ব্যুরো নিউজ, ২১ ফেব্রুয়ারি: ১৮৮৮ সালে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির ত্রিচিতে (বর্তমান তিরুচিরাপল্লী) তামিল ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন। মাত্র ১১ বছর বয়সে সেন্ট অ্যালোসিয়াসের অ্যাংলো ইন্ডিয়ান হাই স্কুলে মাধ্যমিক ও ১৩ বছর বয়সে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি মাদ্রাজের প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন। শুধু তাই নয়, ক্লাসে প্রথম স্থান অধিকার করেন রামন। এমএ ডিগ্রির জন্য অধ্যয়নরত অবস্থাতেই আলোর বিচ্ছুরণের উপর তিনি গবেষণা শুরু করে প্রথম গবেষণা পত্রটি ১৯০৬ সালে ফিলোসফিক্যাল ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়। পরের বছর তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
বিজ্ঞান দিবসের মূল লক্ষ্যই জনকল্যান
তবে অসুস্থতার কারণে তিনি পরবর্তী শিক্ষার জন্য বিদেশে যেতে পারেননি। ১৯০৭ সালে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর তিনি মাত্র ১৯ বছর বয়সে কলকাতার ইন্ডিয়ান ফিনান্স সার্ভিসে সহকারী হিসাবরক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। সেখানে তিনি ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স (IACS), ভারতের প্রথম গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হন। IACS-এ কাজের শেষে গবেষণা শুরু করেন।
১৯১৭ সালে কলকাতা বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধীনে রাজাবাজার বিজ্ঞান কলেজে তিনি অধ্যাপক নিযুক্ত হন। ১৯২১ সাল নাগাদ, সিভি রামন ভারত এবং পাশ্চাত্য উভয় ক্ষেত্রেই একজন শীর্ষস্থানীয় বৈজ্ঞানিক হিসেবে সুনাম অর্জন করেছিলেন। সেই বছর, প্রথম ইউরোপ ভ্রমণকালে ভূমধ্যসাগরের নীল রং দেখে তিনি অনুপ্রানিত হন। সমুদ্রের গভীর নীল রঙে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ হয়েছিলেন তিনি। সাগরের জলের রং কেন নীল? সেই প্রশ্নই তার মনে ঘুরতে থাকে। তবে, সেই সময়কার প্রচলিত উত্তর ছিল ‘সমুদ্রের রঙ ছিল আকাশের রঙের প্রতিফলন’ কিন্তু এই উত্তরে তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন না।
শীঘ্রই তিনি জানতে পারেন যে সমুদ্রের রঙ জলের অণু দ্বারা সূর্যালোকের বিচ্ছুরণের ফলাফল। আলো-বিচ্ছুরণের ঘটনা দ্বারা মুগ্ধ হয়ে, রামন এবং তাঁর কলকাতার সহযোগীরা বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করে। এরপর ল্যাবরেটরিতে বসে তিনি মার্কারি ল্যাম্প ও বরফের টুকরো দিয়ে পরীক্ষা শুরু করেন। এই পরীক্ষার ফল তিনি ১৯২৮ নাগাদ ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ ফিজিক্স-এ প্রকাশ করেন। আর তার নাম অনুসারে নাম হয় ‘রামন এফেক্ট’।
১৯২৬ সালে ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ ফিজিক্স প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। ১৯৩৩ সালে রামন প্রতিষ্ঠা করেন ইন্ডিয়ান একাডেমি অফ সায়েন্সেস। ১৯৪৮ সালে রামন গবেষণা ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। সেখানেই জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কাজ করে গিয়েছিলেন চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন। ইভিএম নিউজ