তীর্থস্থান

ব্যুরো নিউজ, ২ জানুয়ারি: ‘চন্দ্রনাথ তীর্থস্থান বাঁচান’ সামাজিক মাধ্যমে বাড়ছে প্রচার অভিযান

বাংলাদেশের অন্যতম সতীপীঠ চন্দ্রনাথ মন্দির। আর এই মন্দির বাঁচাতেই সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয়েছে প্রচার অভিযান। সম্প্রতি চন্দ্রনাথ মন্দিরের তীর্থযাত্রীদের ওপর ব্যাপক হামলা হয়। তাদের মারধর করা হয়।

দক্ষিণ দিনাজপুরে পিঠার দাপট! 

চট্টগ্রামে সীতাকুন্ডের কাছে চন্দ্রনাথ পাহাড়ের উপরে অবস্থিত চন্দ্রনাথ মন্দির অন্যতম বিখ্যাত শক্তিপীঠ। এখানকার সর্বোচ্চ পাহাড় চুড়ায় অবস্থিত চন্দ্রনাথ মন্দির। এখানে হিন্দু পবিত্র গ্রন্থ অনুসারে দেবী সতীর ডান হাতের ওপরের অংশ পড়েছিল। এই মন্দিরে প্রতি বছর শিব চতুর্দশী তিথিতে বিশেষ পূজা হয়। এই পূজাকে কেন্দ্র করে সীতাকুণ্ডে বিশাল মেলা হয়। সীতাকুন্ড চন্দ্রনাথ পাহাড় এলাকায় বসবাসকারী হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা প্রতি বছর বাংলার ফাল্গুন মাসে বড় ধরনের একটি মেলার আয়োজন করে। এই মেলায় বাংলাদেশ, ভারত-সহ বিভিন্ন দেশ থেকে অসংখ্য সাধু-সন্ন্যাসী, মানুষ-জন যোগ দেন। মেলা দোল পূর্ণিমা পর্যন্ত চলে। মেলা কমিটির হিসাব, প্রতি বছর পবিত্র এই তীর্থস্থানে ১৫ লক্ষ তীর্থযাত্রী আসেন।

 

এই মন্দির প্রাঙ্গণ ক্রমেই পর্যটনকেন্দ্র হয়ে ওঠায় হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসীদের ভিড় দ্রুত বাড়ছে। নানাভাবে নষ্ট হচ্ছে সেখানকার পরিবেশ। এর জন্য তৈরি হয়েছে সতীপীঠ চন্দ্রনাথ মন্দির বাঁচাও (হোক কলরব) গ্রুপ। ফেসবুকের সেই গ্রুপে নয়ন চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি লিখেছেন, “চন্দ্রনাথ তীর্থস্থান বাঁচান”। এশিয়ার প্রাচীনতম এবং বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এই তীর্থক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে অনিয়ম, দুর্নীতি। মন্দিরগুলোতে হচ্ছে অশ্রদ্ধা। বিরুপাক্ষ মন্দিরের দেওয়ালে স্পষ্ট ভাবে লেখা ‘জুতো নিয়ে উঠবেন না। পবিত্রতা বজায় রাখুন।’ অথচ বেশ কিছু টুরিস্ট মন্দিরে জুতো নিয়ে উঠে ছবি তোলে, মন্দিরের পিছনে জামা কাপড় বদলান, মন্দিরে সিগারেট খায়, খাওয়াদাওয়া করে, প্লাস্টিক-পলিথিন ছিটিয়ে পাহাড় নোংরা করে, পূজা চলাকালীন মন্দিরে গান-বাজনা-সহ নানান অশ্লীল ও অনৈতিক কার্যকলাপ প্রতিদিন ঘটে চলেছে অথচ কর্তৃপক্ষ চুপ। মন্দিরের হাজর হাজার একর জায়গা সম্পূর্ণ বেদখল, অথচ কর্তৃপক্ষ চুপ। স্বয়ং ব্যাসদেবের ঐশ্বরিক শক্তিতে সৃষ্টি ব্যাসকুন্ড যেন এখন পার্কে পরিণত হয়েছে। এই প্রাচীন ও বৃহৎ তীর্থক্ষেত্র ধ্বংস হওয়া থেকে রক্ষা করা সকল সনাতনীর দায়িত্ব এবং কর্তব্য।

 

দায়িত্বরত কর্তৃপক্ষের আশা বাদ দিয়ে সীতাকুন্ডের স্থানীয় কিছু যুবক শেকড়ের টানে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই ধাম পরিচ্ছন্নতা ও রক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে। স্থানীয় ৭থেকে৮ জন যুবক বিরূপাক্ষ এবং চন্দ্রনাথ মন্দির পরিষ্কার ও মানুষদের সচেতন করতে উদ্যোগ নেন তাঁরা। কিন্তু এই স্বল্প লোকবলে চন্দ্রনাথ পাহাড় পরিষ্কার রাখার এই বিশাল কাজ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁদের। কিন্তু প্রচীন ও প্রসিদ্ধ এই তীর্থক্ষেত্র রক্ষায় স্থায়ী সমাধান করা উচিৎ। এই ধাম বাঁচাতে হলে সকল সনাতনীকে এগিয়ে আসতে হবে, দল মত নির্বিশেষে সবাইকে এক হয়ে রুখে দাঁড়াতে হবে। চন্দ্রনাথ তীর্থস্থান, কোনওভাবে পর্যটনকেন্দ্র নয়।”

এই পোস্টে রাজীব দাস তাঁর মন্তব্যে লিখেছেন, “ঐতিহাসিক ও পবিত্র তীর্থস্থান সীতাকুণ্ড সাম্প্রতিক সময়ে সমস্যায় জর্জরিত। সমস্যা হচ্ছে তীর্থস্থানকে টুরিস্ট স্পষ্ট বানানোর চক্রান্তে। এই গ্রুপের সম্মানিত সদস্যদের প্রতি অনুরোধ, আপনারা জানাতে পারেন কিভাবে এই সমস্যা সমাধান করা যায় এবং আপনারা এই সমস্যা সমাধানে যে কোনও পদক্ষেপের সাথে থাকবেন কিনা। ভক্তরাই হলো তীর্থস্থানের প্রাণ। তাই আপনাদের নিয়ে এই তীর্থস্থান পবিত্র ও আশঙ্কামুক্ত করা হবে।”

এই পোস্টে ৫৭টি মন্তব্য এসেছে। শেয়ার ও করা হচ্ছে, এমনকি সতীপীঠ চন্দ্রনাথ মন্দির বাঁচাতে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার অভিযানের মাত্রা বাড়ছে। সংবাদ মাধ্যমের সাহাজ্য নিয়ে লেখা। ইভিএম নিউজ

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর