উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, পাকিস্তানের সন্ত্রাসী মুখ পুরোপুরি বিশ্বের সামনে উন্মোচিত হয়েছে।
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে শুক্রবার উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ পাকিস্তানকে লক্ষ্য করে বলেন, দেশটি ঔদ্ধত্যের সব সীমা অতিক্রম করেছে এবং এখন নিজ অস্তিত্বের সংকটে ভুগছে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী চেহারা সম্পূর্ণরূপে বিশ্বের সামনে উন্মোচিত হয়েছে।

২২ এপ্রিল পাহেলগামে ভারতীয় পর্যটকদের ওপর নৃশংস সন্ত্রাসী হামলার কথা উল্লেখ করে যোগী আদিত্যনাথ বলেন, এই ঘটনাটি প্রতিটি ভারতীয়ের বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে এবং প্রতিশোধের দৃঢ় সংকল্পকে আরও জোরদার করেছে।তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দৃঢ় নেতৃত্বে ভারতের সশস্ত্র বাহিনী এমন উসকানির উপযুক্ত ও শক্ত প্রতিক্রিয়া প্রদান করেছে।ফলে, তাঁর মতে, পাকিস্তান এখন আন্তর্জাতিক মঞ্চে একঘরে হয়ে পড়েছে এবং গভীরভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে।

মহারানা প্রতাপ জয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত একটি স্মরণসভায় অংশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বীরযোদ্ধা মহারানা প্রতাপ, ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ এবং গুরু গোবিন্দ সিং-কে হৃদয় থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদে অব্যাহত পৃষ্ঠপোষকতার কঠোর নিন্দা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী বলেন, ভারতীয় সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে নিহত সন্ত্রাসীদের জানাজায় পাকিস্তানের শীর্ষ সেনা ও রাজনৈতিক নেতাদের উপস্থিতি অত্যন্ত লজ্জাজনক এবং তা প্রমাণ করে যে পাকিস্তান শুধু সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেয় না, বরং তাদের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। তিনি বলেন, “এটি শুধু সন্ত্রাসে পৃষ্ঠপোষকতার প্রমাণ নয়, বরং পাকিস্তানের গভীর ষড়যন্ত্রেরও ইঙ্গিত বহন করে।” তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান এখন খোলাখুলি তার অস্তিত্ব রক্ষার জন্য সংগ্রাম করছে।

নিজের ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ থাকার এবং ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি সামাজিক মাধ্যমে গুজব ও ভ্রান্ত তথ্য ছড়ানো সম্পর্কে সতর্ক করে জনগণকে সজাগ থাকার এবং দেশবিরোধী উপাদানদের মুখোশ উন্মোচনের আহ্বান জানান। “প্রতিটি ভারতীয়কে আমাদের বাহিনীর পাশে দাঁড়াতে হবে এবং দেশবিরোধী শক্তিকে চিহ্নিত করে তাদের রুখে দিতে হবে। আমাদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দিকনির্দেশনায় ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে,”—তিনি জোর দিয়ে বলেন।

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আবারও দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, “ভারত প্রতিটি পরিস্থিতিতে বিজয়ী হবে এবং উত্তর প্রদেশ দেশের রক্ষকদের পাশে অবিচলভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে।”

ইতিহাস থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে তিনি বলেন, মহারানা প্রতাপের মতো যোদ্ধাদের জন্মজয়ন্তী আমাদের প্রতিরোধ ও বীরত্বের ঐতিহ্য স্মরণ করিয়ে দেয়। ঐতিহাসিক হালদিঘাটির যুদ্ধ স্মরণ করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, কিভাবে বনবাসী ও গিরিবাসী যোদ্ধাদের সহযোগিতায় মহারানা প্রতাপ, মোঘল সম্রাট আকবরের বিশাল সেনাবাহিনীকে পিছু হটতে বাধ্য করেছিলেন—যা প্রমাণ করে যে সাহসিকতাই শেষ পর্যন্ত বিজয় আনে।

উক্ত অনুষ্ঠানে শহরের একটি প্রধান মোড় সৌন্দর্যায়নের জন্য বিধান পরিষদের সদস্য রাকেশ সিং এবং মনবেন্দ্র সিংকে অভিনন্দন জানানো হয়। এই মোড়টির নতুন নামকরণ করা হয়েছে “মহারানা প্রতাপ সিং চৌক”।

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ স্মরণ করিয়ে দেন, ১৯৯৮ সালে তিনিই প্রথমবার এই স্থানে মহারানা প্রতাপের মূর্তি স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে লখনউ, গোরখপুর ও প্রয়াগরাজসহ বিভিন্ন শহরেও একইরকম মূর্তি স্থাপন করা হয়, যেখানে তৎকালীন নেতৃবৃন্দ, বিশেষ করে কল্যাণ সিং এবং রাজনাথ সিং-এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর