ব্যুরো নিউজ,১৫ জুলাই: রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের দায়ের করা মানহানির মামলায় এবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর হয়ে সাওয়াল করলেন রাজ্যের প্রাক্তন এডভোকেট জেনারেল বর্ষিয়ান আইনজীবী সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। রাজভবনে শ্লীলতা হানি হয়েছে বলে যে অভিযোগ করে এক মহিলা কর্মীর অভিযোগ নিয়েই ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন মহিলারা রাজভবনে যেতে ভয় পাচ্ছেন আমিও যাব না। পারলে বাইরে কথা বলব। রাজভবনে যেসব কাণ্ডকারখানা হচ্ছে। তাতে ভয় লাগছে। আর তাতেই সিভি আনন্দ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন। তিনি বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী অযথা তার মানহানি করেছেন।
লাগবে না কোনো পরীক্ষা, বেতন প্রায় ৭০ হাজার, আবেদন করলেই চাকরি দিচ্ছে টাটা
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে উঠল অভিযোগ
সোমবার ওই মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে সওয়াল করেন সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন যে আমার মক্কেল যা বলেছেন সব জেনে বুঝেই বলেছেন। এই কথা তিনি হলকনামা দিয়ে জানাবেন। কিভাবে কাদের থেকে তিনি এই তথ্য পেয়েছেন তাও জানাবেন। গত মে মাসে রাজভবনে শীলতা হানির অভিযোগ উঠেছিল। বিষয়টি নিয়ে কলকাতা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন ওই রাজভবনের অস্থায়ী কর্মী মহিলা। তবে আইন অনুসারে পদে থাকাকালীন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোন ফৌজদারী মামলা দায়ের করা যায় না, তাই সেই মামলার বিষয়ে পুলিশ ও তেমন খোঁজ খবর করলেও হস্তক্ষেপ করেনি।
পাহাড়, নদী, সবুজ প্রকৃতি, সঙ্গে নির্জনতা, ঘুরে আসুন দুটো দিন, ভুলবেন না কোনোদিন
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তি যেসব মন্তব্য করেছেন সে সব থেকে তাদের বিরত করার জন্য আদালতের কাছে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের নির্দেশ দেওয়ার আবেদন জানান বোসের আইনজীবী। তবে সে বিষয়ে কোনো হস্তক্ষেপ করেনি আদালত। সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমন কিছু মন্তব্য করেননি। যা থেকে রাজ্যপালের সম্মানহানি হয়। একটি নির্দিষ্ট পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী মন্তব্য করেছিলেন সে বিষয়ে আদালতের কোন অন্তর্বর্তী আদেশ জারি করার সুযোগ নেই। অভিযোগকারি মহিলার অভিযোগ যদি সত্য হয় তবে জনগণের তা জানার অধিকার আছে। রাজ্যের বিধানসভা উপনির্বাচনে বরানগর কেন্দ্র থেকে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন রাজ্যপালের কারণেই তিনি সঠিক সময় শপথ নিতে পারেননি। আর সেই জন্যই তিনি দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। তাতে কিভাবে সম্মানহানি হয়? এরপর সৌমেন্দ্রনাথ বাবু বলেন রাজভবনে যা ঘটেছে তা ইতিমধ্যেই জনসমক্ষে এসেছে সেটাকে রাজ্যপাল চ্যালেঞ্জ জানাননি। সংবাদ মাধ্যমের খবরের ভিত্তিতেই মামলা হয়েছে তাই মিডিয়াকে, ওই মামলায় যুক্ত না করার বিষয় প্রশ্ন তোলেন সৌমেন্দ্রনাথ বাবু। তাছাড়া রাজ্যপালের আবেদনের ড্রাফটিং এও অনেক ত্রুটি আছে।
মুখ্যমন্ত্রীকে সাংবাদিকরা দুই জয়ী বিধায়ক রিয়াদ হোসেন ও সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় শপথ গ্রহণের জটিলতা নিয়ে প্রশ্ন করলে মুখ্যমন্ত্রী রাজভবন নিয়ে কিছু মন্তব্য করেছিলেন। তার বক্তব্য তিনি জানিয়েছিলেন। এমনকি তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ ও বিষয়টি উল্লেখ করেন। ফলে ওই মামলায় তিনজনকে পার্টি করা হয়। রিয়াদ হোসেন সরকারের আইনজীবী বলেন রাজ্যপালের এই মামলা গ্রহণযোগ্য নয় কারণ তার সাংবিধানিক রক্ষাকবচ আছে ফলে আদালতে এই ধরনের কোন পদক্ষেপ করা যায় না। এখন যদি তাকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রয়োজন হয় তবে রাজ্যপালকে তা করা যাবে না কারণ সে ক্ষেত্রেও রক্ষাকবচ রয়েছে।
রাজ্যপালের আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী বলেন উপাচার্য নিয়োগ থেকে একাধিক বিল পাস নিয়ে রাজ্য রাজ্যপালের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে টানাপোড়েন চলছে। এর মধ্যেই বিভিন্ন অভিযোগ উঠে আসে এবং সেইসব রাজ্যপালের পক্ষে সাধারণ মানুষ মনে করেন। যেসব মহিলা রাজভবনে যেতে ভয় পাচ্ছেন তারা কারা সেটা জানা দরকার। ওই অভিযোগকারীণী মহিলা দেশের সুপ্রিম কোর্টেও অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু তিনি প্রকাশ্যে বলেননি যে তিনি আতঙ্কিত ফলে কিভাবে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠে বা মন্তব্য করতে পারেন তা বিস্ময়ের।