ব্যুরো নিউজ ২১ জুলাই ২০২৫ : সোমবার সংসদের বাদল অধিবেশন শুরুর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন। তাঁর বক্তব্যে তিনি দেশের নিরাপত্তা, অর্থনীতি এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে মাত্র ২২ মিনিটের মধ্যে সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয়স্থলগুলি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ সামরিক শক্তির বিশ্বব্যাপী আকর্ষণ
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “আজকাল আমি যখনই বিশ্বের মানুষের সাথে দেখা করি, ভারতের তৈরি ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ অস্ত্রের প্রতি বিশ্বের আকর্ষণ বাড়ছে।” তিনি জোর দেন যে এই নতুন ধরনের সামরিক ক্ষমতা বিশ্বকে মুগ্ধ করেছে।
‘রেড করিডর’ থেকে ‘সবুজ বৃদ্ধি অঞ্চল’
প্রধানমন্ত্রী মোদী নকশাল দমনের বিষয়ে সরকারের সাফল্যের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আজ আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী নতুন আত্মবিশ্বাস এবং নকশালবাদকে শেষ করার সংকল্প নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। অনেক জেলা আজ নকশালমুক্ত। আমরা গর্বিত যে ভারতীয় সংবিধান নকশালবাদের বিরুদ্ধে জয়ী হচ্ছে। ‘রেড করিডর’গুলি ‘সবুজ বৃদ্ধি অঞ্চল’-এ রূপান্তরিত হচ্ছে।”
অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং দারিদ্র্য হ্রাস
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ভারতের অগ্রগতি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালে যখন তাঁর সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে, তখন দেশ ‘ফ্র্যাজাইল ফাইভ’ (Fragile Five) দশার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল এবং ভারত বৈশ্বিক অর্থনীতিতে দশম স্থানে ছিল। তিনি আরও বলেন, “আজ ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হওয়ার দিকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে।” মূল্যস্ফীতি নিয়ে তিনি বলেন, ২০১৪ সালের আগে দেশে যখন মূল্যস্ফীতির হার দুই অঙ্কের ছিল, তা আজ প্রায় দুই শতাংশে নেমে এসেছে, যা দেশের সাধারণ মানুষের জীবনে স্বস্তি ও সুবিধা এনে দিয়েছে। তিনি আরও জানান, ২৫ কোটি দরিদ্র মানুষ দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে এসেছেন, যা বিশ্বের অনেক সংস্থা প্রশংসা করছে।
শান্তি ও প্রগতি এই দশকের মূলমন্ত্র
প্রধানমন্ত্রী মোদী জোর দিয়ে বলেন যে শান্তি ও প্রগতিই এই দশকের মূলমন্ত্র। তিনি উল্লেখ করেন যে নকশাল প্রভাবিত ‘রেড করিডর’গুলি এখন ‘সবুজ বৃদ্ধি অঞ্চল’-এ রূপান্তরিত হচ্ছে।
বহুদলীয় প্রতিনিধিদের প্রশংসা
পাহেলগামে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন দেশের বহুদলীয় প্রতিনিধি দলের বিদেশ সফরকে প্রধানমন্ত্রী মোদী সাধুবাদ জানান। তিনি বলেন, এই সফরে দলীয় স্বার্থকে দূরে রেখে দেশের স্বার্থে কাজ করা হয়েছে এবং পাকিস্তানের মুখোশ উন্মোচনে তারা সফল অভিযান চালিয়েছে। তিনি সকল সাংসদ ও দলগুলিকে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য প্রশংসা করেন এবং বলেন, এটি দেশে একটি ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করেছে। তিনি দলগুলির প্রতি ঐক্যের বার্তা দিতে এবং সশস্ত্র বাহিনীর বীরত্বের কথা তুলে ধরতে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “দেশ ঐক্যের শক্তি দেখেছে। তাই হাউসের সকল সাংসদ, এটিকে শক্তি দিন, এগিয়ে নিয়ে যান এবং আমি নিশ্চিতভাবে বলব যে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নিজস্ব এজেন্ডা, নিজস্ব ভূমিকা আছে, কিন্তু আমি এই বাস্তবতা মেনে নিই যে ‘দল হিত মে মত ভলে না মিলে লেকিন দেশ হিত মে মন জারুর মিলে’।”