ব্যুরো নিউজ ৮ আগস্ট ২০২৫ : ২০২৫ সালের ৯ই আগস্ট শনিবার, এক বিরল আধ্যাত্মিক সংযোগে পালিত হবে শ্রাবণ পূর্ণিমা। এই দিনটিতে শুধু শ্রাবণ মাসের সমাপ্তিই হচ্ছে না, এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাখী বন্ধন এবং গায়ত্রী জয়ন্তীর মতো দুটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এই বিশেষ দিনে ভক্তদের জন্য পুণ্য অর্জনের এক অসাধারণ সুযোগ তৈরি হয়েছে।
পূর্ণিমার তারিখ ও তিথি
- পূর্ণিমা তিথি শুরু: ৮ই আগস্ট, ২০২৫, দুপুর ২:১২ মিনিটে।
- পূর্ণিমা তিথি শেষ: ৯ই আগস্ট, ২০২৫, দুপুর ১:২৪ মিনিটে।
- চন্দ্রোদয়ের সময়: ৯ই আগস্ট, ২০২৫, সন্ধ্যা ৭:২১ মিনিটে।
সনাতন ধর্মের মহাজাগতিক সংহতি : বিষ্ণুর অবতার ও নবগ্রহ
শ্রাবণ পূর্ণিমার আধ্যাত্মিক গুরুত্ব
হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, শ্রাবণ মাস ভগবান শিবের আরাধনার জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই মাসের শেষ দিন অর্থাৎ পূর্ণিমায় শ্রাবণ মাসের পুণ্য সমাপ্তি ঘটে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এই দিনটি ‘কাজরী পূর্ণিমা’ নামেও পরিচিত। ভক্তরা এই দিনে উপবাস করেন, ভগবান বিষ্ণু ও শিবের পূজা করেন এবং দান-ধ্যানে অংশ নেন। এই দিনটিতে সত্যনারায়ণ কথা পাঠ করা, পবিত্র নদীতে স্নান করা এবং চন্দ্রোদয়ের পর চন্দ্রকে অর্ঘ্য নিবেদন করা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়।
একই দিনে একাধিক উৎসব
- রাখি বন্ধন: ভাই-বোনের ভালোবাসার এই পবিত্র উৎসবটি এই বছর শ্রাবণ পূর্ণিমার দিনে পালিত হচ্ছে। বোনেরা তাদের ভাইদের হাতে রাখি বেঁধে তাদের দীর্ঘায়ু ও মঙ্গলের জন্য প্রার্থনা করেন।
- গায়ত্রী জয়ন্তী: এই দিনেই দেবী গায়ত্রীর আবির্ভাব হয়েছিল বলে মনে করা হয়, যিনি গায়ত্রী মন্ত্রের মূর্ত রূপ। তাই এই তিথিতে গায়ত্রী মন্ত্র পাঠের বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে।
Brahma ; সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার সীমিত উপাসনা: এক বিস্ময়কর রহস্য !
পূজা ও ব্রত পালনের নিয়ম (পূজন বিধি)
শ্রাবণ পূর্ণিমা পালনের জন্য এখানে একটি সহজ পূজা বিধি দেওয়া হলো:
- সকাল: খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে পবিত্র স্নান করুন। যদি কোনো পবিত্র নদীতে স্নান করা সম্ভব না হয়, তবে স্নানের জলে সামান্য গঙ্গাজল মিশিয়ে নিন। এরপর ভক্তি সহকারে উপবাস পালনের সংকল্প (সঙ্কল্প) নিন।
- পূজা: ঘরে শ্রী সত্যনারায়ণের একটি মূর্তি বা ছবি স্থাপন করুন। ফুল, ফল, ধূপ এবং মিষ্টি দিয়ে তাঁর পূজা করুন এবং সত্যনারায়ণ কথা পাঠ করুন।
- প্রসাদ বিতরণ: পূজা শেষে পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করুন।
- সন্ধ্যার আচার: চন্দ্রোদয়ের পর চন্দ্রকে জল নিবেদন (অর্ঘ্য) করুন। এরপর আপনি উপবাস ভঙ্গ করতে পারেন।
- দান: এই দিনে দান করা অত্যন্ত পুণ্যজনক। গরীব ও অভাবী মানুষকে খাদ্য, বস্ত্র বা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দান করুন।
এই বছর শ্রাবণ পূর্ণিমা, রাখি বন্ধন এবং গায়ত্রী জয়ন্তীর এই বিশেষ সংযোগ পরিবারে সম্প্রীতি, আধ্যাত্মিক উন্নতি এবং ঐশ্বরিক সুরক্ষা নিয়ে আসবে বলে বিশ্বাস করা হয়।