ব্যুরো নিউজ, ৩০ নভেম্বর : ইয়ারফোন বা হেডফোন ছাড়া অনেকেই দিনের কাজ কল্পনাও করতে পারেন না। কাজের ফাঁকে, পড়াশোনার সময়, বা অবসর কাটানোর মুহূর্তে সঙ্গী হয়ে ওঠে এই ডিভাইস। কিন্তু জানেন কি, অতিরিক্ত ইয়ারফোন ব্যবহারে আপনি নিজের অজান্তেই শরীরের বড় ক্ষতি করছেন?
অল্পবয়সী মহিলাদের স্তন ক্যানসার হওয়ার ৪টি লক্ষণ
জেনে নিন হেডফোন ব্যাবহারের কিছু মারাত্মক প্রভাব
১. কানের যন্ত্রণা ও ক্ষতি
হেডফোনে দীর্ঘক্ষণ উচ্চ শব্দে গান শুনলে কানের মধ্যে চাপ সৃষ্টি হয়। ৯০ ডেসিবেল বা তার বেশি মাত্রার শব্দ কানের স্নায়ুর ওপর প্রভাব ফেলে, যার ফলে কান ব্যথা শুরু হয়। দীর্ঘদিন এই অভ্যাস বজায় রাখলে শ্রবণশক্তি ধীরে ধীরে কমে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
২. মস্তিষ্কের উপর প্রভাব
ইয়ারফোন বা হেডফোন থেকে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গ নির্গত হয়, যা মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এই তরঙ্গ মস্তিষ্কের কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটিয়ে ক্লান্তি, মাথাব্যথা বা দীর্ঘমেয়াদী স্নায়ুরোগ সৃষ্টি করতে পারে।
৩. শ্রবণশক্তি হ্রাস
জোরে শব্দে গান শোনা কানের স্নায়ুকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, বিশেষ করে ব্লুটুথ ইয়ারফোন ব্যবহারে। ব্লুটুথ ইয়ারফোন থেকে নির্গত অতিরিক্ত ইলেকট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গ শ্রবণশক্তি ধীরে ধীরে কমিয়ে দেয়। এই প্রভাব প্রথমে অল্পমাত্রায় হলেও সময়ের সঙ্গে পরিস্থিতি গুরুতর হতে পারে।
৪. ইনফেকশনের ঝুঁকি
অন্যের হেডফোন বা ইয়ারফোন ব্যবহার করলে কানে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। একাধিক মানুষের ব্যবহারে ইয়ারফোনে ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাস জমে যায়। যদি নোংরা ইয়ারফোন ব্যবহার করেন, তাহলে এটি কান ও ত্বকের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।
এখন থেকে সরকারি বাসের টিকিট কাটতে পারবেন ফোন থেকে , কি ভাবে কাটবেন জেনে নিন ?
৫. অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা
ইয়ারফোন ব্যবহারের অভ্যাস যদি নেশায় পরিণত হয়, তাহলে তা মানসিক স্বাস্থ্যেও প্রভাব ফেলতে পারে। একা সময় কাটানোর বদলে অনেকেই ইয়ারফোনে গান শোনার মাধ্যমে নিজের আবেগ চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন, যা মানসিক বিষণ্নতার কারণ হতে পারে।
সতর্কতার উপায়
- ৬০-৬০ নিয়ম মেনে চলুন: একটানা ৬০ মিনিটের বেশি ইয়ারফোন ব্যবহার করবেন না এবং শব্দের মাত্রা ৬০% রাখুন।
- ব্লুটুথ ইয়ারফোনের পরিবর্তে তারযুক্ত ইয়ারফোন ব্যবহার করুন।
- নিয়মিত ইয়ারফোন পরিষ্কার করুন এবং অন্যের ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন।
- কানে ব্যথা বা অন্য কোনও অস্বস্তি হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
- ইয়ারফোন ব্যবহারের পরিবর্তে মাঝে মাঝে স্পিকারে গান শুনুন বা সময় কাটান।
ইয়ারফোন আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে, তবে এর ব্যবহার যদি সঠিকভাবে না হয়, তাহলে তা শরীর ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে। তাই এখনই সতর্ক হোন এবং ইয়ারফোন ব্যবহারের অভ্যাসে পরিবর্তন আনুন।
