ব্যুরো নিউজ, ১২ এপ্রিল: রাজার হালেই দিব্যি দিঘায় বেঙ্গালুরু বিস্ফোরণ কাণ্ডের ওই দুই মাস্টারমাইন্ড! দিঘার সমুদ্রে বেদম স্নান। কিন্তু, কোন পরিচয়ে হটেলে ঢুকলেন? আর এসবের কিচ্ছুটি টের পেল না প্রশাসন?
বেঙ্গালুরু ক্যাফে বিস্ফোরণকাণ্ডে বাংলায় জঙ্গি যোগ! আর তা নিয়েই চলছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। এ রাজ্যেই লুকিয়ে ছিল দুই অভিযুক্ত। আজ সকালে NIA-র অভিযানে এ রাজ্য থেকেই গ্রেফতার হয় বেঙ্গালুরু ক্যাফে বিস্ফোরণকাণ্ডের ২ মাস্টারমাইন্ড। আর তা নিয়েই জোর রাজনৈতিক চাপানউতোর। মুখ্যমন্ত্রী- সহ রাজ্য সরকারকে বিঁধছেন বিরোধীরা। ‘বাংলা জঙ্গিদের নিরাপদ জায়গা’ বলে সুর চড়াচ্ছে বিরোধী শিবির। পাশাপাশি রাজ্য পুলিশ- প্রশাসনের ভূমিকায় উঠছে প্রশ্ন।
নববর্ষের আগে বাজারে মন্দা! কেন ধুঁকছে বড়বাজারের ব্যবসায়ীরা?
প্রসঙ্গত, বেঙ্গালুরুর রামেশ্বরম ক্যাফেতে বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেফতার ২ মাস্টারমাইন্ড। গত ১ মার্চ বেঙ্গালুরুর রামেশ্বরম ক্যাফেতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই ক্যাফেতে বিস্ফোরকের একটি কালো ব্যাগ রেখে আসে মুখে মাস্ক পরা এক ব্যক্তি। আর তাতে টাইম সেট করে ঘটানো হয় বিস্ফোরণ। জানা যায় যে ওই ব্যাক্তি ব্যাগ রেখে খাবার খেয়ে বেড়িয়ে আসার প্রায় মিনিট দশেক পরেই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ওই বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য আইইডি ব্যবহার করা হয়েছিল বলেও জানা গিয়েছিল।
ভয়াবহ ওই বিস্ফোরণে ১০ জনেরও বেশি আহত হয়েছিলেন। গত ৩ মার্চ এই বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্ত ভার নেয় NIA। এরপরেই অভিযুক্তদের ধরতে বড় পদক্ষেপ নেয় NIA। ওই হামলায় মূল অভিযুক্ত ছিল আব্দুল মাথিন ত্বহা ও মুসাভির হুসেন সাজিব। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের খুঁজে বের করা হয়। অবশেষে তাদের গ্রেফতার করে এনআইএ।
জানা যায়, পরিচয় গোপন করে এই রাজ্যে লুকিয়ে ছিল ওই দুই মাস্টারমাইন্ড, আজ কলকাতা- সহ একাধিক জায়গায় হানা দেয় NIA। সেই অভিযানেই থেকে NIA-র হাতে গ্রেফতার হয় বেঙ্গালুরু ক্যাফে বিস্ফোরণকাণ্ডের ২ অভিযুক্ত আব্দুল মাথিন ত্বহা ও মুসাভির হুসেন সাজিব।
জানা গিয়েছে, প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশা থেকেই বাংলায় ঢোকে অভিযুক্তরা। কিন্তু এখানেই প্রশ্ন উঠছে যে, দিঘায় আসতে হলে পর্যটকদের বৈধ তথ্য- সহ নাম নথিভূক্ত করতে হয় ই-পোর্টালে। তবে কি ভাবে তারা দিঘায় ঢুকল? এমনকি কোনও হোটেলেও বৈধ পরিচয়পত্র দেখালে তবেই তাকে হোটেলে রুম দেওয়া হয় থাকার জন্য। সেক্ষেত্রে অভিযুক্তরা কোন নামে এন্ট্রি নিল দিঘার হোটেলে? তবে আদৌ কি হোটেল কর্তৃপক্ষ তাদের পরিচয়পত্র চেক করেনি? নাকি এ সবের পেছনেও রয়েছে কোনও প্রভাবশালির হাত? তবে কার প্রভাব খাটিয়েই তারা প্রবেশ করেছে এরাজ্যে? আর তার ছত্রছায়াতেই কি রাজার হালে দিঘায় বাস?
ভোটের পর বাড়তে পারে মোবাইল রিচার্জ প্ল্যান! কিন্তু কেন?
এদিকে রেস্তোরাঁয় খাওয়া দাওয়া। সমুদ্রে স্নান সবই চলছে। কিন্তু তবুও পুলিশ- প্রশাসনের নজর এড়িয়ে কী ভাবে তা সম্ভব? সম্প্রতি, দিঘায় মহিলা পর্যটক ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পরেই আটোসাটো করা হয় দিঘার নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সন্ধের পর ওল্ড দিঘা থেকে নিউ দিঘা পর্যন্ত সমুদ্র সৈকতের রাস্তা জুড়ে মহিলা পুলিশ। পাশাপাশি রাতের শহরের স্পর্শকাতর এলাকাগুলিকে বিশেষভাবে নজরদারির ব্যবস্থা। এমনকি পর্যটকদের সুরক্ষার কথা ভেবেই দিঘায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনও করা হয়।
এদিকে এই বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য বলেন, আমাদের কাছে তথ্য আসার দু’ঘণ্টার মধ্যে যৌথ অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় ওই অভিযুক্তদের। যে মুহূর্তে তথ্য এসেছে সঙ্গে-সঙ্গে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে এই একই ‘সাফাই’ গেয়েছেন পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোচবিহারের জনসভা থেকেই বেঙ্গালুরু বিস্ফোরণকাণ্ডে বাংলায় ‘জঙ্গি যোগ’ নিয়ে বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, লোকগুলো কর্নাটকের। আমাদের এখানে দু’ঘণ্টা লুকিয়ে ছিল। দু’ঘণ্টার মধ্যে আমরা ওদের ধরে দিয়েছি।