ব্যুরো নিউজ, ১২ ডিসেম্বর: UGC-র হলফনামায় চাঞ্চল্যকর তথ্য! বাম আমলে ‘বেআইনি’ নিয়োগ হয়েছিল মানিক ভট্টাচার্যের
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হন মানিক ভট্টাচার্য। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি হিসাবে তাঁর ভূমিকা নিয়ে ওঠে প্রশ্ন। এরপর তার ঠিকানা হয় শ্রীঘর। ইতিমধ্যেই তিনি বিভিন্ন আর্জি জানিয়েছেন হেফাজতে থাকাকালীন। এমনকি তিনি ED-র বিরুদ্ধে বিচারপতির কাছে অভিযোগ জানান যে, তার আংটি, মাদুলি বারবার চাওয়ার পরেও তা ফেরৎ দিচ্ছে না ED। তবে এখানেই শেষ নয়।
ভাইপোর রিসেপশনে চাঁদের হাঁট! ছিলেন কোন কোন তারকা?
প্রথমে পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি হিসাবে মানিক ভট্টাচার্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও এখন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল ইউজিসি। ইউজিসি জানাল, মানিক ভট্টাচার্যের নিয়োগ ছিল অবৈধ। তৃণমূল নয়, বাম আমলে ‘বেআইনি ভাবে’ কলেজের প্রিন্সিপাল হন মানিক ভট্টাচার্য, হাইকোর্টে হলফনামায় এমনটাই জানাল UGC.
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে গত বছর ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। তারপর থেকেই একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য, অভিযোগ উঠে আসে তার বিরুদ্ধে। এবার ফের একবার বেআইনি কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠল পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ বেআইনি ভাবে কলেজের অধ্যক্ষ বা প্রিন্সিপাল হয়েছিলেন নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত মানিক ভট্টাচার্য। তা-ও আবার ১৯৯৮ সালে। সেই সময় ক্ষমতায় ছিল বামফ্রন্ট সরকার।
প্রসঙ্গত, মানিক দীর্ঘ দিন কলকাতার যোগেশচন্দ্র চৌধুরী ল’ কলেজের অধ্যক্ষ পদে ছিলেন। আগেই মানিকের বিরুদ্ধে নিয়ম না মেনে বেতন নেওয়ার অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় মানিকেরই কিছু ছাত্র। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে ল’ কলেজের ছাত্র একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। ল’ কলেজের অধ্যক্ষদের বেআইনি নিয়োগ-সহ নানা অভিযোগে দায়ের করা হয় সেই মামলা। অধ্যক্ষদের নিয়োগ ও যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
এই বিষয়ে জানতে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-কে হলফনামা জমা করার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্টে। হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়য়ের নির্দেশ মেনে সোমবার সেই হলফনামা জমা দেয় ইউজিসি। এরপরই সামনে উঠে আসে আরও অনিয়মের অভিযোগ।
ওই হলফনামায় ইউজিসি জানায়, নিয়ম মেনে অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত হননি মানিক। আদালতে ইউজিসির জানিয়েছে, কোনও কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যুক্ত হতে গেলে যে সকল যোগ্যতা থাকতে হয় তার কোনোটাই ছিল না মানিকের।
ইউজিসির হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে, অধ্যক্ষ হওয়ার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা কী থাকা দরকার। আর যে যোগ্যতা থাকা দরকার তা মানিক ভট্টাচার্যের ছিল না।
ইউজিসির দাবি, অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত হতে কোনও ব্যক্তির স্নাতকোত্তর স্তরে কমপক্ষে ৫৫ শতাংশ নম্বর থাকতে হয়ে। পিএইচডি কিংবা সমগোত্রীয় কোনও যোগ্যতা থাকতে হয়। পাশাপাশি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা কোনও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১৫ বছর পড়ানোর অভিজ্ঞতা থাকতে হয়।
এদিন আদালতে হলফনামা দিয়ে ইউজিসি জানিয়েছে এই সমস্ত যোগ্যতার কোনোটা না থাকা সত্ত্বেও মানিক অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন। প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালে যখন মানিক কলেজের অধ্যক্ষ বা প্রিন্সিপাল হয়েছিলেন তখন বাংলায় ক্ষমতায় ছিল বামফ্রন্ট সরকার। এই তথ্য সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। আর এই প্রশ্ন সামনে আসে, তবে কি দুর্নীতির ভিত সেই বাম আমল থেকেই? ইভিএম নিউজ