ব্যুরো নিউজ ৬ আগস্ট ২০২৫ : রুশ তেল কেনা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে ভারত কড়া জবাব দিয়েছে। ভারত এই হুমকিকে ‘অযৌক্তিক এবং অবাস্তব’ বলে অভিহিত করেছে এবং বলেছে যে আমেরিকা নিজেও রাশিয়া থেকে ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লোরাইড, প্যালাডিয়াম, সার এবং রাসায়নিকের মতো পণ্য আমদানি করে। অন্যদিকে, ট্রাম্প দাবি করেছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া থেকে রাসায়নিক বা সার আমদানি করে সে বিষয়ে তার কোনো ধারণা নেই।
ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের হুমকি
সোমবার ট্রাম্প তার ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে অভিযোগ করেন যে ভারত রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণে তেল কিনে তা চড়া দামে খোলা বাজারে বিক্রি করে মোটা লাভ করছে। তিনি বলেন, “ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধযন্ত্রের কারণে কত মানুষ মারা যাচ্ছে তা নিয়ে ভারতের কোনো চিন্তা নেই। এর জন্য আমি ভারতের উপর শুল্কের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াব।” এর আগে, তিনি ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা ঘোষণা করেছিলেন।
ভারতের কড়া জবাব
ভারত ট্রাম্পের এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিস্তারিত বিবৃতিতে জানায় যে, ইউক্রেন সংঘাতের পর যখন পশ্চিমা দেশগুলো তাদের ঐতিহ্যবাহী সরবরাহ ইউরোপের দিকে ঘুরিয়ে দেয়, তখনই ভারত তার বাজার ও জ্বালানি নিরাপত্তার প্রয়োজনে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি শুরু করে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “আমেরিকা সেই সময়ে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারের স্থিতিশীলতার জন্য ভারতকে এই ধরনের আমদানি চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করেছিল।” ভারত জানায়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ভারতের চেয়ে অনেক বেশি। ভারত নিজস্ব জাতীয় স্বার্থ এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তা রক্ষার জন্য সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলেও সাফ জানিয়েছে।
মার্কিন রাষ্ট্রপতির অজ্ঞতা এবং সমালোচকদের মন্তব্য
হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে যখন ট্রাম্পকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাশিয়া থেকে রাসায়নিক এবং সার আমদানির বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়, তখন তিনি বলেন, “আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। আমাদের দেখতে হবে।” অন্যদিকে, প্রাক্তন মার্কিন মন্ত্রিসভার সদস্য এবং রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন প্রার্থী নিকি হ্যালি ট্রাম্পের এই দ্বৈত নীতির সমালোচনা করেছেন। তিনি ‘X’-এ একটি পোস্টে লেখেন, “ভারতের রাশিয়া থেকে তেল কেনা উচিত নয়। কিন্তু চীন, যারা আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী এবং রাশিয়া ও ইরানের তেলের প্রধান ক্রেতা, তাদের ৯০ দিনের জন্য শুল্ক থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। চীনকে ছাড় দিয়ে ভারতের মতো একটি শক্তিশালী মিত্রের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করবেন না।”
এই বিষয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেন যে, ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের পেছনে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ বন্ধ করার একটি কৌশল রয়েছে।