ব্যুরো নিউজ, ১২ নভেম্বর: ২৬৫ বছরের প্রেমপত্র উদ্ধার! কী লেখা সেই চিঠিতে? কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে একটি বাক্সে রাখা ফিতেয় বাঁধা তিন গোছা চিঠি দেখে কৌতূহল জাগে অধ্যাপক মরিক্সের। তিনি বাক্স খুলে দেখেন, বহু পুরোনো সব সিলবন্দি চিঠি। সেখানেই নাবিক স্বামীকে লেখা ২৬৫ বছরের হারানো প্রেমপত্রটি হাতে পরে অধ্যাপক মরিক্সের। ১৪ ঘণ্টায় ৮০০বার ভূমিকম্প| অগ্ন্যুৎপাত সতর্কতা
নাবিক স্বামীকে লেখা একান্ত ব্যক্তিগত চিঠিতে প্রিয়তমা পত্নী লিখছেন, ‘সারাটা রাত আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করতে পারি… ইতি তোমার প্রিয়তমা পত্নী। …এখন মধ্যরাত। এ বার বোধহয় আমার ঘুমিয়ে পড়া উচিত। শুভরাত্রি বন্ধু।’
সম্প্রতি এমনই অন্তত একশোটির বেশি না-খোলা চিঠির পাঠোদ্ধার করেছেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক-অধ্যাপক ও ইতিহাসবিদ হন্যু মরিক্স। চিঠিগুলো ১৭৫৭-৫৮ সালের মধ্যে লেখা। অন্তত ২৬৫ বছরের পুরোনো। এক ফরাসি যুদ্ধজাহাজের নাবিকদের উদ্দেশে সে সব চিঠি লিখেছিলেন কারও প্রেমিকা, কারও বাবা-মা, কারও স্ত্রী, ছেলেমেয়ে বা পরিবারের লোকেরা। তবে চিঠিগুলি ঠিকানায় পৌঁছয়নি।
মরিক্স জানিয়েছেন, সেই সময়ে শুরু হয়েছিল ‘সাত বছরের যুদ্ধ’। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তার প্রভাব পড়েছিল। ব্রিটেনের হাতে একের পর আটক হচ্ছিল একাধিক ফরাসি যুদ্ধজাহাজ। বন্দি হয়েছিলেন বিভিন্ন জাহাজের প্রায় কুড়ি হাজার ফরাসি নাবিক। এমনই এক হতভাগ্য যুদ্ধজাহাজ ‘গিলাটে’-র ফার্স্ট লেফটেন্যান্ট ছিলেন লুই শমবারল্যাঁ। তাঁর স্ত্রী মারি তাঁকে ওই চিঠি লিখেছিলেন। ফরাসি ডাক বিভাগের তৎপরতায় বিভিন্ন বন্দর ঘুরে সেই সমস্ত চিঠি ইংল্যান্ডেও পৌঁছেছিল এক সময়। কয়েকটি খুলে সন্দেহজনক কিছু পায়নি ব্রিটিশ সেনা। নিছকই ব্যক্তিগত চিঠি দেখে আর বন্দিদের হাতে সেগুলি তুলে দেওয়ার প্রয়োজন অনুভব করেনি কেউ।
মরিক্সের মতে, সেই সময়ে লেখা খুব সাধারণ, ব্যক্তিগত চিঠি মনে হলেও আজ সেগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ইতিহাসের দলিল। যুদ্ধে চলে যাওয়া ফরাসি সমাজ তখন পুরুষশূন্য। মেয়েরাই চালিয়েছে ঘর, সংসার। প্রয়োজনে অর্থনীতির হাল ধরেছে। রাজনীতির মোড় ঘুরিয়েছে। প্রেম ছাড়াও ছোট ছোট পারিবারিক চিঠিতে ঘুরে ফিরে এসেছে পারিবারিক দ্বন্দ্ব, জটিলতা, সমস্যার কথাও। চিঠিগুলি আপাতত ব্রিটেনের কিউয়ে জাতীয় সংরক্ষণাগারে রাখা রয়েছে। সংবাদ মাধ্যমের সাহায্য নিয়ে লেখা। ইভিএম নিউজ