স্বপন দাস (চ্যানেল হেড), ১২ ফেব্রুয়ারি: এবারের বাজেটে মুখ্যমন্ত্রী দু’কোটি বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের কথা বলেছেন। ২০২১ সালে ঠিক এরকম ভোটের আগেও তিনি বেকার যুবকদের ডবল ডবল চাকরির গল্প শুনিয়েছিলেন। ২০২১ থেকে ২৪, গোটা তিনটি বছর ধরে বাংলার শিক্ষিত বেকার যুবকরা ফুটপাতে বসে রয়েছে তাদের ন্যায্য চাকরির দাবিতে। আর এদিকে অবসরপ্রাপ্ত আমলাদের অবসরের পরেও সরকারি কোষাগার থেকে মোটা টাকার বিনিময়ে তাদের আবার চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে।
বাংলা থেকে বিজেপির রাজ্যসভার প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্য
যে সরকার তার দপ্তরগুলিতে ছয় লক্ষ স্থায়ী পদের অবলুপ্তি ঘটিয়েছে। নূন্যতম টাকার বিনিময়ে অস্থায়ী কর্মচারী নিয়োগ করছে সরকারি দপ্তর গুলোতে। যে সরকারের আমলে ৫০ লক্ষ্য পরিযায়ী শ্রমিককে রাজ্য ছেড়ে, এমনকি পরিবার পরিজন ছেড়ে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশের বাইরে গিয়ে কাজ করতে হচ্ছে, সে রাজ্যে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান কাঁঠালের আমসত্ত্ব ছাড়া আর কিছুই হতে পারেনা। নতুন কোনও শিল্প নেই, না আছে সরকারের কোন শিল্পনীতি কিংবা জমি নীতি। BGBS-এর নামে কোটি কোটি টাকা খরচা করে লোক ঠকানো শিল্প সম্মেলন। সৌরভ গাঙ্গুলীর মত প্লেয়ারকে শিল্পপতি সাজিয়ে বাংলার মানুষের সঙ্গে প্রবঞ্চনা যে সরকার করতে পারে, তাঁকে বিশ্বাস করা খুবই কঠিন বিষয়, আর এখন তো করাই যায় না।
একসময়ের বুদ্ধিজীবী, এখন তারা ভাতাজীবি, আগে নিয়ম করেই সমস্ত বিষয়ের উপর তারা তাদের মতামত ব্যক্ত করতেন। কিন্তু এখন তারা ভাতা হারানোর ভয়ে সর্বদা শীতঘুমে থাকেন এই সমস্ত বিষয় নিয়ে।
এদিকে এই বাজেট অধিবেশনকে সামনে রেখে বারো দফা দাবি পেশ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আমার মনে হয়, এই বারো দফা দাবি খুব প্রাসঙ্গিক।
১) মাননীয়া অর্থমন্ত্রী তার জবাবী ভাষনে রাজ্যসরকারের অধীনস্থ সকল কর্মচারী সহ শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মচারী এবং সমস্ত পেনশন প্রাপকদের জন্য কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ্যভাতা এবং ২০১৫ সাল থেকে Arear এর কথা ঘোষনা।
২) অসম সরকারের মতো মাতৃশক্তিকে ১০০০ টাকার পরিবর্তে ২৫০০ টাকা দেওয়ার ঘোষণা।
৩) রাজস্থান সরকারের মতো ৪৫০ টাকায় LPG গ্যাস সিলিন্ডার (Domestic) দেওয়ার ঘোষণা করুক পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
৪) উত্তরপ্রদেশ সরকারের মতো বছরে একটি করে গ্যাস সিলিন্ডার বিনামূল্যে দেওয়া হোক।
৫) পেট্রোল এবং ডিজেলে রাজ্য সরকার যে সেস নিচ্ছে, এটা রাজ্য সরকার মকুব করুক অথবা উত্তরপ্রদেশ, অসম ইত্যাদি অন্যান্য রাজ্যের সরকারের মতো অর্ধেক সেস ছাড় ঘোষণা করুক।
৬) ২০১২ সালের পর থেকে রাজ্য সরকারের স্থায়ী নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ। ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সরকারি ৬ লক্ষ স্থায়ীপদের অবলুপ্তি ঘটানো হয়েছে। ২০১৯ সালে নিয়োগের শেষ বিজ্ঞপ্তি এবং SSC এর শেষ বিজ্ঞপ্তি ২০১৭ সালে। অবিলম্বে SC, ST, OBC এবং EWS সংরক্ষণ দিয়ে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে সমস্ত শূন্যপদ পূরণ।
৭) প্রাইমারী টেট পরীক্ষার জন্য ধার্য্য পরীক্ষার খরচ ১৫০টাকার বদলে ৫০০টাকা করা হয়েছে। বেকার যুবক যুবতীদের স্বার্থে বিহারের মতো সমস্ত কর্মপ্রার্থীদের পরীক্ষার খরচ সম্পূর্ণ মকুব করা হোক।
৮) সমকাজে সমবেতন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ কার্যকর হওয়া উচিত। সিভিক ভলান্টিয়ার, গ্রীন পুলিশ, ভিলেজ পুলিশ এর বেতন নূন্যতম ২০০০০/- হওয়া উচিত। ওড়িশা এবং বিহারের মতো পার্শ্বশিক্ষক, আংশিক, সহ শিক্ষক সহ সমস্ত অস্থায়ী চুক্তিভিত্তিক কর্মী দের স্থায়ীকরণ।
৯) আশাকর্মী, আইসিডিএস, প্রানীমিত্র, VRP, Tax Collector, চুক্তিভিত্তিক ইঞ্জিনিয়ার, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, Third Party Pay Roll এবং WEBEL এর মাধ্যমে নিযুক্ত সকলের বেতন ৫০০০ টাকা বৃদ্ধি করা হোক।