ব্যুরো নিউজ ১৩ জুন: উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্তে আবারও চাঞ্চল্য—এইবার একসঙ্গে ২২ জন রোহিঙ্গা ধরা পড়লেন গ্রামবাসীদের হাতে, ফেরার পথে। বাদুড়িয়া থানার অন্তর্গত শায়েস্তানগর ১ নম্বর ব্লকের লবঙ্গ এলাকায় শুক্রবার ভোররাতে ঘটে এই ঘটনা। স্থানীয়দের সন্দেহ হওয়ায় রাস্তায় হেঁটে যাওয়া একদল মানুষকে পাকড়াও করা হয়। পরে জানা যায়, তাঁরা সবাই রোহিঙ্গা। এরপর তাঁদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
সীমান্তে উত্তেজনা, উঠছে গুরুতর প্রশ্ন
রোহিঙ্গাদের দলে ছিল ৪ জন পুরুষ, ৪ জন মহিলা ও ১৪ জন শিশু। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা স্বীকার করেছেন, ১০ বছর আগে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন এবং হায়দ্রাবাদে দিনমজুরের কাজ করতেন। তবে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের অনুপ্রবেশ বিরোধী অভিযান শুরু হওয়ায় তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
এখানেই উঠছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন—এত বছর ধরে কীভাবে তাঁরা নিরাপদে ভারতে থাকতে পারলেন? বিএসএফের নজর এড়িয়ে তাঁরা কীভাবে ঢুকেছিলেন এবং নাম, পরিচয় গোপন করে এতবড় শহরে কাজ করছিলেন? পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এর পেছনে দালাল চক্র বা মানব পাচার চক্র সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। এমনকি হায়দ্রাবাদে তাঁদের থাকার জায়গা ও কাজের ব্যবস্থাও করা হয়েছিল পরিকল্পিতভাবে।
বনগাঁ কলেজে বাংলাদেশি সভাপতি? নাগরিকত্ব বিতর্কে তুঙ্গে আলোড়ন!
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রাতের আঁধারে সীমান্ত পার হয়ে ফেরার সময় তাঁরা গ্রামবাসীদের চোখে পড়ে যান। ভারতের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এই ধরনের গোপন চলাচল স্থানীয় বাসিন্দাদের আতঙ্কিত করে তুলছে। বিশেষত শিশুদের উপস্থিতি ও পরিবার-সহ অনুপ্রবেশ থেকে স্পষ্ট, এটি ছিল পরিকল্পিত একটি ‘রির্টান মুভ’।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে বিস্তারিতভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। তাঁদের ভারতে ঢোকানোর পেছনে কে বা কারা যুক্ত ছিল, কতজন এমনভাবে বসবাস করছে এখনও, সেইসব তথ্য জোগাড় করাই এখন মূল লক্ষ্য। পাশাপাশি বিএসএফও সীমান্ত নজরদারি আরও জোরদার করেছে।
বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে প্রাণে মেরে ফেলার ধমকি
এই ঘটনায় আবারও উঠে এলো সীমান্ত সুরক্ষা ও অভিবাসন নীতির বাস্তব কার্যকারিতা নিয়ে বড় প্রশ্ন। বিশেষ করে, সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে স্থানীয়দের নিরাপত্তা এবং সন্দেহজনক চলাচলের ওপর নজরদারির গুরুত্ব আরও বেড়েছে।
এই মুহূর্তে আটক রোহিঙ্গাদের নিয়ে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। এবার দেখার বিষয়—এই ঘটনায় উঠে আসে কিনা সেই দালালদের নাম, যারা বছরের পর বছর এই মানব পাচার চক্র চালিয়ে যাচ্ছে দেশের নাকের ডগায়।