ব্যুরো নিউজ ২৭ অক্টোবর ২০২৫ : কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে পড়লেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। হাইকোর্ট তাঁকে দেওয়া অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এর ফলে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে রাজ্য সরকারের আর কোনও বাধা রইল না। বলা যেতে পারে, আগামী ভোটের আগেই বিরোধী দলনেতার আইনি অস্বস্তি বাড়াল কলকাতা হাইকোর্ট।
রক্ষাকবচ প্রত্যাহারের নির্দেশ
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত শুক্রবার নির্দেশ দেন যে শুভেন্দু অধিকারীকে ২০২২ সাল থেকে দেওয়া অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ তুলে নেওয়া হচ্ছে। এই রক্ষাকবচ প্রত্যাহারের পিছনে মূল যুক্তি ছিল, “কোনও রক্ষাকবচ অনির্দিষ্টকাল ধরে চলতে পারে না।”
২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর বিচারপতি রাজশেখর মান্থা শুভেন্দু অধিকারীকে এই রক্ষাকবচ দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশে বলা হয়েছিল, হাইকোর্টের অনুমতি ছাড়া রাজ্য সরকার তাঁর বিরুদ্ধে কোনো কড়া পদক্ষেপ নিতে বা তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে পারবে না।
ভুয়ো মামলা খারিজ ও সিট (SIT) গঠন
যদিও রক্ষাকবচ প্রত্যাহারের পাশাপাশি বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার কর্তৃক দায়ের করা ১৫টি মামলা খারিজ করে দেন, যেগুলিকে আদালত ভিত্তিহীন বলে নাকচ করেছে।
একই সঙ্গে, আদালত শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে থাকা চারটি মামলায় নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল বা SIT (Special Investigation Team) গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। এই বিশেষ তদন্তকারী দলে রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা CBI-এর আধিকারিকদের যৌথভাবে রেখে তদন্ত করতে হবে। ভবিষ্যতে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে কোনো নতুন মামলা দায়ের হলে, তার তদন্তেও সিবিআইয়ের আধিকারিকদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
বিরোধী দলনেতার প্রতিক্রিয়া ও রাজনৈতিক মন্তব্য
আদালতের এই রায়ের পর শুভেন্দু অধিকারী তাঁর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে তৃণমূল পরিচালিত পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসনকে কটাক্ষ করেছেন। তাঁর বক্তব্য, রক্ষাকবচ প্রত্যাহার হলেও, তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা ভুয়ো মামলাগুলি নাকচ হওয়ায় প্রশাসন অস্বস্তিতে পড়েছে। তিনি বলেন, “দেখবি জ্বলবি আর লুচির মতো ফুলবি”। এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি তৃণমূল দ্বারা পরিচালিত প্রশাসনকে একযোগে ব্যঙ্গ করেন।
অন্যদিকে, তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, “তিন-চার বছর ধরে যে বাধা ছিল, তা আর থাকছে না। শুভেন্দু বেশি মস্তানি করে বেড়াতেন, সেটা এবার বন্ধ হবে।”
আদালতের এই রায় স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, ভুয়ো মামলা দায়ের হলে তা খারিজ হওয়ার পথ পরিষ্কার এবং পাশাপাশি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্তের ব্যবস্থাও নিশ্চিত হলো। শুভেন্দু অধিকারী বা তাঁর আইনজীবীর এই বিষয়ে কোনো বক্তব্য থাকলে, সোমবার লিখিতভাবে আদালতে তা জানাতে পারবেন।



















