West Bengal Day 20 June Suvendu Adhikari

ব্যুরো নিউজ ২০ জুন : আজ রাজ্য বিধানসভার পরিস্থিতি ছিল রীতিমতো উত্তাল। বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বক্তব্য রাখতে উঠতেই শাসকদলের বিধায়কদের তুমুল চিৎকার-চেঁচামেচিতে বিধানসভা কক্ষ হুলস্থূল হয়ে ওঠে। শাসকদলের অভিযোগ, বিজেপি বিধায়করা বক্তব্য রেখে প্রতিদিন অধিবেশন কক্ষ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন এবং মন্ত্রী বা অন্য শাসকদলের বিধায়কদের কথা শুনছেন না। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই রাজ্যের বাইরে ভিন্ন আঙ্গিকে পালিত হচ্ছে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’। এই দিবস পালন এবং এর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্ক বিদ্যমান।


বিধানসভায় হট্টগোল ও পশ্চিমবঙ্গ দিবসের উদযাপন

শুক্রবার রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন শুরু হতেই তুমুল হট্টগোল শুরু হয়। বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ যখন বক্তব্য রাখতে ওঠেন, তখন তৃণমূলের বিধায়করা প্রবল প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। শাসকদলের বিধায়কদের অভিযোগ, বিজেপি বিধায়করা প্রতিদিনই বক্তব্য রেখে অধিবেশন কক্ষ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন এবং মন্ত্রী বা শাসকদলের অন্য বিধায়কদের কথা শুনছেন না, যা চলতে পারে না। এই উত্তপ্ত আবহাওয়ার মধ্যেই বিজেপির বিধায়করা এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালন করেন।

আলিপুরদুয়ারের জনসভায় মোদীর বার্তা : ‘নির্মম সরকার’কে উপড়ে ফেলে ‘অপারেশন পশ্চিমবঙ্গ’র ডাক!


শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে মিছিল ও শাসকদলের সমালোচনা

বিধানসভার এই উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যেই বিজেপি বিধায়করা, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে, বিধানসভা থেকে রেড রোড পর্যন্ত এক সুবিশাল মিছিল করেন। তাঁদের হাতে ছিল পশ্চিমবঙ্গের মানচিত্র এবং ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ছবি সহ একটি বিশাল ব্যানার। ব্যান্ড পার্টি ‘সারে জাঁহাসে আচ্ছা’ বাজিয়ে এবং ‘শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী লহো প্রণাম’ স্লোগানের মধ্যে দিয়ে তাঁরা এগিয়ে চলেন।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে কটাক্ষ করে বলেন যে, তৃণমূল সরকার বাঙালিদের ঐতিহ্য ভুলিয়ে দেওয়ার প্রবল চেষ্টা করছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বাঙালি ভারতবর্ষের অবিচ্ছেদ্য অংশ, কিন্তু তোষণবাদী তৃণমূল সরকার বঙ্গ বিভাজনের ফলে যে বাঙালিরা ভারতবর্ষে সম্মিলিত হতে পেরেছেন, সেই দিনটিকে কোনো গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁর অভিযোগ, এভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুসলিম লীগের পূর্ব পাকিস্তান গঠনের ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিচ্ছেন এবং ভারতবর্ষে পশ্চিমবঙ্গের জন্মকে ভুলিয়ে দিতে চাইছেন।

মোদী, শুভেন্দু এবং মমতার তরজা : ‘নির্মম সরকার’ এবং ‘সিঁদুর’ রাজনীতিতে উত্তাল বাংলা


‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালনের ঐতিহাসিক বিতর্ক

‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালনের জন্য ২০ জুন তারিখটি বেছে নেওয়ার কারণ হল, ১৯৪৭ সালের এই দিনটিতেই বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইনসভায় ভোটাভুটির মাধ্যমে বাংলা ভাগের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। এই সিদ্ধান্ত অনুসারে, অবিভক্ত বাংলা বিভক্ত হয়ে পূর্ব অংশ পূর্ব পাকিস্তান (পরবর্তীতে বাংলাদেশ) এবং পশ্চিম অংশ পশ্চিমবঙ্গ নামে স্বাধীন ভারতের অংশ হয়।
এই দিবস পালন নিয়ে রাজ্য সরকার এবং শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের তীব্র আপত্তি রয়েছে। তাঁদের মতে, ২০ জুন তারিখটি বাংলা ভাগের বেদনাদায়ক ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত, তাই এই দিনে কোনো উৎসব পালন করা উচিত নয়। এর পরিবর্তে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূল নেতৃত্ব ১লা বৈশাখকে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ হিসেবে পালন করার প্রস্তাব করেছেন এবং এই মর্মে বিধানসভায় প্রস্তাবও পাশ করানো হয়েছে। এই প্রস্তাব বাঙালি নববর্ষ কে রাজ্য গঠনের দিবসের এর সাথে মিলিয়ে দেওয়ার প্রয়াস যা একেবারেই গ্রহন যোগ্য নয় । বাঙালি নব বর্ষ প্রাচীন এবং এর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের জন্ম গুলিয়ে দেওয়া ভিত্তিহীন !

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর