ব্যুরো নিউজ ১৩ জুন: জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে সদ্যোজাত এক শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা ছড়াল বৃহস্পতিবার রাতে। মাত্র তিন দিনের শিশুকে সংকটজনক অবস্থাতেও ‘ছুটি’ দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ সামনে এসেছে, আর তাতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক ও বিক্ষোভ।
সদ্যোজাতের মৃত্যু ঘিরে উত্তাল
শিশুর পরিবারের অভিযোগ, সঠিক চিকিৎসার অভাবেই তাদের নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে এবং এই ঘটনায় হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে তারা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
শিশুটির জন্ম হয় ১০ জুন। ওজন ছিল আড়াই কেজি এবং জন্মের সময় চিকিৎসকরা জানান মা ও শিশু দু’জনেই সুস্থ। কিন্তু এরপর থেকেই শিশুটি মাতৃদুগ্ধ পান করতে পারছিল না, শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল—তা সত্ত্বেও চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে কোনও জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে পরিবারের দাবি। এমনকি নার্স ও চিকিৎসকদের মধ্যে পরস্পরের উপর দোষ চাপানোর প্রবণতা দেখা দেয়, যার জেরে সময়মতো চিকিৎসা হয়নি এবং অমূল্য প্রাণটি হারাতে হয়।
দেশে কোভিড সংক্রমণ ৫ হাজার ছাড়াল, বাংলায় বাড়ছে উদ্বেগ
বৃহস্পতিবার বিকেলে, যখন শিশুটির অবস্থার অবনতি হচ্ছিল, তখন রাজগঞ্জ হাসপাতাল থেকে তাকে ছুটি দিয়ে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু পথে বা হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই শিশুটি নিস্তেজ হয়ে পড়ে। জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ ও সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এরপর ক্ষুব্ধ পরিবার মৃতদেহ নিয়ে ফিরে এসে রাজগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখায়। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে হাসপাতাল চত্বরে পুলিশ মোতায়েন করতে হয়। অথচ এই ঘটনার পরেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মুখ খুলতে চায়নি।
এই ঘটনা শুধু একটি শিশুর মৃত্যু নয়—একটি প্রশ্নচিহ্ন চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর। রাজ্যে স্বাস্থ্যব্যবস্থার যে পরিকাঠামো এবং দায়িত্ববোধের অভাব, তা যেন এই ঘটনায় আরও একবার স্পষ্ট হয়ে উঠল। শিশুর পরিবারের দাবি, দায় এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা এবং অবহেলার জন্যই তাঁরা সন্তান হারিয়েছেন।
ভারতে রেড্ডিকে ইংল্যান্ডে বোলিংয়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
এখন সবার চোখ পুলিশি তদন্ত ও প্রশাসনিক পদক্ষেপের দিকে। পরিবার আশাবাদী, তদন্তে সত্য প্রকাশ পাবে এবং দায়ীদের শাস্তি হবে। তবে প্রশ্ন একটাই—কতবার এমন মৃত্যু হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে? সদ্যোজাত একটি শিশুর অকালপ্রয়াণ কি শুধুই আরেকটি ‘ফাইল ক্লোজ’ হয়ে যাবে?
এই ঘটনায় রাজগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালের ভূমিকা নিয়েই এখন তোলপাড় জলপাইগুড়ি জেলা, এবং উত্তরের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা আরও এক ধাক্কা খেল বলেই মনে করছেন চিকিৎসা মহল।
