ব্যুরো নিউজ ১১ জুন: বছর ঘুরলেই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই ফের প্রকাশ্যে এল তৃণমূল গোষ্ঠীকোন্দল—এবার মঞ্চ স্মরণসভার, আর প্রেক্ষাপট নদিয়ার তেহট্ট। প্রয়াত তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার স্মরণসভা ঘিরে মঙ্গলবার যে ধরণের চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হল, তাতে দলীয় শৃঙ্খলা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছে। বচসা থেকে হাতাহাতি, আর শেষে প্রকাশ্য রাস্তায় ইটবৃষ্টি—পুরো ঘটনাই শাসকদলের অস্বস্তিকে বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
স্মরণসভা না, যুদ্ধক্ষেত্র!
ঘটনাটি ঘটে তেহট্টে, যেখানে গত ১৫ মে প্রয়াত হওয়া বিধায়ক তাপস সাহার স্মরণসভা আয়োজন করা হয়। প্রথমে সব কিছু শান্তভাবেই চলছিল, কিন্তু হঠাৎ করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মতবিরোধ বাধে। সেই বিবাদ মুহূর্তেই গড়ায় বচসা ও গালিগালাজে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, উপস্থিত কর্মীরা একে অপরের দিকে ইট ছুড়তে শুরু করে। স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, আর রাজনৈতিক মহলে শুরু হয় গুঞ্জন “এ কেমন দলীয় ঐক্য?”
কলেজে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি: কবে থেকে শুরু আবেদন, কবে খুলছে পোর্টাল?
এই সংঘর্ষে অন্তত ১১ জন তৃণমূল কর্মী আহত হয়েছেন বলে খবর। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। অন্যদের চিকিৎসা চলছে তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দু’পক্ষই দীর্ঘদিন ধরেই দলীয় প্রভাব বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে ছিল, যা স্মরণসভাকে কেন্দ্র করে হঠাৎ বিস্ফোরিত হয়।
প্রসঙ্গত, বিধায়ক তাপস সাহা ছিলেন স্থানীয় রাজনীতিতে যথেষ্ট প্রভাবশালী নেতা। তাঁর মৃত্যুর পরেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও উগ্র আকার নিয়েছে বলে স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব এখনো এই ঘটনায় মুখ খুলতে চায়নি, কিন্তু দলীয় কর্মীদের এই প্রকাশ্য সংঘর্ষ ভোটের মুখে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারে বলেই রাজনৈতিক মহলের আশঙ্কা।
পুলিশের কনস্টেবল গ্রেফতার, কী ছিল তাঁর ভূমিকা?
এই ধরণের ঘটনা বিরোধী শিবিরকে অক্সিজেন জোগাবে, কারণ এটি শাসকদলের অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলার প্রমাণ হিসেবেই ধরা পড়ছে। শুধু রাজনৈতিক প্রভাবই নয়, জনমানসে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে এই ধরনের অশান্তি। ভোটের আগেই যে তৃণমূলের মধ্যে অভ্যন্তরীণ সংঘাত বেড়েছে—এটি তারই বড় ইঙ্গিত।