Kailash Manasarovar yatra

ব্যুরো নিউজ ১৬ জুন :  দীর্ঘ সাত বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে সিকিমের নাথু লা পাস দিয়ে আবারও শুরু হচ্ছে পুণ্যার্থীদের বহু কাঙ্ক্ষিত কৈলাস মানস সরোবর যাত্রা। ২০১৭ সালের ডোকলাম সংঘাত, ২০২০ সালের গালওয়ান সংঘর্ষ এবং কোভিড-১৯ অতিমারীর কারণে দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ ছিল এই রুটের যাত্রা। তবে কেন্দ্রের সক্রিয় হস্তক্ষেপ এবং চিনের সমঝোতার ফলেই আবারও এই পবিত্র যাত্রার পথ উন্মুক্ত হচ্ছে।


প্রথম দল আজই গ্যাংটকে, ২০ জুন নাথু লা দিয়ে শুরু যাত্রা

সিকিম প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, প্রথম ব্যাচের ৫০ জন হিন্দু পুণ্যার্থী আজ, ১৫ জুন গ্যাংটকে পৌঁছাচ্ছেন। সেখান থেকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সেরে আগামী ২০ জুন তাঁরা নাথু লা সীমান্ত অতিক্রম করে পবিত্র কৈলাসের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবেন। জানা গেছে, ২০ জুন ফ্ল্যাগ অফ অনুষ্ঠানে সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং উপস্থিত থাকতে পারেন।
সিকিমের পর্যটন দফতরের প্রধান সচিব সিএস রাও এই বিষয়ে জানিয়েছেন, পুণ্যার্থীদের জন্য চিকিৎসা, নিরাপত্তা এবং উচ্চতাজনিত সমস্যার সমাধানে সবরকম প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। পুণ্যার্থীদের উচ্চতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য গ্যাংটক ও নাথু লা-তে বিশেষ ‘অ্যাক্লাইমেটাইজেশন সেন্টার’ তৈরি করা হয়েছে।

আগামী মাসেই কৈলাস মানস সরোবর যাত্রা সূচনা


কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় খুলল রুদ্ধদ্বার

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা এই পবিত্র রুটটি পুনরায় চালু করার পেছনে রয়েছে ভারতের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা। চলতি বছরের জানুয়ারিতে বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রি চিন সফরে গিয়ে সেদেশের বিদেশসচিব সান ওয়েইডংয়ের সঙ্গে বৈঠকে যাত্রাপথ পুনরায় চালুর অনুরোধ জানান। এরপরেই বেইজিং থেকে সবুজ সংকেত আসে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশ পাওয়ার পরপরই সিকিম সরকার দ্রুত পরিকাঠামো উন্নয়নে মনোযোগ দেয় এবং সীমান্ত এলাকায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে।


দুই ধাপে ১৫টি দলের পুণ্যার্থী যাবেন

সিকিম প্রশাসনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই বছর দুটি ধাপে মোট ১৫টি পুণ্যার্থী দল কৈলাস মানস সরোবর যাত্রায় যাবে। প্রথম পর্যায়ে ৫টি দল যাত্রা করবে, যেখানে প্রতিটি দলে ৫০ জন করে পুণ্যার্থী থাকবেন। এরপর দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ১০টি দল একইভাবে এই পবিত্র সফর করবে। প্রতিটি দলের যাত্রার আগে পুণ্যার্থীদের উচ্চতাজনিত শারীরিক সমস্যার কথা মাথায় রেখে নির্দিষ্ট সময় গ্যাংটক ও নাথু লা-তে রাখা হবে।

প্রবীণ নাগরিকদের জন্য কেন্দ্রের ঐতিহাসিক ঘোষণা: ১৫ জুন থেকে সারাদেশে বিনামূল্যে ভ্রমণের সুবিধা


কৈলাস যাত্রার বিস্তারিত রুট ও ট্রেকিং

নাথু লা থেকে মানসরোবর পর্যন্ত প্রায় ১৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে। এর মধ্যে লিপুলেখ লা ট্রেকিং রুট প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ। এছাড়া, কৈলাস পরিক্রমা ট্রেকিংয়ে পাহাড়ে প্রায় ৫২ কিলোমিটার হাঁটা লাগে, যা সাধারণত ৩ দিনে সম্পন্ন হয়। তবে শারীরিক সক্ষম পুণ্যার্থীরা চাইলে ২ দিনেই এই পরিক্রমা শেষ করতে পারেন।


এই ঐতিহাসিক যাত্রার তাৎপর্য

হিন্দু ধর্মে কৈলাস মানস সরোবরকে অত্যন্ত পবিত্র স্থান গণ্য করা হয়। বহু মানুষের কাছে এই যাত্রা একটি জীবনের স্বপ্ন। কেন্দ্র এবং সিকিম সরকারের যৌথ প্রচেষ্টায় আবারও সেই স্বপ্ন পূরণের দ্বার উন্মোচিত হল। সীমান্ত পরিস্থিতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের স্থিতিশীলতাই এই পবিত্র যাত্রাপথ পুনরায় চালুর মূল চাবিকাঠি বলে মনে করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর