ব্যুরো নিউজ, ৯ মেঃ ভারতের সুপ্রিম কোর্ট শুক্রবার এক গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়ে বলেছে, কোনও রাজ্যকে কেন্দ্রের নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন করতে বাধ্য করা যাবে না। এই রায়টি এলো যখন বেশ কিছু রাজ্য, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু এবং কেরল, কেন্দ্রের শিক্ষানীতির কিছু ধারার বিরুদ্ধে আপত্তি তুলেছে। আদালত জানিয়ে দিয়েছে, রাজ্যগুলিকে জাতীয় শিক্ষানীতি গ্রহণ করতে বাধ্য করার কোনও সাংবিধানিক ভিত্তি নেই।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কিছুদিন অপেক্ষার অনুরোধ,শুনলেন না কেন রাজ্যপাল?
রাজ্যগুলির স্বাধীনতা ও আদালতের রায়
নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ সালে কেন্দ্র সরকারের দ্বারা প্রবর্তিত হয়। এই শিক্ষানীতির আওতায় তিনটি ভাষা শেখানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যা তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গ এবং অন্যান্য রাজ্যের পক্ষ থেকে বিপরীত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। তবে, বিশেষ করে তামিলনাড়ুতে এই নীতি নিয়ে তীব্র বিরোধ রয়েছে। তামিলনাড়ু সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, কেন্দ্রের এই শিক্ষানীতি হিন্দিকে তামিল ভাষাভাষী মানুষের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। তামিলনাড়ু মুখ্যমন্ত্রী এম.কে. স্ট্যালিন একাধিকবার এই বিষয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন যে, এই নীতি রাজ্যের ভাষা সংস্কৃতির বিরুদ্ধে একটি আক্রমণ।
আইএসএল ফাইনাল: মোহনবাগান বনাম বেঙ্গালুরু এফসি, কে হাসবে শেষ হাসি?
এছাড়া, রাজ্যগুলির বিরুদ্ধে কেন্দ্রের শাস্তির মতো ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশ্নও উঠে আসে। বিশেষত, কেন্দ্র তামিলনাড়ু ও অন্যান্য রাজ্যগুলির শিক্ষাবিস্তারের জন্য আর্থিক সহায়তা বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে। তবে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, যদি রাজ্যগুলির পদক্ষেপ নাগরিকদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন না করে, তবে আদালত কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। এটি নিশ্চিত করেছে যে, রাজ্যগুলোকে শিক্ষানীতি মেনে চলতে বাধ্য করা যাবে না, কিন্তু রাজ্য যদি জনগণের মৌলিক অধিকার ক্ষুন্ন করে, তবে আদালত সেই ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করতে পারে।
কেন্দ্রের নতুন শিক্ষানীতির মধ্যে বলা হয়েছে, প্রত্যেক রাজ্যেই প্রথম ভাষা হিসেবে শিক্ষার্থীদের মাতৃভাষা শেখানো হবে, এরপর দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে হিন্দি বা ইংরেজি এবং তৃতীয় ভাষা হিসেবে কোনও প্রাচীন ভারতীয় ভাষা শেখানো হবে। এই ধারা বিশেষভাবে তামিলনাড়ুতে বিরোধিতার সৃষ্টি করেছে, কারণ তামিলনাড়ু ভাষাবিজ্ঞান এবং সংস্কৃতির প্রতি অত্যন্ত সচেতন এবং তাদের নিজস্ব মাতৃভাষা তামিলকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। এদিকে, ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, এই শিক্ষানীতি মূলত শিক্ষার ক্ষেত্রে এক ধরনের অভিন্নতা আনতে চায় এবং সব ভারতীয় ভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত। তবে, রাজ্যগুলির ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি তাদের আস্থা রক্ষা করাই তাদের প্রধান লক্ষ্য বলে জানানো হয়েছে।