ইভিএম নিউজ ব্যুরো, ১৮ মেঃ ( Latest News) ভারতীয় নাগরিকদের উপর কি CAA-এর কোন প্রভাব পড়বে?ভারতীয় নাগরিকদের সঙ্গে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা CAA-র কোন সম্পর্কই নেই। ভারতীয় নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে ভারতের সংবিধানে। CAA -র কোন ক্ষমতা নেই ভারতীয় সংবিধানকে পরিবর্তন করার। এই সম্পর্কিত যে তথ্য প্রচারিত হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভুল এবং রাজনৈতিক কারণে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
মুসলিম সম্প্রদায় তো বটেই এমনকি অন্য কোন ভারতীয় নাগরিকদের উপর CAA-র কোনও প্রভাব পড়বে না। ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের পর ধর্মীয় উগ্রতা অথবা নিপীড়নের কারণে যে সমস্ত হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি এবং খ্রিস্টান ভাই-বোনেদের পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান এই তিন দেশ থেকে বিতাড়িত হতে হয়েছে, শুধুমাত্র সেই সব শরণার্থীদের জন্যই CAA প্রযোজ্য। এই তিনটি দেশ বা অন্য কোনও দেশ থেকে আসা মুসলিম-সহ অন্য যেকোন বিদেশি শরণার্থীদের জন্য CAA লাগু হবে না।
পাসপোর্ট বা ভিসার মতো নথি না থাকলেও ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যাবে। CAA-র মাধ্য়মেই শরণার্থীরা এই সুযোগ পাবেন এবং তাঁদের আবেদনের রাস্তাও আর মসৃণ হবে। এক্ষেত্রে ভারতে বসবাসের ন্যূনতম সময় ১+১১ বছরের পরিবর্তে ১+৫ বছর হবে। বিগত কয়েক বছরে এই তিনটি দেশ থেকে অসংখ্য মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ এদেশে নাগরিকত্ব পেয়েছেন। ভবিষ্যতেও যোগ্যতার বিচারে তারা নাগরকিত্ব পাবেন। তবে ধর্মের বিচারে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না।
২০১৪ সালে ইন্দো-বাংলাদেশ ছিটমহল সমস্যার সমাধানের পর কয়েক হাজার জন বাংলাদেশি নাগরিককে ভারতীয় নাগরকিত্ব দেওয়া হয়েছিল। তাদের মধ্যে বেশ কিছু মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষও রয়েছেন। কিছু কিছু রাজনৈতিক দলের নেতা-মন্ত্রীরা মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের যে ভুল বোঝাচ্ছেন যে CAA ভারতবর্ষে লাগু হলে তাদের দেশ থেকে বিতারিত করা হবে তা সর্বৈব মিথ্যা। কোন নাগরিকের বিতাড়নের সঙ্গে CAA-র কোনও সম্পর্ক নেই। ১৯৪৬-এর বিদেশ আইন ও ১৯২০-এর পাসপোর্ট আইন অনুযায়ী এ ব্যপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভারতে বিদেশি নাগরিকদের অনুপ্রবেশ এবং প্রস্থান সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত এই দুটি আইনের ভিত্তিতেই নেওয়া হয়। কোনও ব্যক্তির ধর্মের ভিত্তিতে নয়।
ভারতবর্ষে বসবাসকারী যেকোন বিদেশির জন্যই এ দুটি আইন প্রযোজ্য। স্থানীয় থানা বা প্রশাসনের রিপোর্টের ভিত্তিতে অনুপ্রবেশকারী, বৈধ বা অবৈধদের চিহ্নিত করা হয়। সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে, সঠিক নথি যাচাই করে তবে স্থির করা হয় তাদের ভারতবর্ষে থাকার অধিকার দেওয়া হবে কি না।
১৯৪৬-এর বিদেশি আইন অনুযায়ী বিদেশিদের চিহ্নিত করার পরই অসমে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারীদের তাদের নিজ দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই পদ্ধতিতে কোন ত্রুটি নেই। বিদেশি আইনের ৩ নং ধারা এবং পাসপোর্ট আইনের ৫ নং ধারা অনুযায়ী অবৈধদের চিহ্নিতকরণ, আটক এবং ফেরত পাঠানোর ক্ষমতা সম্পূর্ণ ভাবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের প্রশাসনের ওপর।
পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় কারণে অত্যাচারের শিকার হওয়া হিন্দুদেরও অন্য ধর্মের বিদেশি নাগরিকদের মতোই ১৯৫৫-র নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী আবেদন করতে হবে। CAA থাকলেও তারা বাড়তি কোন সুবিধা পাবেন না।
তিন পড়শি দেশের ছয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর বিদেশি নাগরিকরাই শুধু CAA-এর আবেদন করতে পারবেন। অন্য যেকোন দেশের বিদেশি নাগরিককে ১৯৫৫ নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী ন্যূনতম শর্ত পূরণের মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হবে।
CAA-র কারণে কোন ভারতীয় নাগরিক তাদের নাগরিকত্ব হারাবেন না। মুসলমান ভাই-বোনেরাও নয়। ভারতীয় নাগরিকদের তাদের সংবিধানের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করার ক্ষমতা কারও নেই। তিন পড়শি দেশের নির্দিষ্ট পরিস্থিতির শিকার বিশেষ বিদেশি নাগরিকদের জন্য ভারতীয় নাগরিকত্বের সুযোগ করে দেবে এই আইন।
*NRC-এর সঙ্গে CAA-কে একসঙ্গে গুলিয়ে দিয়ে কিছু রাজনৈতিক দল এবং অরাজনৈতিক গোষ্ঠী যে প্রচার চালাচ্ছে তা যথেষ্ট বিভ্রান্তিকর। আসলে NRC-এর সঙ্গে CAA-এর কোন সম্পর্ক নেই। ২০০৪ সালের ডিসেম্বর থেকেই ১৯৫৫-এর নাগরিকত্ব আইনের সঙ্গে আইনত সংযুক্ত NRC। ভারতীয় নাগরিকদের রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি এবং জাতীয় পরিচয় পত্র সম্পর্কিত বিষয়ের সঙ্গে তা জড়িত। বিগত ১৫-১৬ বছর ধরে এই আইন রয়েছে। CAA আলাদা করে এতে কোনও পরিবর্তন আনেনি। (EVM News)
পাকিস্তানের ঘটনা উস্কে দিলো ভারতবর্ষে CAA- এর প্রয়োজনীয়তাকে , কি সেই ঘটনা ?