ব্যুরো নিউজ ৩০ জুন: রাজ্য সরকারি কর্মীদের বহু প্রতীক্ষিত বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (DA Arrears) নিয়ে ফের অনিশ্চয়তার কালো ছায়া। সুপ্রিম কোর্ট নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেও বকেয়া পরিশোধ না করায় ক্ষোভে ফুঁসছে কর্মী মহল। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের তরফে শীর্ষ আদালতে ‘মডিফিকেশন আবেদন’ দাখিল করা হয়েছে অতিরিক্ত ছ’মাস সময় চেয়ে। মুখ খুলেছেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও। তবে সরকারি কর্মীরা এই পদক্ষেপকে আদালত অবমাননার সামিল বলেই দেখছেন।
রাজ্যের মডিফিকেশন দাবি
চন্দ্রিমা বলেন, “আমরা আদালতের অবমাননা করিনি বলেই সময় চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। আদালতই বিচার করবে আদৌ কোনও অবমাননা হয়েছে কি না।” তবে এর পালটা যুক্তি তুলে ধরেছেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ এবং কর্মীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম। তাঁদের দাবি, রাজ্য সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে নির্দেশ মানছে না, এবং সেই কারণেই আদালত অবমাননার নোটিস পাঠানো হয়েছে অর্থসচিব ও মুখ্যসচিবকে।
রাজার পোশাকে ইতিহাসের প্রতিধ্বনি
চন্দ্রিমা বলেন, “আমরা আদালতে
সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিল—রাজ্য সরকারকে ২৫% বকেয়া ডিএ পরিশোধ করতেই হবে। কিন্তু সেই নির্দেশ মানার বদলে রাজ্য সরকার ফের সময় চাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন সরকারি কর্মীরা। অনেকের মতে, বারবার সময় চাওয়া আসলে গড়িমসির চূড়ান্ত উদাহরণ এবং সরকারি কর্মীদের ন্যায্য পাওনার প্রতি ‘অমর্যাদা’।
আইনজীবী ফিরদৌস শামিম স্পষ্ট বলেছেন, “আবেদন করলেই তা গ্রহণযোগ্য হবে না। সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর নোটিস পাঠানো হয়েছে। ডিএ দিতেই হবে।” ফলে পরবর্তী শুনানিতে যদি আদালত রাজ্যের আবেদনে সায় না দেয়, তবে অবমাননার মামলায় চাপে পড়তে পারেন রাজ্যের শীর্ষ প্রশাসনিক কর্তারা।
এন এল বি নগরে মায়ের হত্যা কিশোরীর হাতে
অন্যদিকে, বকেয়া ডিএ-কে ঘিরে রাজনীতিও তীব্রতর হচ্ছে। বিরোধীদের দাবি, রাজ্য সরকারের এই অবস্থান প্রমাণ করে তারা সরকারি কর্মীদের প্রতি দায়বদ্ধ নয়। ডিএ শুধু বেতন সংক্রান্ত নয়, এটি কর্মীদের প্রাপ্য অধিকার—এই বার্তা দিতে গিয়ে রাজ্যজুড়ে কর্মীরা আন্দোলনের পথে নেমেছেন।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে দাবি, রাজ্যের আর্থিক সঙ্কট ও রাজস্ব ঘাটতির কারণেই এই সমস্যা। কিন্তু এই যুক্তি সরকারি কর্মীদের মন জুগোতে পারছে না। বরং প্রশ্ন উঠছে, অন্যান্য খাতে রাজ্য সরকারের খরচ বহাল থাকলেও কর্মীদের প্রাপ্য পরিশোধে বারবার গড়িমসি কেন?
এখন নজর সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে। আদালত কি রাজ্যের মডিফিকেশন আবেদন মঞ্জুর করবে, না কি অবমাননার মামলায় কড়া অবস্থান নেবে—তা জানার জন্য অপেক্ষা করছে গোটা রাজ্য।