ব্যুরো নিউজ, ১০ নভেম্বর: সামান্য পারিশ্রমিকের কাজ থেকে সফল ইউটিউবার| জানেন কে?
একদা গ্রামের সরল সাধাসিধে ও ৩০ টাকা দৈনিক পারিশ্রমিকে মোবাইল রিপেয়ারিংয়ের কাজ করা ছেলেটি আজ উত্তরবঙ্গ সহ পুরো রাজ্যের সফলতম ইউটিউবার। তার সেই ইউটিউবে উপার্জিত টাকার দ্বারা মোট ১০০টি পরিবারের পেট চলে। আজ একটি গ্রামের সাদাসিদে ছেলের গল্প শোনা যাক। ছেলেটির নাম গোলাম রাব্বানী| বাবা পেশায় একজন সব্জি বিক্রেতা। তাই ছোট থেকে সংসারে অভাব লেগেই ছিল। এদিকে বাবার সাথে সাথে সংসারের হাল ধরতে খুব অল্প বয়সে স্থানীয় একটি মোবাইল রিপেয়ারিংয়ের দোকানে মাত্র ৩০ টাকার দিন চুক্তি হিসাবে কাজ করতো সে| বাড়ি তার উত্তরবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারী থানার অন্তর্গত সিওল কানাহার গ্রামে। রাস্তার ধারেই এক চিলতে বাড়িতে ঠাঁই ছিল তাদের। এরপরই গোলাম রাব্বানীর মাথায় আসে ইউটিউবে কিছু করে নিজেকে সামনের দিকে অগ্রসর করার ভাবনা। যেমনি ভাবা তেমনি কাজ। তবে তার এই সফলতার কাজের পথটি কিন্তু মোটেও মসৃণ ছিল না। নানান ঘাত প্রতিঘাত ও চড়াই উতরাই পার করে এসে বর্তমানে সে সমগ্র রাজ্যের একজন সফল ইউটিউবার। ‘মাই ফ্যামিলি’ নামে তার একটি ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে। যেখানে ৩৬৫ দিনে প্রায় শতাধিক কলা কুশলীরা অভিনয় ও কাজ করেন। গোলাম রাব্বানীর কমেডি ভিডিওর ইউটিউব চ্যানেলটিতে সাবস্ক্রাইবার প্রচুর। তার চ্যানেল ৮ থেকে ৮০ সকলেরই রোজকার আনন্দের খোরাক।
জানা গিয়েছে, সফল ইউটিউবার গোলাম রাব্বানীর ঝুলিতে রয়েছে বেশ কয়েকটি সিলভার প্লে বাটন, দুটি গোল্ডেন প্লে বাটন, সহ একটি ডায়মন্ড প্লে বাটন যা উত্তরবঙ্গের কোন ইউটিউবারের কাছে নেই। তার রোজকার কমেডি ভিডিওর শুটিংয়ের জন্য মোট নিজের কেনা পাঁচটি স্পট রয়েছে। সেখানে রোজ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জোরদার শুটিংয়ের কর্মব্যস্ততা থাকে। শুটিংয়ে ব্যবহৃত প্রত্যেকটি জিনিস যেমন প্লপ্স, অন্যান্য মেকআপ, ক্যামেরাম্যান, সবকিছুই ইউটিউবের টাকায়। বর্তমানে গোলাম রব্বানীর নিজের প্রায় ২৫ টি গাড়ি রয়েছে। পাশাপাশি এক একর জমির উপর মাই ফ্যামিলি নাম দিয়ে একটি প্রোডাকশন হাউস তৈরি করেছে। সেই হাউসে শুটিং জিম সহ এডিটিংয়ের অফিস রয়েছে যা প্রায় আনুমানিক ৫ কোটি টাকা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। সত্যিই যা অবাক করার মত তা হোল একসময় নুন আনতে পান্তা ফুরনো পরিবারের একটি ছোট্ট গ্রাম থেকে উঠে আসা ওই ছোট্ট গোলাম রাব্বানী আজ উত্তরবঙ্গ সহ পুরো রাজ্যের সফলতম ইউটিউবার।
সীমানা প্রাচীর সহ চিকিৎসা সামগ্রীর উদ্বোধনে মেয়র
এ বিষয়ে সফল ইউটিউবার গোলাম রাব্বানী জানান, “আমার এই সফলতার পথটি মোটেও মসৃণ ছিল না। বহু ঘাত প্রতিঘাত ও চড়াই উতরাই পার করে এসে আজকে শত কষ্টের চেষ্টায় আমি সফল হয়েছি। আমার এখানে যারা অভিনয় করেন বা অন্যান্য কলাকুশলী যারা রয়েছে তাদের কাউকেই আমি আমার স্টাফ মনে করিনা। এরা প্রত্যেকে আমার পরিবারের সদস্য। তাই আমার চ্যানেলের নাম ‘মাই ফ্যামিলি’। এদের সাথে আমি পরিবারের সদস্যের মতো ব্যবহার করি ও মিশি। আমার এখানে অভিনয় করার প্রচুর কলা কুশলীরা একসময় বাইরে যেমন দিল্লি, মুম্বাই, ও কেরলে কাজ করতো। কিন্তু বর্তমানে তারা ওই কাজকর্ম ছেড়ে দিয়ে এসে প্রায় ৫ থেকে ৬ বছর ধরে আমার এখানেই অভিনয় করছেন, বিভিন্ন কাজ করছেন ও আমার চ্যানেলকে আরো অগ্রসর করছেন, তাদের দক্ষ অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। সেই হাসির ভিডিও দেখেই মানুষ আমাদের পছন্দ করেন। আজ সত্যি বলতে বাধা নেই যে এই ইউটিউবের উপার্জিত টাকাতে আমি সহ এখানকার প্রায় শতাধিক কলাকুশলীদের সংসার চলে। আগামী দিনে আরো অনেক বড় বড় স্বপ্ন রয়েছে আমাদের। আমার মাই ফ্যামিলি চ্যানেল ও আমার এই সদস্য কলাকুশলীদেরকে নিয়ে আমি আরো সামনের দিকে অগ্রসর হতে চাই”। সর্বশেষে বলাই বাহুল্য মানুষের চেষ্টা কখনো বিফলে যায় না। তবে ধৈর্য ধরতে হয়। সেই কথাই সত্যি করল উত্তরবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারী থানার অন্তর্গত ছোট্ট একটি গ্রাম সিওল কানাহারের সফলতম ইউটিউব আর গোলাম রাব্বানী। ইভিএম নিউজ
