ব্যুরো নিউজ, ১৪ ফেব্রুয়ারি: রাজনীতির ময়দানে আজও জ্বলজ্বলে পুলওয়ামা হামলা। ৫ বছরে পা দিল পুলওয়ামা হামলার ঘটনা। সেই কবে ২০১৯ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় সেনার একটি গাড়ি জম্মু ও কাশ্মিরে পুলওয়ামা জেলার লেথোপোড়া অতিক্রম করার সময় জম্মু- শ্রীনগর জাতীয় সড়কে একটি বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ির আত্মখাতী হামলায় ধ্বংস হয়ে যায় সেনাদের ওই গাড়িটি। হামলায় সিআরপিএফ-এর ৪০ জন কর্মী শহিদ হন। ওই ঘটনা নিয়ে সে সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে বিস্তর সমালোচনা হয়। সেবার ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগেই এই ঘটনা ঘটায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা চালিয়েছিল ভারত। বিরোধী দলগুলো সোচ্চার হয়েছে ভোটে জিততেই এই হামলার ছক নাকি সাজিয়ে ছিল বিজেপি সরকার। কিন্তু সেই অভিযোগে জনগন বিশেষ আমল দেয়নি। বরং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাল্টা হানার তীব্রতায় ভারত বুঝিয়ে দিয়েছিল পুলওয়ামা ঘটিয়ে ভারতকে দমানো যাবে না। ভারত যোগ্য জবাব দিয়েছিল।
ইংরেজি, হিন্দীর দৌরাত্ম্যে ‘একুশে জয়গান’
২০১৯-এর ১৪ ফেব্রুয়ারি ভরতীয় সেনাদের নিয়ে ৭৮ টি গাড়ির কনভয় রওনা দিয়েছিল। ঘটনার ২ দিন আগে পরপর জাতীয় সড়ক বন্ধ ছিল। আর তাই ৭৮ টি গাড়ির কনভয় একসঙ্গে যাত্রা করেছিল। ওই সময় পথে হঠাাৎই একটি বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি উল্টো দিক থেকে এসে সেনাদের একটি গাড়িতে ধাক্কা মারে। শুধু ৪০ জন সেনাই নিহত হননি আহতের সংখ্যাও ছিল যথেষ্ট। আহতদের দ্রুত শ্রীনগরের সেনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অনেকের মৃত্যু হয়। ঘটনাটি যখন ঘটে তখন দুপুর গড়িয়ে প্রায় বিকেল। হামলার দায় স্বীকার করে একটি ভিডিও প্রকাশ করে পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ- ই- মহম্মদ। ঘটনার ভিডিও প্রকাশ করেছিল সংগঠনের সদস্য আদিল আহম্মদ দার। ২২ বছরের আদিল কাকাপুরার বাসিন্দা। খুব ছোট বেলায় সাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আদিল আর ফেরেনি। তবে ২০১৮ সালে সাইকেলে চড়ে যেতে দেখা গিয়েছিল তাকে। ১৯৭৯ সালের পর কাশ্মিরে ভারতীয় সেনাদের ওই হামলা ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। কিন্তু কেন আদিল সন্ত্রাসবাদী হয়েগেল? সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে তার বাবা-মা। তারা বলেছেন, আদিলকে ভারতীয় পুলিশ একবার ছোটোখাটো অপরাধে মারধোর করে। আর তাতেই নাকি আদিল প্রতিশোধস্পৃহ হয়ে ওঠে। বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। যোগ দিয়েছিল জইশ-ই-মহম্মদে। পুলিশ অবশ্য ২০১৮ সালের মধ্যে নানান অপরাধে তাকে ৬ বার গ্রেফতার করেছিল। মুক্তিও পেয়েগেছিল রহস্যজনক ভাবে।
ওই ঘটনার তদন্তে ১২ সদস্যের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার একটি দলকে পাঠিয়েছিল ভারত সরকার। জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের সঙ্গে ওই তদন্তকারী দল যৌথভাবে কাজ করতে গিয়ে জানতে পারে বিস্ফোরক বোঝাই গাড়িটিতে ছিল ৮০ কিলোগ্রাম উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন আর.ডি.এক্স ও অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। সেটিও ছিল প্রায় সোয়া ২০০ কেজি। পাকিস্তান ওই হামলার দায় অস্বীকার করে বলে তাদের দেশ থেকে ওই বিস্ফোরক পুলওয়ামায় যায়নি। ভারতেই কোনও নির্মাণ ভাঙার কাজে ব্যবহৃত ওই বিস্ফোরক চুরি করে ওই ঘটনা ঘটানো হয়েছিল। পাকিস্তান থেকে সীমান্ত পেরিয়ে পাচার করা হয়নি। কিন্তু, পরবর্তী কালে তদন্ত ও তথ্য প্রমানে ভারত দেখিয়েছিল ওই হামলার পেছনে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিদেরই হাত ছিল। ইভিএম নিউজ