ব্যুরো নিউজ ২২শে আগস্ট ২০২৫ : রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে এবার বড়সড় অগ্রগতি হয়েছে। রাজ্যপাল সি. ভি. আনন্দ বোস রাজ্যের কারা দফতরের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর দাখিল করা চার্জশিটে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন দিয়েছেন। এর ফলে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার পথ প্রশস্ত হলো।
ইডি গত বুধবার আদালতে জানায় যে, রাজ্যপাল চার্জশিটে অনুমোদন দিয়েছেন। বীরভূম জেলার বোলপুর থেকে নির্বাচিত তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক হলেন চন্দ্রনাথ সিনহা।
বিচার প্রক্রিয়ার পথ প্রশস্ত
এই অনুমোদন পাওয়ার পর আদালত কেন্দ্রীয় সংস্থাকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে মন্ত্রীর কাছে সমন জারি করার নির্দেশ দিয়েছে। এর আগে, চলতি মাসের শুরুতে ইডি যখন বিশেষ সিবিআই আদালতে এই চার্জশিট জমা দিয়েছিল, তখন রাজ্যপালের অনুমোদন না থাকায় তা গ্রহণ করা হয়নি। এখন রাজ্যপালের সম্মতি পাওয়ায় চন্দ্রনাথ সিনহার বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে।
ইডি সূত্র জানিয়েছে, যেহেতু রাজ্যপাল একজন মন্ত্রিসভার সদস্যের নিয়োগকর্তা, তাই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা চালাতে হলে রাজ্যপালের আনুষ্ঠানিক অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক।
কে এই চন্দ্রনাথ সিনহা এবং অভিযোগ কী?
ইডি-র অভিযোগ অনুযায়ী, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা শিক্ষক পদে চাকরি দেওয়ার বিনিময়ে বেশ কিছু চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ করেছেন। ইডি জানিয়েছে, তারা চলতি মাসের ৬ তারিখে প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট (পিএমএলএ), ২০০২ এর অধীনে চন্দ্রনাথ সিনহার (পশ্চিমবঙ্গের ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগ, বস্ত্র এবং কারা দফতরের মন্ত্রী) বিরুদ্ধে তাদের ৬ষ্ঠ সম্পূরক চার্জশিট জমা দিয়েছে। এই তদন্ত শুরু হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই-এর দুর্নীতি দমন শাখা দ্বারা দায়ের করা একটি এফআইআর-এর ভিত্তিতে।
ইডি মার্চ মাসে বোলপুরে চন্দ্রনাথ সিনহার বাসভবনে তল্লাশি চালিয়েছিল। গোয়েন্দারা জানান, এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া অপর দুই অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষ এবং প্রসন্ন রায় মন্ত্রীর নাম উল্লেখ করেছিলেন। তল্লাশি অভিযানে মন্ত্রীর বাড়ি থেকে ৪০ লক্ষেরও বেশি নগদ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়, যার উৎস সম্পর্কে মন্ত্রী স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেননি বলে ইডি সূত্র দাবি করেছে।
এই মামলায় দ্বিতীয় মন্ত্রী হিসেবে চার্জশিটে নাম
চন্দ্রনাথ সিনহা এই দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত দ্বিতীয় মন্ত্রী। এর আগে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই মামলায় প্রথম তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক হিসেবে চার্জশিটভুক্ত হয়েছিলেন।