ব্যুরো নিউজ,২৪ ফেব্রুয়ারি:বিরাট চার মেরে পাকিস্তানকে হারানোর পর বুকে বার বার হাত ঠেকিয়ে বিশেষ একটি ভঙ্গি করলেন, তখন তার চোখে যেন একটাই বার্তা ছিল—”ম্যায় হুঁ না!” ২০১২ এশিয়া কাপে ১৮৩, ২০১৫ বিশ্বকাপে ১০৭, ২০২৩ এশিয়া কাপে ১২২, ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অপরাজিত ১০০, এবং তাছাড়া অসংখ্য টি-টোয়েন্টি ইনিংসের মধ্যে অনেকগুলোই স্মরণীয় হয়ে থাকবে।এই সব ইনিংসের পর এখন নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, তিনি এখনও ক্রিকেট দুনিয়ার অন্যতম সেরা। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত খেলতে নামলে বিরাট কোহলির ব্যাটে রান দেখা না যাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। এক সময় যখন তাঁর ফর্ম নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল, সেই সময়ে কোহলি আবার প্রমাণ করে দিয়েছেন যে তিনি ফুরিয়ে যাননি।
পাকিস্তানের ক্রিকেটে ব্যর্থতার ছায়া: ভারতকে হারিয়ে কোহলি প্রমাণ করলেন নিজের অবস্থান
৫১তম শতরান
বিশেষত পাকিস্তানকে সামনে পেলেই তার ব্যাট যেন আরও বেশি উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অপরাজিত শতরান করে ভারতকে জেতানোর পর, কোহলির খেলা ছিল সত্যিই অসাধারণ। শুরুর দিকে তাঁর ব্যাটে ধৈর্য ও পরিপক্কতার ছাপ ছিল। পাকিস্তানের বোলারদের কোনো সুযোগ না দিয়ে তিনি ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কর্তৃত্ব দেখিয়েছেন। কোহলি একদিনের ক্রিকেটে তার ৫১তম শতরান পূর্ণ করেছেন, যা তার এক বিশাল অর্জন। তার মোট শতরানের সংখ্যা এখন ৮২টি, এবং ১৪ হাজার রানে পৌঁছানোর বিশ্বরেকর্ডও তার দখলে।ম্যাচের আগের দিনও কোহলি অনুশীলনে দু’ঘণ্টা আগে এসে উপস্থিত হন, যা তার প্রতিশ্রুতি এবং দায়িত্ববোধের পরিচয় দেয়। এমনকি বয়স ৩৬ হওয়া সত্ত্বেও কোহলি নিজের খেলার প্রতি নিবেদন কমায়নি।
রোহিত শর্মা ম্যাচ শেষে বলেছিলেন, “কোহলির দেশপ্রেম আর তার খেলার প্রতি ভালোবাসা সবাই জানে। এত বছর ধরে কোহলিকে দেখে আমি কখনো অবাক হইনি।”দুবাইয়ের উইকেটে কোহলি খেলতে নামার সময় জানতেন, বল ধীরে আসবে, এবং সেখানে দ্রুতগতির শট খেলার কোনো জায়গা ছিল না। তাই, তিনি কোনো ঝুঁকি না নিয়ে, পরিপক্কভাবে খেলতে থাকেন। বিশেষত স্পিনারদের বিরুদ্ধে তিনি কোনো ঝুঁকি নেননি এবং ম্যাচের শেষ দিকে শ্রেয়স আয়ারের সঙ্গে মিলে কয়েকটি বাউন্ডারি মেরে ম্যাচ শেষ করেন।
বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের হার, অস্ট্রেলিয়ার কাছে টেস্ট সিরিজ হার—এই সব ঘটনা কোহলির ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিল, এবং অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, ২০২৭ বিশ্বকাপের পর এই দুই ক্রিকেটারের (কোহলি ও রোহিত) ক্যারিয়ার শেষ হতে পারে। কিন্তু কোহলি সে সবের কোনো পাত্তা না দিয়ে নিজের কাজে মনযোগী থাকেন। তার মতে, “আমি নিজের খেলার ধরন জানি, তাই বাইরের কোনো আওয়াজ শুনি না। আমি সবসময় দলের জন্য ১০০% দিতে চাই।”কোহলির এই মনোভাবই তাকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এক অদম্য শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এজন্যই তিনি বিরাট কোহলি।