আইনের পরিভাষায় ইচ্ছাকৃত রেপ বলে কিছুই হয় না।
আন্দোলনের ঝাঁজ বাড়ালেও মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা,চালু টেলিমেডিসিন পরিষেবা
এই এফআই আর এ টালা থানার পুলিশ যে ধারা গুলি দিয়েছে তা ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বি এন এস) ৬৪ এবং ১০৩ (১)। নতুন আইন অনুযায়ী বি এন এস ৬৪ হল ধর্ষণের ধারা এবং ১০৩ (১) হল একজনের দ্বারা সংঘটিত খুনের ধারা। পুলিশ জানিয়েছে এফ আই আর লেখা হয়েছে পরিবারের থেকে পাওয়া অভিযোগ পত্রের ভিত্তিতে। অথচ মৃতার পরিবারের দাবি টালা থানার ওসিকে তাদের দেওয়া অভিযোগ পত্রে লেখা রয়েছে ‘আপনার কাছে একান্ত অনুরোধ আমার একমাত্র কন্যাসন্তানকে নিষ্ঠুর নির্যাতনের পর যে হত্যা করা হয়েছে। যে বা যারা এর সাথে যুক্ত, দ্রুত তদন্ত করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক’। ফলে তাদের প্রশ্ন পুলিশ যদি এই অভিযোগ পত্রের ভিত্তিতেই এফআইআর করে থাকে তাহলে ধর্ষক বা খুনি একজনই ধরে দেওয়া হল কেন?
আইনজীবী এবং আন্দোলনকারী ডাক্তাররা এও প্রশ্ন তুলেছে যে ময়না তদন্তেও রয়েছে অসঙ্গতি। তাদের দাবি ময়না তদন্তে যে তথ্য তাতে লেখা হয়েছে ‘দেয়ার ইজ মেডিকেল এভিডেন্স সাজেস্টিং ফোর্সফুল পেনিট্রেশন/ইন্সার্সন ইন দ্যা জেনেটালিয়া, ইন্ডিকেটিং দা পাবলিসিটি অফ সেক্সচুয়াল অ্যাসল্ট’। অর্থাৎ যোনি দ্বার দিয়ে কিছু প্রবেশ করানো র প্রমাণ মিলেছে। সুতরাং যৌন নির্যাতন করা হয়ে থাকতে পারে। তবে ময়না তদন্তে সরাসরি ধর্ষণের কথা উল্লেখ করা হয়নি।
RG Kar case:যত কান্ড সিভিকেই?ফের এক মত্ত সিভিকের কান্ড,প্রতিবাদী মিছিলে ধাক্কার অভিযোগ
আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের দাবি ময়নাতদন্ত নিয়ে পুলিশের যুক্তি ছিল এফআইআর এ কি পাওয়া যাচ্ছে তা দেখেই এফআইআর লেখা ভালো বলে তারা মনে করেছেন কারণ এভাবেই কাজ হয়ে থাকে। তবে ময়নাতদন্তে সঠিকভাবে ধর্ষণের কথা লেখা হয়নি। একজন ধর্ষক নাকি একাধিক জন জড়িত সে ব্যাপারেও ময়নাতদন্ত থেকে স্পষ্ট দিক নির্দেশ মেলেনি তাহলে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট জানার পর এফআইআর করতে গিয়ে পুলিশ কি করে লিখলো ‘উইলফুল রেপ’ বা একজনই করেছে?ফলে ময়না তদন্ত থেকে এফ আই আর পুরো বিষয়টির মধ্যে যে একটা বড়সড়ো গোলমাল এর গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সিবিআই এর নজরে এই সমস্ত কিছু এসে যাওয়াতে এই ন্যাক্কার জনক কাণ্ডে জড়িত থাকা মানুষের সংখ্যা কত সেটাই এখন ভাবাচ্ছে বাংলার মানুষকে।