ব্যুরো নিউজ ৩০ জুন: তেলেঙ্গানার মেদাক জেলার পশমিলরমে সিগাচি কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিতে ঘটে যাওয়া বিস্ফোরণ দেশের শিল্প নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিল। ভয়াবহ এই বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১০ জন শ্রমিক, যাঁদের মধ্যে ছ’জনের দেহ ঘটনাস্থলেই অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার হয়। বাকি দু’জন পরে হাসপাতালে মারা যান। এখনও পর্যন্ত ১৫ থেকে ২০ জন শ্রমিক গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের অনেকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
তদন্তের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
বিস্ফোরণের পর গোটা কারখানায় ছড়িয়ে পড়ে ভয়ানক আগুন। আগুনের লেলিহান শিখা এবং বিষাক্ত ধোঁয়ার মধ্যে আটকে পড়েন বহু শ্রমিক। দমকলের অন্তত ১০টি ইঞ্জিন বহু চেষ্টায় আগুন আয়ত্তে আনে। উদ্ধারকাজে অংশ নেয় পুলিস, এনডিআরএফ ও এসডিআরএফ-এর দল। এখনও পর্যন্ত কারখানার ভিতরে আরও কেউ আটকে রয়েছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কী কারণে এই বিস্ফোরণ, তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, রাসায়নিকের অনিয়ন্ত্রিত সংমিশ্রণ বা তাপমাত্রা বৃদ্ধি থেকেই এই দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, গোটা পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। তবে বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ জানতে ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ফরেনসিক বিশ্লেষণের জন্য পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং কারখানা কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। জানা গিয়েছে, সিগাচি কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিতে মূলত ওষুধ তৈরির জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান প্রক্রিয়াকরণ করা হতো।
প্রভাবের আড়ালে নৈরাজ্য ; জানুন রাজনৈতিক মদতপুষ্ট ধর্ষকের চরিত্র ।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এক বিবৃতিতে তিনি জানান, ‘‘তেলেঙ্গানায় দুর্ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের পরিবার-পরিজনের প্রতি আমার সমবেদনা। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।’’ পাশাপাশি তিনি ঘোষণা করেছেন, নিহতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিল (PMNRF) থেকে।
দারকেশ্বর নদে তলিয়ে গেল বিষ্ণুপুর হাইস্কুলের তিন ছাত্র, উদ্ধার ২ জনের দেহ
এই দুর্ঘটনা আরও একবার স্মরণ করিয়ে দিল, দেশের বহু কারখানায় এখনও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। শ্রমিকদের জীবন ঝুঁকির মুখে রেখেই উৎপাদন চলছে অনেক ক্ষেত্রে। বিশেষত রাসায়নিক বা ওষুধ প্রস্তুতকারক কারখানায় আধুনিক নিরাপত্তা মানদণ্ড বজায় রাখা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা এ দিনের ঘটনায় ফের প্রমাণিত।
প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, পুরো ঘটনার তদন্তে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি এই ধরনের দুর্ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে না ঘটে, সে বিষয়েও সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার।